শেষের পাতা

বাইডেন জয়ী হলে যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি ‘হানিমুন’ শেষ

মানবজমিন ডেস্ক

২৩ অক্টোবর ২০২০, শুক্রবার, ৯:১৪ পূর্বাহ্ন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতায় থাকার সময় ব্যাপক সুবিধা পেয়ে গেছেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকা ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে তিনি প্রায় ‘ফ্রি পাস’ উপভোগ করেছেন। তবে আসন্ন মার্কিন নির্বাচনে যদি জো বাইডেন ক্ষমতায় আসেন তাহলে ধারণা করা হচ্ছে তিনি সৌদি আরবের সঙ্গে থাকা কৌশলগত সম্পর্কের রিসেট বাটন চেপে দেবেন। সেক্ষেত্রে ক্রাউন প্রিন্সকে ভবিষ্যতে সাবধানে পা ফেলতে হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে এমনটাই বলা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বেশকিছু ইস্যু নিয়ে ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে জো বাইডেন প্রশাসনের সংঘাত দেখা যেতে পারে। এরমধ্যে রয়েছে, সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ড, নারীবাদী কর্মীদের গ্রেপ্তার এবং ইয়েমেন যুদ্ধের মতো বেশ কিছু মানবাধিকার ইস্যু। এ ছাড়া, ইরানের ব্যালেস্টিক মিসাইল কার্যক্রমকে বাইডেন কীভাবে নেবেন তার উপরে মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্কের মাত্রা পরিবর্তিত হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। ট্রাম্প ও তার মিত্র আরব রাষ্ট্রগুলো বরাবরই মানবাধিকারের থেকে লাভজনক চুক্তিকে বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তবে বাইডেনের জয় হয়তো কয়েক দশকের এই মিত্রতার ইতি টানবে না। তবে তার প্রশাসন এই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে শক্ত শর্ত জুড়ে দেবেন।
 
উপসাগরীয় অঞ্চলের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্সের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাইডেন জিতলে কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক। তবে এখানে অনেকগুলো দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত বিষয় রয়েছে। কেউই এগুলো নষ্ট করতে চাইবে না। তারপরও বাইডেন প্রশাসন চাইবে সৌদি আরব আরো আপস করুক। তবে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক সহজেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট আরেক কূটনীতিক। তিনি বলেন, আমার ধারণা বাইডেন নারী অধিকারের মতো কিছু বিষয় নিয়ে আরো বেশি সচেষ্ট হবেন।

প্রচারণা চলার সময় বাইডেন সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরায় বিবেচনার কথা বলেছেন। সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক তেল রপ্তানি করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের অন্যতম প্রধান ক্রেতা এই সৌদি আরবই। তবে এটি বিবেচনায় না নিয়ে বাইডেন খাসোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে আরো স্পষ্ট জবাব চাচ্ছেন। একই সঙ্গে ইয়েমেন যুদ্ধ থামাতে বড় ভূমিকা নেয়ার কথাও জানিয়েছেন বাইডেন।

রিয়াদভিত্তিক গালফ রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ সাগির বলেন, বাইডেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি মধ্যপ্রাচ্যে দৃষ্টি কমিয়ে দেবেন এমন আশঙ্কা রয়েছে। সৌদি আরবসহ অন্য উপসাগরীয় দেশগুলোর প্রতি আরো কঠিন অবস্থান নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।

রয়টার্সকে সংশ্লিষ্ট এক কূটনীতিক বলেন, উপসাগরীয় দেশগুলো ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন করছে কারণ তারা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর সব সময় ভরসা করা যাবে না। তবে ইসরাইল হতে পারে ইরানের প্রভাবের বিরুদ্ধে সব সময়কার বন্ধু। গত বছর সৌদি আরবের তেলক্ষেত্রে ভয়াবহ হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব এর জন্য ইরানকে দায়ী করেছিল। কিন্তু সে সময় ইরানের বিরুদ্ধে কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। উপসাগরীয় অঞ্চলে একটি যুদ্ধ এড়ানোর চেষ্টাও দেখা গেছে তখন। সৌদি আরবও তাই ইসরাইলের সঙ্গে তার আরব মিত্রদের চুক্তিকে কৌশলগত দিক থেকে সমর্থন করছে। তবে শিগগিরই হয়তো সরাসরি ইসরাইলকে সমর্থন দিচ্ছে না দেশটি। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্র বলে বিবেচিত মক্কা ও মদিনার জিম্মাদার হওয়ার কারণে এটি সৌদি আরবের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশটি এখনো বলছে, ইসরাইল-ফিলিস্তিন চুক্তি হলেই তারা ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেবে।
এ নিয়ে রিয়াদে মার্কিন দূতাবাসের সাবেক প্রধান ড্যাভিড রানডেল বলেন, সৌদি আরব এখনই ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেবে না। কারণ বাইডেন ক্ষমতায় এলে তারা এটিকে কার্ড হিসেবে খেলতে চায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status