খেলা

‘পারফরমেন্স মূল্যায়নের সময় আসেনি’

স্পোর্টস রিপোর্টার

২৩ অক্টোবর ২০২০, শুক্রবার, ৯:০৫ পূর্বাহ্ন

বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ দিয়ে সাত মাস পর ২২ গজে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচের স্বাদ পেয়েছেন ক্রিকেটাররা। জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে চলমান আসরে খেলছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের খেলোয়াড় ও এইচপি স্কোয়াডের ক্রিকেটাররা। প্রেসিডেন্টস কাপে শিষ্যদের অবস্থা দেখে নেয়ার পাশাপাশি জাতীয় দলের পাইপলাইনে থাকা ক্রিকেটাররা পর্যবেক্ষণে ছিলেন জাতীয় দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর। গতকাল অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে টাইগার কোচ কথা বলেছেন প্রেসিডেন্টস কাপ, তামিমের অধিনায়কত্বসহ নানা বিষয়ে। এসেছে নিষেধাজ্ঞা শেষে মাঠে নামার অপেক্ষায় থাকা সাকিব আল হাসানের প্রসঙ্গও।
প্রেসিডেন্টস কাপে টপঅর্ডারে ব্যর্থতা
টপ অর্ডারদের কেউই খেলতে পারেননি বড় ইনিংস। ছয় ম্যাচে টপঅর্ডারদের মধ্যে একমাত্র ফিফটি তামিম ইকবালের। বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক চার ম্যাচে করেছেন ১০১ রান। জাতীয় দলের হয়ে শেষ ম্যাচে ১৮০ রানের ইনিংস খেলা লিটন দাস চার ম্যাচে দুই অঙ্ক ছুঁয়েছেন দুইবার। সর্বোচ্চ ২৭। জাতীয় দলের আরেক টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার তিনবারই আটকে গেছেন এক অঙ্কে। দুই অঙ্ক ছোঁয়া একমাত্র ইনিংসটিও (২১ রান) লম্বা করতে ব্যর্থ। কিছুটা ভালো করেছেন ইমরুল কায়েস। দুই অঙ্ক ছোঁয়া ইনিংস দুটি ৪০ ও ৪৯ রানের। বাকি দুই ইনিংসে করেন শূন্য ও চার রান। মুমিনুল হক সুযোগ পেয়েছেন তিন ম্যাচে। সর্বোচ্চ ৩৯। বাকি দুই ম্যাচে ব্যর্থ। নাঈম শেখ তিন ম্যাচে করেছেন ১২ রান। সর্বোচ্চ ৯ রান। তবে টপঅর্ডারদের ব্যাটে রানখরায় হতাশ নন ডমিঙ্গো। তিনি বলেন, ‘সবার মনে রাখা উচিত ছেলেরা প্রায় সাত মাস পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলছে। স্কিল ট্রেনিং এবং ম্যাচ অনুশীলনের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। এই উইকেটে ব্যাট করাও কঠিন। নতুনরা ভালো করছে। মুশফিক, রিয়াদ, তামিম রান পেয়েছে। সবচেয়ে বড় পাওয়া, ছেলেরা প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরতে পেরেছে।’ ব্যাটসম্যানদের বাজে শটে আউট হওয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার আবু জায়েদের অনেক বাইরের বল তাড়া করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তামিম। শিষ্যদের পাশে দাঁড়ালেন টাইগার কোচ, ‘এসব নিয়ে ভাবনা অমূলক। লম্বা সময় ক্রিকেটের বাইরে থাকলে এমনটা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। সাত মাস পর খেলতে নেমে ১০ দিনের একটি টুর্নামেন্ট দিয়ে পারফরমেন্সের মূল্যায়ন করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’
তামিমের অধিনায়কত্ব
