বিনোদন

স্টেজ শো বন্ধ

পেশা বদলেছেন অনেক শিল্পী-মিউজিশিয়ান

ফয়সাল রাব্বিকীন

১৯ অক্টোবর ২০২০, সোমবার, ৮:০৬ পূর্বাহ্ন

করোনায় সাত মাস বন্ধ থাকার পর সিনেমা হল খুলে দেয়া হয়েছে। চলচ্চিত্র এবং নাটকের শুটিং শুরু হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু সংগীতাঙ্গন তথা গানের শিল্পীদের অনিশ্চয়তা কাটছে না। কারণ করোনা পরিস্থিতির কারণে সব ধরনের স্টেজ শো বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ শুরু হবে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ স্টেজ শো। এরমধ্যে গান প্রকাশের সংখ্যাও খুব বেশি নয়। বিশেষ করে ঈদের পর থেকে নতুন গান প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো তেমন একটা প্রকাশ করার সাহস পাচ্ছেন না। কারণ তাদের ভাষায়, করোনার আগেই গানের অবস্থা ভালো ছিল না। ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আয় করোনা পরিস্থিতিতে আরো কমেছে। সব মিলিয়ে কোণঠাসা অবস্থায় পড়েছে সংগীতাঙ্গন। এদিকে স্টেজ শো বন্ধ থাকায় অনেক শিল্পী-মিউজিশিয়ান পেশা বদলাতে বাধ্য হচ্ছেন। কারণ তাদের আয়ের বড় উৎস ছিল এই স্টেজ শো। কিন্তু তা বন্ধ থাকায় অনেকেই ঢাকা শহর ছেড়ে চলে গেছেন গ্রামে। সেখানে গিয়ে অনেকে ব্যবসা কিংবা অন্য পেশায় মনোযোগী হয়েছেন। বিশেষ করে অনেক মিউজিশিয়ান টিকতে না পেরে শহর ছেড়েছেন। আর স্টেজনির্ভর যেসব শিল্পী-মিউজিশিয়ানদের আয় কম, তারা পড়েছেন সব থেকে খারাপ অবস্থায়। ঢাকা শহর আঁকড়ে তাদের অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এরইমধ্যে করোনাকালীন সময়ে সরকারের তরফ থেকে কয়েক ধাপে শিল্পী-মিউজিশিয়ানদের আর্থিক সহযোগিতা করা হলেও সেটা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। আর ঢাকার বাইরের শিল্পী-মিউজিশিয়ানদের অবস্থা আরো খারাপ। তারা অনেকেই অন্য পেশায় চলে গেছেন। আর যারা সংগীতকে ভালোবেসে এখনো আশায় আছেন স্টেজ শো শুরু হবার, তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ছোট ছোট সংগীত সংগঠন কিংবা গোষ্ঠীর কার্যক্রমও বন্ধ। বিষয়টি নিয়ে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর বলেন, যারা শুধুমাত্র স্টেজ শোর ওপর নির্ভরশীল তাদের তো স্বাভাবিকভাবেই আয় তেমন নেই। এর ভেতরও যারা কম পারিশ্রমিকে গান করতেন বা বাজাতেন তাদের অবস্থা আরো খারাপ। আমি এরইমধ্যে খবর পেয়েছি অনেক মিউজিশিয়ান ঢাকা ছেড়েছেন। অন্য পেশা বেছে নিচ্ছেন। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। করোনা কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি করিয়েছে আমাদের। এখান থেকে সহসাই বের হবার পথ দেখছি না। কারণ স্টেজ শো কবে নাগাদ শুরু হবে তার কোনো ঠিক নেই। আর করোনার ভেতর লোক সমাগম হলেও সেটা রিস্কি হয়ে যায়। সব মিলিয়ে যারা এই যুদ্ধে টিকে যাবে তারা হয়তো সংগীতের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন। তবে অনেককেই জীবন ও জীবিকার তাগিদে সংগীতটাকে ছাড়তে হচ্ছে। এ বিষয়ে স্টেজের ব্যস্ত সংগীতশিল্পী শাহনাজ বেলী বলেন, আমি নিজেও স্টেজে বছরজুড়ে ব্যস্ত থাকি। কিন্তু গত সাত মাস ধরেই একেবারে বসা। বাসা থেকেই বের হচ্ছি খুব কম। এটা কঠিন একটা সময়। জমানো টাকা খরচ করে চলতে হচ্ছে। কিন্তু যাদের স্টেজের পারিশ্রমিক কম কিংবা যারা মিউজিশিয়ান আছেন তাদের জমানো টাকাও তেমন নেই। তাদের টিকে থাকাটা আরো কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে বিভিন্ন সংগীত সংগঠনের কার্যক্রমও বন্ধ। অনেক শিল্পী-মিউজিশিয়ানরা কিন্তু গ্রামে চলে গেছেন। কারণ কোনো আশার আলো এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। কারণ শো মানেই লোকসমাগম। আর করোনার এই পরিস্থিতিতে সেটা তো করা যাবে না। অনুমতিও মিলবে না। সুতরাং আমি মনে করি এই সময়টায় হয়তো অনেক শিল্পী-মিউজিশিয়ান হারিয়েই যাবেন। যদিও বিষয়টি কষ্টদায়ক। কিন্তু এটাই বাস্তবতা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status