মত-মতান্তর
ধর্ষকের আত্মকথা
শামীমুল হক
১০ অক্টোবর ২০২০, শনিবার, ৯:৫০ পূর্বাহ্ন
ফাইল ফটো
আমি সন্ত্রাসী হতে চাই। আমি খুনি হতে চাই। আমি চাই অস্ত্র নিয়ে ঘুরতে। আমি চাই বাহিনী প্রধান হতে। আমি চাই চাঁদাবাজ হতে। আমি চাই সবার গুরু হতে। ওস্তাদ হতে। বড় ভাই হতে। আমি চাই এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে নিতে। আমি চাই সবাই আমাকে ভয়ে সালাম দিক। আমি চাই আমার ভয়ে সবাই রাস্তা ছেড়ে দিক। আমি চাই এলকার সবাই আমাকে এক নামে চিনুক। কারণ আমি চাই লোকজন আমাকে ভয় পাক। ভয়ে জবুথবু হয়ে যাক। এরপরই মোক্ষম চালটি চালবো। আমাকে দেখে যখন সবাই ভয়ে কাঁপবে- তখনই আমি ধর্ষক হয়ে উঠবো। অমুকের বউ। অমুকের মেয়ে। সকল সুন্দরীর দরবারে হাজির হবো। প্রথমে সহজ-সরলভাবে বলব- আমি তোমাকে কাছে চাই। একান্তে চাই। কথা না শুনলে ধর্ষণ করবো। শুধু তাই নয়, আমার কাছের কিছু চেলা-চামুন্ডাকেও বলবো তোরাও ধর্ষণ কর। ওরা ধর্ষণ করবে।
এভাবে চলতে থাকবে। কেউ আমার ডরে ভয়ে কোনো কথা বলবে না। এ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে এলাকায় ধর্ষণের বন্যা বইয়ে দেবো। শিশু থেকে শত বছরের বৃদ্ধা সবাইকে আমার খোরাক বানাব। রাস্তার পাগলি, প্রতিবন্ধীও আমার লালসার শিকার করব। এভাবেই আমাকে দেখে সবাই আড় চোখে তাকাবে। মনে মনে ধর্ষক, খুনি, সন্ত্রাসী বলবে। সামনে বলার সাহস থাকবে না কারো। এসব দেখে আমি তৃপ্তির হাসি হাসবো। আর এসবই করবো আমার নেতার জোরে। প্রথম প্রথম নেতার কাছে কিছু নালিশ যাবে। নেতা এগুলোকে পাত্তা দেবেন না। আমার কানে যখন যাবে অমুকে নেতাকে আমার বিরুদ্ধে বলেছে তখনই তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বো। অমুককে শায়েস্তা করতে প্রথমে রাস্তায় অপমান করবো। এরপর তার ছেলেকে পেটাব। এরপর তার মেয়েকে ধর্ষণ করবো। ওই ব্যাটা একেবারে খামোশ হয়ে যাবে। জীবনে আর কোনোদিন আমার বিরুদ্ধে মুখ খুলবে না। আমি কি না পারি? এবার বিধবার দিকে দিকে নজর পড়েছে। তাকেও ধর্ষণ করব। শুধু তাই নয়, মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করবো। এবার আমার বাহাদুরি সমাজকে দেখাতে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেবো।
এরপর আমি হয়ে উঠবো আরো ভয়ঙ্কর। পুলিশ প্রশাসনতো নেতার কাছের মানুষ। প্রথম প্রথম নেতা আমার দু’একটি ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছেন। এখন সেই পুলিশ আমার নাম শুনলেই একশ’ হাত দূরে থাকে। বাহ্ আমিই এই এলাকার জমিদার। সবাই আমার প্রজা। সবাই আমাকে খাজনা দিতে লাইন ধরে। নতুন বাড়ি-ঘর করবে? আগে আমাকে খাজনা দিতে হবে। মেয়ে বিয়ে দিতে হবে? তাতেও খাজনা এসে যায়। কেউ জমি কিনেছে তখনও খাজনা জমা পড়ে আমার তহবিলে। আর যায় কোথায়?
