বাংলারজমিন

‘ধর্ষণ বেশির ভাগ হয় বিয়ের প্রলোভনে’

প্রতীক ওমর, বগুড়া থেকে

১৮ অক্টোবর ২০২০, রবিবার, ৪:৩১ পূর্বাহ্ন

‘ছেলে মেয়ে উভয়ের সম্মতিতেই বেশির ভাগ ধর্ষণ হয়। এসএসসির নিচের মেয়েরা এসব ধর্ষণের শিকার হয় বেশি। কম বয়সী এসব মেয়েরা অভিভাবদের অগোচরে প্রেমিকাকে সময় দিয়ে থাকে। তারা কখনো স্কুলে না গিয়ে আবার কখনো অর্ধেক ক্লাশ করেই স্কুল পালিয়ে তার প্রেমিকাকে সময় দিয়ে থাকে। এমন ঘটনাও ঘটেছে যে কিশোরী একটি মেয়ে তিন বার বাড়ি থেকে পালিয়েছে তার প্রেমিকের সাথে। বাবা মায়ের অনুরোধে পুলিশ সেই মেয়েকে তিনবার উদ্ধার করেছে। সংগত কারণেই ধর্ষণ ঠেকাতে অভিভাবকদের আরো বেশি সচেতন হতে হবে। সন্তানের প্রতি খেয়াল বাড়াতে হবে। আমার সন্তান কি করছে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। কোন দুষ্টু ছেলেরা যদি মেয়েকে বিরক্ত করে সেক্ষেত্রে আগেই জানাতে হবে পুলিশকে। প্রকৃতপক্ষে যে ঘটনাগুলো ঘটে সেগুলোর বিরুদ্ধে আমরা কঠিন ব্যবস্থা নিই’। ধর্ষণ বিরোধী বিট পুলিশিং সমাবেশে এসব কথা বলেন বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁঞা।
তিনি গত ৮ মাসের ১০০টি মামলা নিয়ে গবেষণা করেছেন। ফলাফলে দেখেছেন প্রকৃত অপহরণ করে ধর্ষণের শিকার হয়নি বলেই চলে। যা হয়েছে তার প্রেম ঘটিত। তিনি মামলাগুলো কেন হচ্ছে এটা জানার চেষ্টা করেছেন। ভিকটিমদের নিয়েও বিষদ পর্যবেক্ষণ করেছেন। পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁঞা বলেন, বগুড়াতে যে ৩৫টি অপহরণ মামলা হয়েছে সেগুলো পর্যালোচনা করে দেখেছি যেগুলোর মধ্যে ১৬ জন ভিকটিমই এসএসসি থেকে নিচে। এসএসসি থেকে উপরে তারাও ১৬ জন। এই অপহরণগুলো কিন্তু কোনটাই প্রকৃত অপহরণ নয়। এদের কাউকে বাড়ি থেকে বা অন্য কোথাও থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া নয়। এদের প্রত্যেকেই পরষ্পর সম্পর্কের কারণে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। এছাড়া ধর্ষণের মামলা পর্যালোচনা করেছি ৪৮টি। এর মাঝে প্রেম করে বিয়ের প্রলোভনের কারণে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২৭ জন। বিয়ের প্রলোভন ছাড়া কেবল প্রেম করে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৭ জন। এই সাতজনের মাঝে বিয়ে করবে এমন কোন প্রতিজ্ঞা ছিলো না। পরকীয়া সংক্রান্ত ১২ জন এবং মিথ্যা মামলা দিয়েছেন ২ জন। এই ৪৮টি মামলার মাঝে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে শারীরিক সম্পর্কের পর যখন বিয়ে করবে না তখন ঐ নারীরা পুলিশের কাছে জানিয়েছেন তারা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আমরা মামলা নিয়েছি। আসামীদের গ্রেফতারও করেছি। অনেক মামলার চার্জশিটও দেয়া হয়েছে। ধর্ষণের চেষ্টা মামলা ১৫টি। এর মাঝে এসএসসি থেকে নিচে ভিকটিমের সংখ্যা ৭ জন, এইচএসসি বা তার উপরে ৩ জন, গৃহবধূ রয়েছে ৫ জন।
এদিকে বিট পুলিশিং সমাবেশকে ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতনকারীদের জন্য একটি অশনি সংকেত উল্লেখ করেন আলোচকরা। এসময় তারা আরো বলেন, নারীদের ইভটিজিং, ধর্ষণের চেষ্টা এবং নির্যাতনের চেষ্টা করলে শুধুমাত্র পুলিশ নয়, এদেশের আপামর জনগণ সবাই একসাথে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। ধর্ষণকারীকে আমরা কখনই কোনভাবে ছাড় দেয়া হবে না। শহরের শহীদ খোকন পার্কে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বগুড়া সদর থানার বিভিন্ন বিট পুলিশিং কমিটির সদস্যরা অংশ নেয়। নারী নির্যাতনবিরোধী আলাদা আলাদা শোভাযাত্রা নিয়ে এই সমাবেশে যোগ দেন তারা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status