বাংলারজমিন
মানিকগঞ্জে গ্যাস সংকটে শিল্প-কারখানায় উৎপাদনে ধস
রিপন আনসারী, মানিকগঞ্জ থেকে
২৬ অক্টোবর ২০২০, সোমবার, ৭:১৯ পূর্বাহ্ন
মানিকগঞ্জে গ্যাস সংকটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে শিল্প-কারখানাগুলোর উৎপাদন। গ্যাসনির্ভর শিল্প-কারখানাগুলোতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫ ঘণ্টাও মিলছে না গ্যাস। ফলে অনেক শিল্প-কারখানা কার্যত বন্ধের উপক্রম দেখা দিয়েছে। প্রতিমাসে ভর্তুকি দিয়েই কারখানার শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করছেন মালিকরা। শুধু শিল্প-কারখানাই নয় বাসাবাড়ির চুলায়ও জ্বলে না গ্যাসের আগুন।
জানা গেছে, মানিকগঞ্জের বড় বড় প্রায় ১৫টি গ্যাসনির্ভর শিল্প-কারখানা রয়েছে। গ্যাস সংকটের কারণে কারখানাগুলো চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন কারখানার মালিকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্যাসের অভাবে মানিকগঞ্জের সুপার সাইন ক্যাবল, রাইজিং স্পিনিং মিল, মুন্নু ফেব্রিকস লিমিটেডসহ আরো কয়েকটি বড় বড় শিল্প-কারখানায় উৎপাদনে ধস নেমেছে। গ্যাস সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন না থাকায় আর চাহিদার তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগও গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না। এতে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে শিল্প মালিকদের। বিগত দিনে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাসের দাবিতে মানিকগঞ্জের মানুষজন রাস্তায় নেমে আন্দোলন সংগ্রামে বাধ্য হয়েছিলেন। বর্তমান গ্যাসের যে বেহাল দশা এতে কোনো কোনো শিল্প-কারখানা যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জেলা বিসিকের শিল্পনগরী কর্মকর্তা রবিউল আলম বলেন, মানিকগঞ্জ বিসিকে ১৫টি বিভিন্ন ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অধিকাংশ কারখানাই গ্যাসের উপর নিভর্রশীল। অব্যাহত গ্যাস সংকটে কারখানাগুলো বন্ধের উপক্রম হয়েছে। এ সমস্যা সমাধান না হলে শিল্পে বিনিয়োগে আস্থা হারিয়ে ফেলবেন ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। জেলার সাটুরিয়া উপজেলার নয়াডিঙ্গি এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত রাইজিং স্পিনিং মিল। জেলার অন্যতম বৃহৎ এই কারখানায় সুতা ও কাপড় তৈরি করা হয়।
সমপ্রতি সরজমিন কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কারখানাটিতে জেনারেটর চালাতে সঞ্চালন পাইপের মাধ্যমে তিতাস গ্যাসের সংযোগ রয়েছে। গ্যাস সংকটের কারণে সচল রাখতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে। কারখানাটির উৎপাদন বিভাগের হিসাবমতে, গত মে মাসে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা গ্যাসের বিল পরিশোধের পরও বাড়তি ৪৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল গুনতে হয়েছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, জুলাই মাসে গ্যাসের বিল ১ কোটি ৬১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা দেয়ার পরও ৫৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হয়েছে। এতে কারখানার মালিকের কাঁধে বাড়তি খরচ বেড়ে যায়।
রাইজিং স্পিনিং মিলের উপ-মহাব্যবস্থাপক (উৎপাদন) মো. কলিম উদ্দিন বলেন, উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে গ্যাসের চাপ কমপক্ষে পাঁচ পিএসআই প্রয়োজন। এক্ষেত্রে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র এক পিএসআই। গ্যাসের এতো কম চাপের কারণে জেনারেটর চালু রাখতে বাধ্য হয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে কারখানার মালিকের প্রতি মাসে গড়ে ৫০ লাখ টাকা বেশি অতিরিক্ত অর্থ খরচ হচ্ছে।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গিলন্ড এলাকায় রয়েছে জেলার আরেক বৃহৎ শিল্প-কারখানা মুন্নু ফেব্রিকস লিমিটেড। এই কারখানার প্রধান অক্সিজেনই হচ্ছে গ্যাস। জেনারেটর, বয়লার ও কিছু মেশিন আছে যা গ্যাস ছাড়া চালানো অসম্ভব। দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস সংকটের কারণে এই কারখানায় উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।