এভাবে আমি কখন যে টাকার মালিক হয়ে গেছি খেয়ালই করিনি। একা একা ভাবী আমি কি ছিলাম? টোকাই। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতাম। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করতাম। আর আজ আমি আকাশ ছুঁয়েছি। আবার ভাবী আমিতো একসময় সিএনজিচালক ছিলাম। সারাদিন সিএনজি চালাতাম। কঠোর পরিশ্রম করতাম। নেতা আমাকে সোনার খনি হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন। আজ আমি নেতার বিশ্বস্ত। নেতাও আমাকে ছাড়া চলতে পারেন না। এই নেতার কারণেই আজকের আমি। সমাজের মানুষ এই যে আমাকে ভয় পায়, আমাকে দেখলে রাস্তা ছেড়ে দেয় এটা কি একদিনে হয়েছে? না, এর জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।
আজ আমাকে নিয়ে গোটা দেশে নিন্দার ঝড় বইছে। জেলায় জেলায় আন্দোলন হচ্ছে। রাজধানী কাঁপছে স্লোগানে স্লোগানে। শাহবাগ চত্বর আবারও জেগে উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাকে নিয়ে উত্তাল করে তুলছে ক্যাম্পাস। ওরা কত বোকা! ওরা জানে না এসব করে আমাকে দমাতে পারবে না। আমি চলবো আমার গতিতে। কারণ আমারতো নেতা আছে।
এভাবে চলতে থাকবে। কেউ আমার ডরে ভয়ে কোনো কথা বলবে না। এ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে এলাকায় ধর্ষণের বন্যা বইয়ে দেবো। শিশু থেকে শত বছরের বৃদ্ধা সবাইকে আমার খোরাক বানাব। রাস্তার পাগলি, প্রতিবন্ধীও আমার লালসার শিকার করব। এভাবেই আমাকে দেখে সবাই আড় চোখে তাকাবে। মনে মনে ধর্ষক, খুনি, সন্ত্রাসী বলবে। সামনে বলার সাহস থাকবে না কারো। এসব দেখে আমি তৃপ্তির হাসি হাসবো। আর এসবই করবো আমার নেতার জোরে। প্রথম প্রথম নেতার কাছে কিছু নালিশ যাবে। নেতা এগুলোকে পাত্তা দেবেন না। আমার কানে যখন যাবে অমুকে নেতাকে আমার বিরুদ্ধে বলেছে তখনই তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বো। অমুককে শায়েস্তা করতে প্রথমে রাস্তায় অপমান করবো। এরপর তার ছেলেকে পেটাব। এরপর তার মেয়েকে ধর্ষণ করবো। ওই ব্যাটা একেবারে খামোশ হয়ে যাবে। জীবনে আর কোনোদিন আমার বিরুদ্ধে মুখ খুলবে না। আমি কি না পারি? এবার বিধবার দিকে দিকে নজর পড়েছে। তাকেও ধর্ষণ করব। শুধু তাই নয়, মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করবো। এবার আমার বাহাদুরি সমাজকে দেখাতে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেবো।
এরপর আমি হয়ে উঠবো আরো ভয়ঙ্কর। পুলিশ প্রশাসনতো নেতার কাছের মানুষ। প্রথম প্রথম নেতা আমার দু’একটি ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছেন। এখন সেই পুলিশ আমার নাম শুনলেই একশ’ হাত দূরে থাকে। বাহ্ আমিই এই এলাকার জমিদার। সবাই আমার প্রজা। সবাই আমাকে খাজনা দিতে লাইন ধরে। নতুন বাড়ি-ঘর করবে? আগে আমাকে খাজনা দিতে হবে। মেয়ে বিয়ে দিতে হবে? তাতেও খাজনা এসে যায়। কেউ জমি কিনেছে তখনও খাজনা জমা পড়ে আমার তহবিলে। আর যায় কোথায়?
এভাবে আমি কখন যে টাকার মালিক হয়ে গেছি খেয়ালই করিনি। একা একা ভাবী আমি কি ছিলাম? টোকাই। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতাম। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করতাম। আর আজ আমি আকাশ ছুঁয়েছি। আবার ভাবী আমিতো একসময় সিএনজিচালক ছিলাম। সারাদিন সিএনজি চালাতাম। কঠোর পরিশ্রম করতাম। নেতা আমাকে সোনার খনি হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন। আজ আমি নেতার বিশ্বস্ত। নেতাও আমাকে ছাড়া চলতে পারেন না। এই নেতার কারণেই আজকের আমি। সমাজের মানুষ এই যে আমাকে ভয় পায়, আমাকে দেখলে রাস্তা ছেড়ে দেয় এটা কি একদিনে হয়েছে? না, এর জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।
আজ আমাকে নিয়ে গোটা দেশে নিন্দার ঝড় বইছে। জেলায় জেলায় আন্দোলন হচ্ছে। রাজধানী কাঁপছে স্লোগানে স্লোগানে। শাহবাগ চত্বর আবারও জেগে উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাকে নিয়ে উত্তাল করে তুলছে ক্যাম্পাস। ওরা কত বোকা! ওরা জানে না এসব করে আমাকে দমাতে পারবে না। আমি চলবো আমার গতিতে। কারণ আমারতো নেতা আছে।