শিক্ষাঙ্গন

‘এত দাম, খাবো কি?’

মো. জয়নাল উদ্দীন, কুবি থেকে

১৩ অক্টোবর ২০২০, মঙ্গলবার, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম চড়া। দিনদিন সাধারণ মানুষের ক্রয়-ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে প্রায় প্রতিটি পণ্য। ফলে পরিবার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের। এ যেন নুন আনতে পান্তা ফুরানো অবস্থা। করোনাকাল এবং দামবৃদ্ধি- এই দু’য়ে শিক্ষার্থীদের অবস্থাও নাজুক। খেয়ে বেঁচে থাকাটাই কষ্টকর। তাই বাধ্য হয়ে দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে প্লাকার্ড হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাকিব।

সাকিব বলেন, ক্যাম্পাস বন্ধে বাড়িতে ছিলাম। টিউশন, নিজের পড়াশোনা- এই অবস্থায় কতদিন আর বাড়িতে থাকা যায়। তার ওপর  ক্যাম্পাস খোলার সঙ্গে সঙ্গে ফাইনাল পরীক্ষা। সবকিছু চিন্তা করে ক্যাম্পাসের পাশে মেসে চলে আসি। কিন্তু বেশ কয়েকদিন ধরেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যেমূল্যের উর্ধ্বগতি। ফলে টিউশন আর বাড়ি থেকে পাঠানো টাকা দিয়ে চলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

সাকিব বলেন, আমি একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে আমার স্বাভাবিক জীবনযাপনে কষ্ট হচ্ছে। আমার চেয়ে যাদের অবস্থা খারাপ তারা কিভাবে খেয়ে বেঁচে থাকবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম না কমালে সাধারণ মানুষকে না খেয়ে মরতে হবে।

শুধু সাকিব নয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস ওঠেছে সাধারণ মানুষের। স্বল্প বেতনের চাকরিজীবীদের অনেকের মুখে হতাশার ছাপ। বাড়ি ভাড়াসহ আনুষঙ্গিক খরচের সঙ্গে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এ যেন মরার ওপর খাড়ার ঘা।

কুমিল্লার আশপাশের বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়- চাল, ডাল, পিয়াজ, তেল ও সবজিসহ সবধরণের পণ্যের বাজার এখনও চড়া। সপ্তাহের ব্যবধানে কয়েকটি সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাজারে প্রতি কেজি আলু ৫০ টাকা, ঢেডঁস ৭০-৮০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, পিয়াজ ১০০ টাকা,  তেল ১২০ টাকা। চালের বাজার তো আগে থেকেই চড়া। এখন কেজি ৫৫-৬০ টাকা, কাঁচামরিচের কেজি দীর্ঘদিন ধরেই ২২০ টাকার ওপরে। গাজর ৭০-৯০, বরবটি ৮০-১০০, করলা ৭০-৮০, পটল ৭৫-৯০, ঢেঁড়স ৭০-৮০, শসা ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৬০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি টমেটো ১০০-১২০ টাকা।

বিশেষজ্ঞরা বলছে, প্রতিদিনের ভোগ্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের ওপর দারুণ প্রভাব ফেলে। ইকোনমিক পলিসির বড় কাজ হলো অর্থকে নিয়ন্ত্রণ করা, যাতে গোটা অর্থনীতি স্থিতিশীল অবস্থায় থাকে। অর্থের অবমূল্যায়ন মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে যেমন অর্থনীতির জন্য ভালো নয়, তেমনি একেবারে অবমূল্যায়ন না থাকাও কাম্য নয়। কেননা তখন সরকারের ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। অতিরিক্ত অবমূল্যায়ন মানুষের জীবনযাত্রার ওপর প্রভাব ফেলে।

সাধারণ ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। অনেকে আবার মুনাফা বেশি পাওয়ার আশায় সিন্ডিকেট করে পণ্যদ্রব্যগুলো মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের তদারকি করা দরকার বলে জানান অনেকে।

এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রথম দফায় বণ্যার কারণে সবজির দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। এখন আবার বণ্যার পানি ও টানা বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কমে আসায় দাম বাড়ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status