বিশ্বজমিন

বৃটিশ বিজ্ঞানীর হুঁশিয়ারি

করোনা ভাইরাস পুরো নির্মূল হবে না, থেকে যেতে পারে সিজনাল ফ্লুর মতো

মানবজমিন ডেস্ক

২১ অক্টোবর ২০২০, বুধবার, ১:১২ পূর্বাহ্ন

করোনা ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগজনক এক হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৃটিশ সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা স্যার প্যাট্রিক ভ্যালেন্স। তিনি বলেছেন, করোনার টিকা এলেও এই ভাইরাসকে পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে বলে মনে হয় না। অন্য সব সিজনাল ফ্লুর মতো থেকে যেতে পারে এই ভাইরাস। তিনি জয়েন্ট কমন্স এন্ড লর্ডস ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি কমিটির কাছে তথ্যপ্রমাণ দিয়ে এসব কথা বলেছেন। এ খবর দিয়ে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মিরর বলছে, টিকা আবিষ্কার নিয়ে সারাবিশ্বে বিজ্ঞানী এবং সংশ্লিষ্টদের মধ্যে শুরু হয়েছে এক তীব্র প্রতিযোগিতা।

কোন টিকা প্রথম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে তা নিয়ে সারাবিশ্বে প্রতিযোগিতা চলছে এগিয়ে থাকা কয়েকটি টিকার মধ্যে। এর মধ্যে আছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও এস্ট্রাজেনেকার টিকা, চীনের সিনোভাকের টিকা, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফাইজারের টিকা, জনসন এন্ড জনসনের টিকা প্রভৃতি। স্বীকৃতি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যাতে সর্বসাধারণের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া যায় সেজন্য এরই মধ্যে আগেভাগেই টিকা উৎপাদন করে রাখছে কোনো কোনো কোম্পানি। এর মধ্যে মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফাইজারের বেলজিয়ামের পুরস-এ অবস্থিত কারখানায় প্রস্তুত করা হয়েছে লাখ লাখ ডোজ টিকা। ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় তাদের টিকা সফল প্রমাণিত হলেই তা ব্যবহার করা হবে।

এর অর্থ হলো করোনা ভাইরাসের টিকা ইস্যুতে প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে একধাপ এগিয়ে থাকছে ফাইজার। তবে স্যার প্যাট্রিক ভ্যালেন্স সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, আগামী বসন্তের আগে ব্যাপকভিত্তিতে টিকার ব্যবহার হবে না বলে মনে হচ্ছে। জয়েন্ট কমন্স এবং লর্ডস ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্রাটেজি কমিটিতে তিনি বলেছেন, টিকা এলেও কোভিড-১৯ একেবারে বন্ধ করা যাবে না। স্যার প্যাট্রিক বলেন, একমাত্র গুটিবসন্তকে টিকা দিয়ে একেবারে নির্মূল করা গেছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসকে একেবারে নির্মূল করা যাবে বলে মনে হয় না।

এটি অন্য সব মৌসুমি ফ্লুর মতো থেকে যেতে পারে। তার ভাষায়, টিকা দিয়ে এই ভাইরাসকে একেবারে নিষ্ক্রিয় করা যাবে বলে মনে হয় না। তবে আগামী দু’এক মাসে বিষয়টি পরিষ্কার হবে যে, আমাদেরকে সুরক্ষিত রাখতে কোনো টিকা আসে কিনা। এলেও তা কতদিন আমাদেরকে সুরক্ষিত রাখবে তা জানা যাবে। এরই মধ্যে বেশ কিছু সম্ভাব্য টিকা রোগ প্রতিরোধে ভাল সাড়া দিয়েছে। তবে তৃতীয় পর্যায়ে, অত্যাধুনিক পর্যায়ে যে পরীক্ষা চলছে, তা থেকে ইঙ্গিত মিলবে যে, এই টিকা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারবে কিনা।

উল্লেখ্য, ফাইজার আশা করছে তারা ১০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদন করবে এ বছর। সেখান থেকে ৪ কোটি যাবে বৃটেনে। যেসব রোগী এই টিকা নেবেন, তাদেরকে দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। সাধারণত টিকা তৈরি করতে তার আগে পরীক্ষা চালাতে হয় অনেক বছর ধরে। তারপর সেই পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে স্বীকৃতি দেয়া হয়। কিন্তু এবার করোনা ভাইরাস বিশ্বকে যেভাবে তছনছ করে দিয়েছে, তাতে দ্রুত গতিতে একটি টিকা আনার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

বর্তমানে মানুষের শরীরে ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা চলছে কমপক্ষে ৪০টি টিকার। অন্য ১৫৬টি টিকা রয়েছে ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার আগের স্তুরে। তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষায় এগিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানির সহযোগিতায় পরিচালিত বায়োএনটেক এবং ফাইজারের টিকা, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং এস্ট্রাজেনেকার টিকা, যুক্তরাষ্ট্রের বায়োপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান মডার্নার টিকা, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জনসন এন্ড জনসনের টিকা, চীনের সিনোফার্মা এবং সিনোভ্যাকের টিকা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status