শেষের পাতা
সলিমুল্লাহ এতিমখানা
আড়াই বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি হাইকোর্টের রায়
স্টাফ রিপোর্টার
২৪ অক্টোবর ২০২০, শনিবার, ৮:৫৯ পূর্বাহ্ন
রাজধানীর আজিমপুর সলিমুল্লাহ এতিমখানার সম্পত্তি নিয়ে টালবাহানা করছে একটি চক্র। এই সম্পত্তি ফিরিয়ে দিতে আড়াই বছর আগে হাইকোর্ট রায় দেন। কিন্তু সেই রায়ও বাস্তবায়ন করছে না সংশ্লিষ্টরা। এই রায়সহ চারটি রায় বাস্তবায়নে সমাজসেবা অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তা দিয়ে তিনবার কমিটি পরিবর্তন করলেও অদৃশ্য কারণে কমিটি নীরব রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এতিমখানার জমিতে অবৈধভাবে ১৮তলা ভবন করেছিল নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কনকর্ড। সুপ্রিম কোর্ট ভবনটি বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করে ৩০ দিনের মধ্যে এতিমখানা কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেন। এরপর আড়াই বছর পার হলেও সেই সম্পত্তি ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে না।
যার কারণে দুই বিঘা জমির ওপর নির্মিত এই ভবনটি পড়ে রয়েছে অযত্ন-অবহেলায়। এতে প্রতি মাসে বড় অঙ্কের টাকার আর্থিক অপচয় হচ্ছে। যে অর্থ এতিমদের সাহায্যে কাজে লাগানো যেতো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের ব্যাপারে এতিমখানার আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিক আর হক বলেন, এতোদিন কেন হস্তান্তর করতে পারছে না বোধগম্য নয়। তবে, কনকর্ড একটি রিভিউ আবেদন করেছে। তার মানে রিভিউ আবেদন করার অর্থ রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত নয়। রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত না থাকায় ওই ভবন হস্তান্তর করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তা না করায় রায় লঙ্ঘিত হয়েছে।
নানা অভিযোগ: এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক কমিটি অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং নিয়মবহির্ভূত অর্থ ব্যয়ের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে এতিম খানার আজীবন সদস্যরা সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বরাবর একাধিকবার অভিযোগও করেন। কিন্তু কোনো প্রতিকারই পাননি এতিমখানা সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি নিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শেখ রফিকুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, এতিমখানার সাবেক সভাপতি ও সাবেক মহিলা এম.পি বেগম সামছুন্নাহার আহসানউল্লাহ্ এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক জি.এ.খান, ২০০৪ সালের দিকে এতিমখানার ৮.৫ বিঘা জমিতে ভবন নির্মাণে কনকর্ড ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেন। সেখানে ৩০ লাখ টাকা সাইনিং মানি নিয়ে এতিমখানা ১২ পার্সেন্ট ও ডেভেলপার কোম্পানি ৮৮ পার্সেন্ট অনুপাতে চুক্তি হয়। যা অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন এতিমখানার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। পরে ওই ডেভেলপার কোম্পানিটি ২০১২ সালের মধ্যে ১৮ তলা ভবন নির্মাণ কাজ শেষও করেন। অভিযোগ রয়েছে, কোম্পানিটির সঙ্গে ১৫ তলা চুক্তি হলেও তারা নিয়মবহির্ভূত ও এতিমখানাকে না জানিয়ে আরো তিনতলা বেশি করেন। যা পুরোটায় দখল নিতে চেয়েছিলেন কোম্পানিটি। