বাংলারজমিন
ব্যাগ পদ্ধতিতে মুক্তার চাষ
মাগুরা প্রতিনিধি
২০ অক্টোবর ২০২০, মঙ্গলবার, ৭:৫২ পূর্বাহ্ন
মাগুরায় ব্যাগ পদ্ধতিতে স্বাদু পানিতে শুরু হয়েছে মুক্ত চাষ। মাগুরা সদর জেলার রামনগর কেষ্টপুর গ্রামে ৩ একর জমি নিয়ে ৬টি স্বাদু পানির পুকুরে মাছ চাষের পাশাপাশি ঝিনুকের মধ্যে মুক্তার চাষ শুরু করেন আবুল হোসেন খান। শুরুটা ইউটিউব দেখে হলেও বাংলাদেশ ও ভারতের অভিজ্ঞদের পরামর্শে অনেকটা শখ করে এ খামার গড়ে তুলেছেন তিনি। ঝিনুক পুকুর থেকে সংগ্রহ করে এতে প্রবেশ করানো হয় ইমেজ। পুকুরে স্বাদু পানিতে পরিপূর্ণভাবে মুক্তা হতে সময় লাগে ১০ থেকে ১২ মাস। পুকুরে মাছ চাষের সঙ্গে ২৫ হাজার ঝিনুকের মধ্যে ১ লাখ মুক্তা উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন এই উদ্যোক্তা। তবে মুক্তাচাষিরা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের দেশের উৎপাদিত মুক্তা দেশে বা বিদেশে রপ্তানি করার কোনো ব্যবস্থা নেই। এই জন্য প্রয়োজন সরকারি উদ্যোগ। ঝিনুকচাষিরা মনে করছেন, অতি অল্প খরচে মাছের সঙ্গে সমন্বিতভাবে স্বাদু পানিতে মুক্তার চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে অনেক বেকার সমস্যা সমাধান হবে। মুক্তা চাষের উদ্যোক্তা আবুল হোসেন খান বলেন, করোনা মহামারিতে বেশি সময় বাসা-বাড়িতে থাকতে হয়। এ সময় ইউটিউবটা একটু বেশি দেখা হয়। এক দিন ইউনিউবে দেখি একটা মেয়ে ঝিনুকের মধ্যে মুক্তা চাষ করছেন। সেখান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আমি পটুয়াখালী একজন উদ্যোক্তার সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারপর আমার তিন একর জায়গায় মধ্যে ৬টি পুকুরে ঝিনুকের মধ্যে মুক্তার চাষ শুরু করি। সব কয়টি পুকুরে মাছের সঙ্গে সমন্বিতভাবে ঝিনুকের মধ্যে ব্যাগ পদ্ধতিতে মুক্তা চাষ শুরু করেছি। ঝিনুক ও মাছ পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত খামারের গোলাম হোসেন বলেন, আমরা সপ্তাহে দুইবার ঝিনুক ও মাছে খাবার প্রদান করি। খাবারের মধ্যে রয়েছে গোবর, সরিষার খৈল টিএসপি ইউরিয়া। এতে মাছের যে খাবার প্রয়োজন হয় ঝিনুকের সেই খাবার লাগে। পাশাপাশি বাড়তি আয় হিসেবে মুক্তা পাওয়া যায়। খরচ কম অধিক লাভ রয়েছে এই চাষে। কেষ্টপুর গ্রামের সুমন শেখ বলেন, আমি শুনেছি এখানে ব্যাগ পদ্ধতিতে ঝিনুকের মধ্যে মুক্তার চাষ হচ্ছে। আমি দেখতে এসেছি। আমার কাছে ভালো লেগেছে আমি আমার পুকুরে মুক্তার চাষ শুরু করবো। অল্প খরচে এই মুক্তার চাষ করা সম্ভব। মাগুরা সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কমকর্তা শরীফ হাসান সোহাগ বলেন, বাংলাদেশের আবহাওয়া মুক্তা চাষের জন্য বেশ উপযোগী। পুকুর-নদী, হাওড়-বাঁওড়ে ভরা এ দেশে মাছের সঙ্গে মুক্তা চাষ সমপ্রসারণ করতে পারলে বেকার সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি চাঙ্গা হবে গ্রামীণ অর্থনীতি। আমাদের মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকে মুক্তা চাষিদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। তাছাড়া জেলায় এ চাষ শুরু হওয়াতে আমি খুবই খুশি। যদি কোন চাষি মুক্তা চাষ বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা চাই তাহলে আমরা তাকে অবশ্যই সহযোগিতা করবো।