ওয়ানডে অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর এখনো জাতীয় দলের হয়ে টস করতে নামা হয়নি তামিম ইকবালের। প্রেসিডেন্টস কাপে বাড়তি নজর ছিল অধিনায়ক তামিমের উপর। আসরে চার ম্যাচে তামিম একাদশের জয় মাত্র একটিতে। অধিনায়ক তামিমের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলার সময় এখনো আসেনি বলে মত রাসেল ডমিঙ্গোর। এই প্রোটিয়া কোচ বলেন, ‘তিন/চার ম্যাচ দিয়ে অধিনায়কের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনার কিছু নেই। এই টুর্নামেন্টে এমন কিছু বোলার ও ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে তামিম খেলেছে যাদের সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা নেই তার। সে অভিজ্ঞ একজন ক্রিকেটার। তার ক্রিকেট জ্ঞান নিয়ে সংশয়ের কিছু নেই। আশা করি সামনের মাসগুলোতে তামিম একজন দারুণ নেতা হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করবে।’
ফেরার পর সাকিবকে সময় দিতে হবে
জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করায় সাকিব আল হাসানের একবছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে ২৮শে অক্টোবর। অবধারিতভাবেই ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে উঠে এলো সাকিব প্রসঙ্গ। সাকিবের ফেরা নিয়ে রোমাঞ্চিত রাসেল ডমিঙ্গো। সেরা পর্যায়ে ফিরতে সাকিবকে পর্যাপ্ত সময় দেয়ার পক্ষে তিনি। ডমিঙ্গো বলেন, ‘তার সঙ্গে আমার গতকালও (পরশু) কথা হয়েছে। সে এমন একজন ক্রিকেটার যার কাছ থেকে আপনি সবসময় সেরাটা প্রত্যাশা করবেন। হয়তো সেটা ও করেও দেখাতে পারে। মনে রাখতে হবে সে একবছর সবধরনের ক্রিকেট থেকে বিচ্ছিন্ন। বোলিং মেশিনে অনুশীলন আর ১৪০ গতিতে একজন পেসারের মুখোমুখি হওয়ার চাপ আলাদা। পরিপূর্ণ ফিটনেস এবং আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে তাকে কিছুটা সময় দিতে হবে। সাকিব বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। আশাকরি ২০২১ সালটা জাতীয় দলের হয়ে দারুণ কাটবে সাকিবের।’
পেসারদের নিয়ে আশা লেগস্পিনে হতাশা
‘তাসকিন-রুবেলদের ফিটনেস, পারফরমেন্সে আমি খুশি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার মতো ৬-৭ জন বোলার রয়েছে আমাদের। এটা সত্যি দারুণ। মোস্তাফিজুর, তাসকিন, রুবেল, হাসান মাহমুদ, খালেদ আহমেদ, শরিফুল ইসলামদের নিয়ে আমি আশাবাদী। এটা দুর্ভাগ্যজনক আমাদের ভালো মানের লেগস্পিনার নেই। সাদা বলের ক্রিকেটে লেগস্পিনাররা দারুণ কার্যকর। প্রেসিডেন্টস কাপে পর্যাপ্ত বোলিংয়ের সুযোগ পায়নি আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি চোটে পড়ে খেলতে পারলো না। যা খুবই হতাশার। রিশাদ হোসেনকে নিয়ে আমি আশাবাদী। লেগস্পিনার হিসেবে সে ভালো কিছু করে দেখানোর সামর্থ্য রাখে। সে এখনো তরুণ। তাকে আরো সময় দিতে হবে।’
আকবরদের নিয়ে সতর্ক ডমিঙ্গো
‘আমি মনে করি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটারদের ভালোভাবে গড়ে তোলাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রে আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে। দ্রুতই জাতীয় দলে খেলানোর পর ব্যর্থ হলে দুই/তিন বছর পর সে হারিয়ে যাবে। অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে দক্ষিণ আফ্রিকার একজন পেসারের মুখোমুখি হওয়া আর লর্ডসে জফরা আর্চারকে মোকাবিলা করা এক বিষয় নয়। ঘরোয়া আসরে ভালো পারফরমেন্সের পাশাপাশি ফিটনেস, ডিসিপ্লিন সবকিছু বিবেচনা করেই তারপর জাতীয় দলে নেয়া উচিত। আপনি কখনই চাইবেন না একজন প্রতিভাবান ক্রিকেটার হারিয়ে যাক। এজন্য সঠিকভাবে পরিচর্যায় গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status