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, চুক্তি অনুযায়ী এতিমখানাকে অতিমাত্রায় ঠকানো হয়েছে। ফলে এতিমখানার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে যায়। যার কারণে এতিমখানার তৎকালীন ৪ জন ছাত্র মো. মোরসালিন, সেলামত খাঁ, ইউসুফ, রহিম বাদী হয়ে ২০১২ সালের ১২ই জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন। এই রিটের প্রেক্ষিতে ৪টি আদেশসহ নির্মিত ভবন ও জমি এতিমখানার অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ হয়। তারপর ২০১৭ সালে ডেভেলপার কোম্পানি আপিল করেন এবং আপিল বিভাগ ২০১৮ সালের ১২ই মার্চ আপিল খারিজ করেন। হাইকোর্টের একটি রায়ে ‘দ্রুত এতিমখানায় একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করতে হবে’ মর্মে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে নির্দেশনা দেন। এই আদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সমাজসেবা অধিদপ্তর এডহক কমিটি গঠন করেন এবং রায় বাস্তবায়নের আদেশ প্রদান করেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, এই কয়েক বছরে এডহক কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যরা দায়িত্ব পালন না করে বিভিন্ন অজুহাতে কালক্ষেপণ করছেন এবং বিভিন্নভাবে এতিমখানার উন্নয়নের নামে জাকাত, ফিতরা ও অন্যান্য দানের টাকা অপব্যয় করছেন। তাদের কর্মকাণ্ডে ডেভেলপার কোম্পানি ও এতিমখানার সাবেক কমিটির স্বার্থ আদায়ে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী। কমিটিকে রায় বাস্তবায়নে ‘নতুন ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নির্বাচন অনুষ্ঠান ও নির্বাচিত কমিটির নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর’ করতে নির্দেশ দেয়া হয়। অথচ কোনো কমিটিই নতুন সদস্যভুক্তি বা নির্বাচনের মাধ্যমে পরিচালনা পরিষদ গঠনের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। শুধু তাই নয় সর্বশেষ আহ্বায়ক কমিটির স্বেচ্ছাচারিতায় বিভিন্ন নির্মাণ কাজ দেখিয়ে প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এই বিষয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক বডির সদস্য শহর সমাজসেবা অফিসার জহির উদ্দিন বলেন, আমাদের যে দায়িত্ব আমরা তা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছি। ওই ভবনটি আমাদের কাছে সংশ্লিষ্টরা হস্তান্তর করলেই আমরা হস্তান্তর করতে পারবো। তাছাড়া কনকর্ড আরো একটি রিট পিটিশন করেছেন। সেটার শুনানি বাকি আছে। কার্যকরী কমিটি গঠন ও নির্বাচন করার ব্যাপারে এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা দুইবার নোটিশ দিয়ে সদস্য আহ্বান করেছি কিন্তু আমরা সদস্য পাইনি। গত কয়েকদিন আগেও একটা নোটিশ দিয়েছি। সদস্য হলেই আমরা নির্বাচন দিতে পারবো।
যার কারণে দুই বিঘা জমির ওপর নির্মিত এই ভবনটি পড়ে রয়েছে অযত্ন-অবহেলায়। এতে প্রতি মাসে বড় অঙ্কের টাকার আর্থিক অপচয় হচ্ছে। যে অর্থ এতিমদের সাহায্যে কাজে লাগানো যেতো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের ব্যাপারে এতিমখানার আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিক আর হক বলেন, এতোদিন কেন হস্তান্তর করতে পারছে না বোধগম্য নয়। তবে, কনকর্ড একটি রিভিউ আবেদন করেছে। তার মানে রিভিউ আবেদন করার অর্থ রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত নয়। রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত না থাকায় ওই ভবন হস্তান্তর করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তা না করায় রায় লঙ্ঘিত হয়েছে।
