এক্সক্লুসিভ

সিন্ডিকেট মোকাবিলায় সরকার ব্যর্থ নয়

স্টাফ রিপোর্টার

২৪ অক্টোবর ২০২০, শনিবার, ৮:০৪ পূর্বাহ্ন

বাজারে সিন্ডিকেট আছে। তবে সিন্ডিকেট মোকাবিলায় সরকার ব্যর্থ নয় বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য ওঠানামার পেছনে একটা সিন্ডিকেট সবসময় কাজ করে। তবে সরকার সিন্ডিকেটের কাছে হেরে যাচ্ছে- এ কথাটা ঠিক নয়। গতকাল ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে মতবিনিময় সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তার আগে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর-দক্ষিণ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ টানা মেয়াদে সরকারে আছে। তারপরও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেটের কাছে হেরে যাচ্ছে কি না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আপনি প্রতিবেশী সব দেশের দিকে তাকান, এই করোনা পরিস্থিতিতে বাজারমূল্য, কোথাও আমদানি-রপ্তানিতে আগের পর্যায়ে কেউ নেই এবং এখানে উৎপাদনেরও একটা ব্যাপার আছে। যেমন- পিয়াজ যদি আমাদের দেশে ঘাটতি থাকে, সেটা আমরা কাছের দেশ ভারত থেকে আনি। ভারতে কর্নাটক, মহারাষ্ট্রেও পিয়াজের উৎপাদন কম নয়। যখন সেখানে একটা সংকট সৃষ্টি হয় তখন তারা রপ্তানি বন্ধও করে দেয়। কিন্তু আমাদের সরকারের চেষ্টার ফলে ভারতীয় পিয়াজ আসতে শুরু করেছে। অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও উঠানামা করবে। এখন বর্ষা, এ সময়ে একটু দ্রব্যমূল্য বাড়ে, আবারও এগুলো ঠিক হয়ে আসে। এসব বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের বাণিজ্যমন্ত্রী আপনাদেরকে তার বিফ্রিংয়ে বলে থাকেন। কাজেই, এ নিয়ে আর মন্তব্য করতে চাই না। করোনা মহামারি পরিস্থিতি থেকে বর্তমান পর্যন্ত দলীয় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চলমান ছিল দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, একটা কথা বলা হয়, এতদিন সব সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এ কথা ঠিক নয়। সাতমাস ধরেই আমাদের রাজনৈতিক সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিল। আমাদের সারা দেশে বন্যা মোকাবিলা, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও বৈশ্বিক মহামারি করোনা মোকাবিলায় আমাদের নেতাকর্মীরা সারা দেশে সক্রিয় ছিলেন। আওয়ামী লীগ কোথাও অনুপস্থিত ছিল না। আমাদের সহযোগী সংগঠনগুলো কৃষকদের ধান কেটে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে। এগুলো তো আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডের বাইরে নয়। এগুলো আমাদের দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা করেছি। শুধু আপনি এইটুকুই বলতে পারেন যে, করোনাকালে আমাদের কমিটি গঠন প্রক্রিয়াটা বন্ধ ছিল। আমাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড বন্ধ ছিল না। তিনি আরও বলেন, এই যে ধর্ষণবিরোধী, নারী নির্যাতনবিরোধী আন্দোলন, সামাজিক আন্দোলন এবং এখানেও আমাদের পার্টি বিরুদ্ধে আছে। আমাদের নেত্রী এখানেও ধর্ষণ-নারী নির্যাতনের সঙ্গে যারাই জড়িত, কোনো অপারাধীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড় দেননি। এখানে কোনো প্রকার আপস করা হয়নি। ব্রিটেনের গার্ডিয়ান পত্রিকার একটি প্রতিবেদনের উদাহরণ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্রিটেনের মতো দেশে ৫৫ হাজার নারী ধর্ষিত, নির্যাতিত হয়েছে। এবং করোনার জন্য সারা বিশ্বে পারিবারিক সহিংসতা বেড়ে গেছে। নারীরা এর শিকার হয়েছে বেশি। সেখানে বাংলাদেশ ব্যতিক্রম নয়। আমাদের দেশের হিসাবে এক বছরে এক হাজার ধর্ষণ নির্যাতনের বিষয় আপনি আনতে পারেন। কিন্তু ব্রিটেনের মতো দেশে এই যে ৫৫ হাজার নারী নির্যাতিত হয়েছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সরকারের পদত্যাগ কেউ দাবি করেনি। এসব বিষয়গুলো করোনার কারণে অনেক সামাজিক অবক্ষয় এবং এ ধরনের অপকর্মগুলো হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা নির্বাচন, আন্দোলনে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বারবার বিফ্রিং করে আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন। পরীক্ষার পরে আন্দোলন, রোজার ঈদের পরে আন্দোলন, কখনো কোরবানির পরে আন্দোলন, কত রোজা গেল, ঈদ কত গেল, কত পরীক্ষা চলে গেল, এই বছর না ওই বছর, আন্দোলন করে বিএনপি। আজকে বিএনপি মহাসচিবের কাছে জানতে চাই, আর সাংবাদিকদেরও বলতে চাই, আপনারা কি বিশ্বাস করেন- বিএনপি’র আন্দোলনের হাঁকডাক আষাঢ়ে তর্জন-গর্জনের সার কি না? বেগম জিয়াকে মুক্ত করার জন্য এই বিএনপি ঢাকা মহানগরীতে একটা বড় বিক্ষোভ সমাবেশ করতে পারেনি! শেখ হাসিনা মানবিকতা, উদারতা, বেগম জিয়ার বয়সজনিত বিষয়টি চিন্তা করে তাকে আজকে কারাদণ্ডাদেশ স্থগিত করেছেন। এটি বিএনপি’র আন্দোলনের ফসল নয়, এটা শেখ হাসিনার মানবিকতা এবং উদারতার দৃষ্টান্ত। সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমানের উত্তরার নিজ ফ্ল্যাটে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদও জানান তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, ইদানীং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপপ্রচার চলছে। এ থেকে সাংবাদিকরাও বাদ যাচ্ছেন না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমানের বাসায় বর্বরোচিত হামলা করা হয়েছে। আমি গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। এ হামলার সঙ্গে যারাই জড়িত তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। সাংবাদিক পীর হাবিবের বাসায় এ ধরনের হামলা কাম্য নয়।
অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আগামী মাস থেকে দলীয় কর্মকাণ্ড পূর্ণোদ্যমে শুরু করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আগামী ৩রা নভেম্বর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বিকাল সাড়ে ৩টায় স্বল্প পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জেল হত্যা দিবসের আলোচনা হবে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি আলোচনায় অংশ নেবেন বলে জানান। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status