প্রথম পাতা

গোয়েন্দা তথ্য

বাজার অস্থির করছে অসাধু সিন্ডিকেট

আল-আমিন

২৩ অক্টোবর ২০২০, শুক্রবার, ৯:২৩ পূর্বাহ্ন

অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার। হু হু করে বাড়ছে সব পণ্যের দাম। সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও কোনো উদ্যোগই কার্যকর হচ্ছে না পুরোপুরি। বাজার ব্যবস্থায় অস্থিতিশীলতার জন্য ৮টি কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। এ ছাড়াও সংস্থাটি দ্রুত বাজারের পণ্যসামগ্রী নিয়ন্ত্রণের জন্য ৭টি সুপারিশ করেছে। বাজারে নিত্যপণ্যের সামগ্রীর দাম বেশি হওয়ার কারণে মাঠ পর্যায়ের গোয়েন্দারা অসাধু ব্যবসায়ী ও বাজার সিন্ডিকেটকে দায়ী করেছেন। তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় না আনা গেলে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রতিবেদনটি পুলিশ সদর দপ্তর, নিত্যপণ্যের তদারকি করা একাধিক মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন গতকাল মানবজমিনকে জানান, আমাদের মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ৪০ জনের টিম সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছে। তাদের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে আইন প্রয়োগের। তারা পণ্যের দাম ওঠা-নামাসহ বাজার মনিটরিং করছে। তিনি জানান, পিয়াজের দাম কমে আসছে। আলু কৃষি মন্ত্রণালয় দেখছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে একাধিক মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

গোয়েন্দা সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর জন্য ৮টি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। তা হচ্ছে, জুনের শেষ দিক থেকে দফায় দফায় বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ফলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ধানসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হওয়ায় উৎপাদন কমে যাওয়ায় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে মসলার। বিশেষ করে আদার। করোনা রোধে আদার ভূমিকাকে পুঁজি করে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী আদার মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। করোনার কারণে চীন ও ভারত থেকে আদা আমদানি কম হওয়ার ফলে আদার মূল্য বাজারে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।

এ ছাড়াও করোনার পরিস্থিতিতে ডিম ও মাংসের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সরবরাহের ঘাটতি রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে পরিবহন সমস্যা ও সম্প্রতি বন্যা পরিস্থিতি এসব পণ্য উৎপাদনে বাধা প্রাপ্ত হওয়ায় ডিম ও মাংসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দাম বাড়ার আরেক কারণ পশু খাদ্যের অভাব ও খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি। দফায় দফায় বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পচনশীল দ্রব্য হওয়ায় বিভিন্ন সবজির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়াও গ্রীষ্মকালীন সবজি শেষের দিকে থাকার কারণে বাজারে কাঁচা তরকারির সরবরাহ তুলনামূলকভাবে কম। একটি সিন্ডিকেট চক্র সব পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি  করার পাঁয়তারা করছে।
প্রতিবেদনে বাজার নিয়ন্ত্রণে মতামত বা সুপারিশে বলা হয়েছে যে, করোনাভাইরাস ও বন্যাকে পুঁজি করে অবৈধ মজুতের মাধ্যমে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী যাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে নজরদারি জোরদার করা। কিছু অস্বাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট অবৈধ মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করে বাজার অস্থিতিশীল করে তুলেছে। এরূপ অসাধু ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেট চিহ্নিতপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা।  

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দামের পার্থক্য কমিয়ে আনতে পাইকারি বিক্রেতাদের মনিটরিং এর আওতায় আনা। মতামতে বলা হয়েছে, টিসিবি’র মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম ঢাকাসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সম্প্রসারিত করা। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মনিটরিং বাড়ানোর পাশাপাশি মজুতদারি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম জোরদার করা। এ ছাড়াও বলা হয়েছে, আমদানির ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশ ভারতের ওপর অধিক নির্ভরশীলতা কমানোর পাশাপাশি অন্যান্য দেশ থেকে আমদানিতে ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করা। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে পূর্বেই আমদানি নিশ্চিত করা যাতে আমদানি দুর্বলতার সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজারে অস্থিতিশীল করার সুযোগ না পায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status