নানা অভিযোগ: এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক কমিটি অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং নিয়মবহির্ভূত অর্থ ব্যয়ের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে এতিম খানার আজীবন সদস্যরা সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বরাবর একাধিকবার অভিযোগও করেন। কিন্তু কোনো প্রতিকারই পাননি এতিমখানা সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি নিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শেখ রফিকুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, এতিমখানার সাবেক সভাপতি ও সাবেক মহিলা এম.পি বেগম সামছুন্নাহার আহসানউল্লাহ্ এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক জি.এ.খান, ২০০৪ সালের দিকে এতিমখানার ৮.৫ বিঘা জমিতে ভবন নির্মাণে কনকর্ড ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেন। সেখানে ৩০ লাখ টাকা সাইনিং মানি নিয়ে এতিমখানা ১২ পার্সেন্ট ও ডেভেলপার কোম্পানি ৮৮ পার্সেন্ট অনুপাতে চুক্তি হয়। যা অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন এতিমখানার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। পরে ওই ডেভেলপার কোম্পানিটি ২০১২ সালের মধ্যে ১৮ তলা ভবন নির্মাণ কাজ শেষও করেন। অভিযোগ রয়েছে, কোম্পানিটির সঙ্গে ১৫ তলা চুক্তি হলেও তারা নিয়মবহির্ভূত ও এতিমখানাকে না জানিয়ে আরো তিনতলা বেশি করেন। যা পুরোটায় দখল নিতে চেয়েছিলেন কোম্পানিটি। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, চুক্তি অনুযায়ী এতিমখানাকে অতিমাত্রায় ঠকানো হয়েছে। ফলে এতিমখানার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে যায়। যার কারণে এতিমখানার তৎকালীন ৪ জন ছাত্র মো. মোরসালিন, সেলামত খাঁ, ইউসুফ, রহিম বাদী হয়ে ২০১২ সালের ১২ই জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন। এই রিটের প্রেক্ষিতে ৪টি আদেশসহ নির্মিত ভবন ও জমি এতিমখানার অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ হয়। তারপর ২০১৭ সালে ডেভেলপার কোম্পানি আপিল করেন এবং আপিল বিভাগ ২০১৮ সালের ১২ই মার্চ আপিল খারিজ করেন। হাইকোর্টের একটি রায়ে ‘দ্রুত এতিমখানায় একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করতে হবে’ মর্মে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে নির্দেশনা দেন। এই আদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সমাজসেবা অধিদপ্তর এডহক কমিটি গঠন করেন এবং রায় বাস্তবায়নের আদেশ প্রদান করেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, এই কয়েক বছরে এডহক কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যরা দায়িত্ব পালন না করে বিভিন্ন অজুহাতে কালক্ষেপণ করছেন এবং বিভিন্নভাবে এতিমখানার উন্নয়নের নামে জাকাত, ফিতরা ও অন্যান্য দানের টাকা অপব্যয় করছেন। তাদের কর্মকাণ্ডে ডেভেলপার কোম্পানি ও এতিমখানার সাবেক কমিটির স্বার্থ আদায়ে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী। কমিটিকে রায় বাস্তবায়নে ‘নতুন ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নির্বাচন অনুষ্ঠান ও নির্বাচিত কমিটির নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর’ করতে নির্দেশ দেয়া হয়। অথচ কোনো কমিটিই নতুন সদস্যভুক্তি বা নির্বাচনের মাধ্যমে পরিচালনা পরিষদ গঠনের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। শুধু তাই নয় সর্বশেষ আহ্বায়ক কমিটির স্বেচ্ছাচারিতায় বিভিন্ন নির্মাণ কাজ দেখিয়ে প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এই বিষয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক বডির সদস্য শহর সমাজসেবা অফিসার জহির উদ্দিন বলেন, আমাদের যে দায়িত্ব আমরা তা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছি। ওই ভবনটি আমাদের কাছে সংশ্লিষ্টরা হস্তান্তর করলেই আমরা হস্তান্তর করতে পারবো। তাছাড়া কনকর্ড আরো একটি রিট পিটিশন করেছেন। সেটার শুনানি বাকি আছে। কার্যকরী কমিটি গঠন ও নির্বাচন করার ব্যাপারে এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা দুইবার নোটিশ দিয়ে সদস্য আহ্বান করেছি কিন্তু আমরা সদস্য পাইনি। গত কয়েকদিন আগেও একটা নোটিশ দিয়েছি। সদস্য হলেই আমরা নির্বাচন দিতে পারবো।