মুন্নু ফেব্রিক্স লিমিটেডের এজিএম (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) বাবুল হোসেন বলেন, অক্সিজেন না থাকলে যেমন মানুষ বাঁচে না, তেমনি গ্যাসনির্ভর কারখানাগুলোতে গ্যাস না থাকলে সব কিছু অচল হয়ে পড়ে। গ্যাস সংকটের কারণে আমাদের কারখানাটির উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ১৫ পিএসআই গ্যাসের অনুমোদন থাকলেও কিছু কিছু সময় মাত্র ৪-৫ পিএসআই পাওয়া গেলেও বেশির ভাগ সময় শূন্য পিএসআই থাকে। ফলে জেনারেটর, বয়লার ও কিছু কিছু মেশিন রয়েছে যা এই অল্প গ্যাসের চাপে চালানো যায় না। এ পরিস্থিতিতে কারখানার উৎপাদন চালু রাখা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। লোকসানের মধ্যেই শ্রমিকদের মাসিক বেতন-ভাতা দেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০ পিএসআই গ্যাস যদি পাওয়া যায় তাহলে কারখানার উৎপাদনে গতি আসবে।
বিসিকে অবস্থিত সুপার সাইন ক্যাবল নামের কারখানার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) উত্তম ভৌমিক বলেন, ‘প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ৫ ঘণ্টা গ্যাস মিলছে। বাকি ১৯ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ নেই। এই সামান্য গ্যাস দিয়ে কীভাবে শিল্প-প্রতিষ্ঠান টিকবে? কীভাবে কারখানার উৎপাদন স্বাভাবিক থাকবে?
তিতাস গ্যাস কার্যালয়ের বিপণন বিভাগের ব্যবস্থাপক ফিরোজ কবিরের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, সঞ্চালন পাইপের মাধ্যমে তিতাস গ্যাস সরবরাহ ও বিতরণ করা হয়ে থাকে। তবে ট্রান্সমিশন কোম্পানি প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহ করতে না পারায় মানিকগঞ্জে গ্যাস সংকট রয়েছে। বিষয়টি তিতাসের পেট্রোবাংলাকে জানানো হয়েছে। টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে মানিকগঞ্জে বিকল্প একটি সঞ্চালন লাইন নির্মাণে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে মানিকগঞ্জে গ্যাসের সংকট থাকবে না।
জানা গেছে, মানিকগঞ্জের বড় বড় প্রায় ১৫টি গ্যাসনির্ভর শিল্প-কারখানা রয়েছে। গ্যাস সংকটের কারণে কারখানাগুলো চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন কারখানার মালিকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্যাসের অভাবে মানিকগঞ্জের সুপার সাইন ক্যাবল, রাইজিং স্পিনিং মিল, মুন্নু ফেব্রিকস লিমিটেডসহ আরো কয়েকটি বড় বড় শিল্প-কারখানায় উৎপাদনে ধস নেমেছে। গ্যাস সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন না থাকায় আর চাহিদার তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগও গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না। এতে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে শিল্প মালিকদের। বিগত দিনে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাসের দাবিতে মানিকগঞ্জের মানুষজন রাস্তায় নেমে আন্দোলন সংগ্রামে বাধ্য হয়েছিলেন। বর্তমান গ্যাসের যে বেহাল দশা এতে কোনো কোনো শিল্প-কারখানা যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জেলা বিসিকের শিল্পনগরী কর্মকর্তা রবিউল আলম বলেন, মানিকগঞ্জ বিসিকে ১৫টি বিভিন্ন ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অধিকাংশ কারখানাই গ্যাসের উপর নিভর্রশীল। অব্যাহত গ্যাস সংকটে কারখানাগুলো বন্ধের উপক্রম হয়েছে। এ সমস্যা সমাধান না হলে শিল্পে বিনিয়োগে আস্থা হারিয়ে ফেলবেন ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। জেলার সাটুরিয়া উপজেলার নয়াডিঙ্গি এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত রাইজিং স্পিনিং মিল। জেলার অন্যতম বৃহৎ এই কারখানায় সুতা ও কাপড় তৈরি করা হয়।
