বিশ্বজমিন

প্লাজমা চিকিৎসা অকার্যকর, তারপরও বন্ধ না করার আহবান

মানবজমিন ডেস্ক

২৪ অক্টোবর ২০২০, শনিবার, ৯:২৯ পূর্বাহ্ন

সম্প্রতি ভারতে এক ট্রায়ালে অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্লাজমা থেরাপি। প্লাজমা থেরাপি বলতে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের রক্ত থেকে প্লাজমা নিয়ে তা আক্রান্তদের শরীরে প্রবেশ করানোকে বোঝায়। অনেকে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্লাজমা থেরাপিকে একটি সম্ভাব্য চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে বিবেচনা করছিলেন। তবে ভারতে চালানো একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই থেরাপি আক্রান্তদের গুরুতর অসুস্থ হওয়া থেকে রক্ষা কিংবা তাদের মৃত্যুর আশঙ্কা কমানোয় কাজে আসছে না। তবে এই গবেষণার ফলাফলে নিরুৎসাহিত না হয়ে, এ থেরাপি নিয়ে কাজ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
খবরে বলা হয়, ভারতীয় পরীক্ষার ফলাফলটি বৃটিশ মেডিক্যাল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যায়, প্লাজমা চিকিৎসা পদ্ধতি কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখছে না।
গত এপ্রিল থেকে জুলাইয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৪৬৪ জন করোনা রোগীর ওপর এ পরীক্ষা চালানো হয়। অংশগ্রহণকারীদের দু’ ভাগে ভাগ করা হয়। এক দলকে সাধারণ সেবার পাশাপাশি প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয় ও অপরদলকে কেবল সাধারণ সেবা দেওয়া হয়। সাত দিন পর দেখা যায় যে, প্লাজমা থেরাপি পাওয়া রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি দেখা গেছে, যেমন— শ্বাস-প্রশ্বাস সহজ হওয়া ও ক্লান্তভাব দূর হওয়া, ইত্যাদি। কিন্তু ২৮ দিন পর দেখা যায়, চিকিৎসাটি রোগীদের মৃত্যু রুখতে বা সুস্থ হওয়া ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।
ভারতীয় পরীক্ষায় সরাসরি জড়িত ছিলেন না এমন বিজ্ঞানীরা জানান, এ ফলাফল হতাশাজনক। কিন্তু চিকিৎসকদের এ ফলাফলের কারণে প্লাজমা থেরাপি নিয়ে আশা ছেড়ে দেওয়া উচিৎ হবে না। বিজ্ঞানীদের ভাষ্য, এ নিয়ে আরো বড় পরিসরের পরীক্ষা দরকার। তাছাড়া করোনার মৃদু উপসর্গে আক্রান্ত ও সদ্য আক্রান্তদের ওপরও পরীক্ষা চালানো প্রয়োজন।
বৃটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির এপিডেমিওলজি ও মেডিসিন বিষয়ক অধ্যাপক মার্টিন ল্যান্ডরে বলেন, কেবল কয়েকশ’ রোগীর ওপর চালানো পরীক্ষা স্পষ্ট প্রমাণ হিসেবে পর্যাপ্ত নয়।
তিনি বলেন, এমনও হতে পারে যে, সদ্য আক্রান্তদের ওপর বা যারা স্বাভাবিকভাবে অত অ্যান্টিবডি প্রস্তুত করতে পারছে না, তাদের জন্য হয়তো এ চিকিৎসা পদ্ধতি বেশ কার্যকর হবে। কিন্তু এমন ধারণার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরীক্ষা চালাতে হবে—কেবল অনুমান যথেষ্ট নয়।
ল্যান্ডরের মতো একই কথা বলেছেন রিডিং ইউনিভার্সিটির ভাইরোলজি বিষয়ক অধ্যাপক ইয়ান জোনস। তিনি বলেন, সম্ভবত আক্রান্ত হওয়ার পরপর কোনো রোগীকে এ চিকিৎসা দিলে তা কার্যকর হতে পারে। তিনি অন্যান্য গবেষকদের চিকিৎসা পদ্ধতিটি নিয়ে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status