বাংলারজমিন
করোনায় বিপর্যস্ত রাধানগর পশুর হাট
সর্বস্বান্ত ইজারাদার
গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি
২৪ অক্টোবর ২০২০, শনিবার, ৭:৩৪ পূর্বাহ্ন
করোনায় মন্দাভাব আর লোকসানের পাহাড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে সিলেটের গোয়াইনঘাটের সর্ববৃহৎ পশুর হাট রাধানগরের বাণিজ্যিক রূপরেখা লাভের আশায় ৬৬ লাখ ৪০ হাজার টাকায় ইজারা নেয়া এই পশুরহাট নিয়ে এখন দিশাহারা ইজারাদার। উপজেলার ব্যস্ততম সর্ববৃহৎ এই পশুর হাটটি ইজারা নিয়ে সর্বস্বান্ত হতে চলেছেন ইজারাদার মো. ফারুক আহমদ। ১৪২৬ বাংলায় ৬৬ লাখ ৪০ হাজার টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১ বছরের জন্য হাটটি টেন্ডারে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইজারা পান তিনি। ১ লা বৈশাখ পশুরহাটের দখলদেহী হলেও এরই মধ্যে দু’মাস পেরুতেই বিশ্বে শুরু হয় করোনাভাইরাস মহামারি। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মরণব্যাধি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুস সাকিব জনসাধারণের সুরক্ষায় উপজেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত মোতাবেক বন্ধ করে দেয়া হয় রাধানগর বাজারের পশুর হাটের পশু বেচাকেনা। এ কারণে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায় হাটের সবধরনের পশু বিকিকিনি। এ সময় চলমান লকডাউন পরিস্থিতিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রাধানগর বাজার পশুরহাটকে ঘোষণা করা হয় রাধানগর বাজারের অস্থায়ী কাঁচা ও মাছ বাজার। তাছাড়া ঈদুল আজহার সময় প্রশাসনের নির্দেশনায় ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স সম্মুখের মাঠে গড়ে তোলা হয় অস্থায়ী পশুরহাটও। এ কারণে রাধানগর বাজার পশুরহাটে ঐ সময়ে কমতে থাকে গবাদিপশুর উপস্থিতি এবং ক্রেতার সংখ্যা। করোনাভাইরাসের মতো এ বিষয়টিও মারাত্মক প্রভাব ফেলে এই পশুর হাটের বিকিকিনির ক্ষেত্রে। বিষয়টি বড় লোকসানের মুখোমুখি করে রাধানগর বাজার পশুর হাটের ইজারাদারকে। এ ব্যাপারে কথা হলে রাধানগর বাজার পশুর হাটের ইজারাদার মো. ফারুক আহমদ জানান, ১৪২৬ বাংলায় ৬৬ লাখ ৪০ হাজার টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১ বছরের জন্য রাধানগর বাজার পশুরহাটটি আমার অনুকূলে টেন্ডারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ইজারা প্রদান করা হয়। উক্ত পশুর হাটটি ইজারা প্রাপ্তির পর পরই শুরু হয় মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। এই দুর্যোগ শুরু হলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে আমাদের এই পশুরহাটের পশু বিকিকিনির সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে সেখানে অস্থায়ী কাচা ও মাছ বাজার গড়ে তোলা হয়। এই বিশাল লোকসানের মধ্যেও আবার ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন পরিষদ সম্মুখে একটি অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমোদন দেয়ায় আমিআরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হই। বিশাল এ লোকসানে বর্তমানে আমি সর্বস্বান্ত। আমাদের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে আমরা সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ কাটিয়ে উঠতে মানবিক কারণে আসন্ন বছর সম্পূর্ণ ফ্রিতে আমাদের অনুকূলে পুনরায় উক্ত রাধানগর বাজার পশুরহাটটি বরাদ্দ দিতে আহ্বান জানাচ্ছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুস সাকিব বলেন, কোভিড-১৯ সৃষ্ট দুর্যোগের কারণে রাধানগর বাজারে পশুরহাটসহ প্রায় হাট বাজারে অস্থায়ী কাচা ও মাছ বাজার গড়ে তোলা হয়েছিল, যে কারণে বেশ ক’মাস তাদের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। রাধানগর বাজারসহ সবক’টি পশুর হাটবাজারের ইজারাদারের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি আমরা সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষে অবহিত করেছি, কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে পরবর্র্তী নির্দেশনা দিবেন।