সমপ্রতি সরজমিন কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কারখানাটিতে জেনারেটর চালাতে সঞ্চালন পাইপের মাধ্যমে তিতাস গ্যাসের সংযোগ রয়েছে। গ্যাস সংকটের কারণে সচল রাখতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে। কারখানাটির উৎপাদন বিভাগের হিসাবমতে, গত মে মাসে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা গ্যাসের বিল পরিশোধের পরও বাড়তি ৪৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল গুনতে হয়েছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, জুলাই মাসে গ্যাসের বিল ১ কোটি ৬১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা দেয়ার পরও ৫৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হয়েছে। এতে কারখানার মালিকের কাঁধে বাড়তি খরচ বেড়ে যায়।
রাইজিং স্পিনিং মিলের উপ-মহাব্যবস্থাপক (উৎপাদন) মো. কলিম উদ্দিন বলেন, উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে গ্যাসের চাপ কমপক্ষে পাঁচ পিএসআই প্রয়োজন। এক্ষেত্রে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র এক পিএসআই। গ্যাসের এতো কম চাপের কারণে জেনারেটর চালু রাখতে বাধ্য হয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে কারখানার মালিকের প্রতি মাসে গড়ে ৫০ লাখ টাকা বেশি অতিরিক্ত অর্থ খরচ হচ্ছে।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গিলন্ড এলাকায় রয়েছে জেলার আরেক বৃহৎ শিল্প-কারখানা মুন্নু ফেব্রিকস লিমিটেড। এই কারখানার প্রধান অক্সিজেনই হচ্ছে গ্যাস। জেনারেটর, বয়লার ও কিছু মেশিন আছে যা গ্যাস ছাড়া চালানো অসম্ভব। দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস সংকটের কারণে এই কারখানায় উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।
মুন্নু ফেব্রিক্স লিমিটেডের এজিএম (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) বাবুল হোসেন বলেন, অক্সিজেন না থাকলে যেমন মানুষ বাঁচে না, তেমনি গ্যাসনির্ভর কারখানাগুলোতে গ্যাস না থাকলে সব কিছু অচল হয়ে পড়ে। গ্যাস সংকটের কারণে আমাদের কারখানাটির উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ১৫ পিএসআই গ্যাসের অনুমোদন থাকলেও কিছু কিছু সময় মাত্র ৪-৫ পিএসআই পাওয়া গেলেও বেশির ভাগ সময় শূন্য পিএসআই থাকে। ফলে জেনারেটর, বয়লার ও কিছু কিছু মেশিন রয়েছে যা এই অল্প গ্যাসের চাপে চালানো যায় না। এ পরিস্থিতিতে কারখানার উৎপাদন চালু রাখা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। লোকসানের মধ্যেই শ্রমিকদের মাসিক বেতন-ভাতা দেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০ পিএসআই গ্যাস যদি পাওয়া যায় তাহলে কারখানার উৎপাদনে গতি আসবে।
বিসিকে অবস্থিত সুপার সাইন ক্যাবল নামের কারখানার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) উত্তম ভৌমিক বলেন, ‘প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ৫ ঘণ্টা গ্যাস মিলছে। বাকি ১৯ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ নেই। এই সামান্য গ্যাস দিয়ে কীভাবে শিল্প-প্রতিষ্ঠান টিকবে? কীভাবে কারখানার উৎপাদন স্বাভাবিক থাকবে?
তিতাস গ্যাস কার্যালয়ের বিপণন বিভাগের ব্যবস্থাপক ফিরোজ কবিরের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, সঞ্চালন পাইপের মাধ্যমে তিতাস গ্যাস সরবরাহ ও বিতরণ করা হয়ে থাকে। তবে ট্রান্সমিশন কোম্পানি প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহ করতে না পারায় মানিকগঞ্জে গ্যাস সংকট রয়েছে। বিষয়টি তিতাসের পেট্রোবাংলাকে জানানো হয়েছে। টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে মানিকগঞ্জে বিকল্প একটি সঞ্চালন লাইন নির্মাণে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে মানিকগঞ্জে গ্যাসের সংকট থাকবে না।