কলকাতা কথকতা
কলকাতা কথকতা
করোনার হাত ধরেই কলকাতা হাঁটছে, বাঙালির জীবনের অঙ্গ হয়ে গেল অতিমারি
জয়ন্ত চক্রবর্তী, কলকাতা
৬ অক্টোবর ২০২০, মঙ্গলবার, ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন
মুখে মাস্ক, পকেটে স্যানিটাইজার এর ছোট বোতল। বারবার হাত সানিটাইজ করা। কলকাতা শুধু নয়, এই বঙ্গভুমের বাঙালির এটাই হয়ে গেল ট্রেডমার্ক। শুধু বাঙালি বলছি বটে, গোটা ভারতইতো করোনাকে জীবনের অঙ্গ হিসেবে ধরে নিয়ে দিন কাটাচ্ছে। কলকাতায় করোনায় প্রতিদিন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, পাঁচজন.... দশজন..... আগের মত আর গেল গেল রব উঠছে না। একটি পাড়ায় আগে একজনের করোনা হলে গ্রামে গ্রামে সেই বার্তা রটে যেত ক্রমে। আজকাল কেউ জানতেও পারেনা। করোনা আবহেই দুর্গাপূজা আসছে। ছুটির দিনে ভিড় সামলাতে প্যান্টালুনস কর্মী দিশেহারা হচ্ছেন। করোনা আসবে যাবে। কিন্তু বছরের দুর্গাপুজো তো একবারই আসে। গার্মেন্টস ব্যাবসায়ীরা শাড়ি এবং ড্রেসের সঙ্গে মানানসই রঙের মাস্কও রাখছেন। হলুদ শাড়ির সঙ্গে হলুদ মাস্ক, গোলাপির সঙ্গে গোলাপি। এমনকি বিয়েতেও সোনার মাস্ক দেওয়ার রেওয়াজটি চালু হয়ে গেল। করোনা সত্যিই আজ জীবনের অঙ্গ। অফিস,কাছারি চলছে। রেস্তোরাঁ পানশালা এমনকি সিংগিং বারের দরজা খোলা। বাজারে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে দেদার, বাসে ভিড় হচ্ছে। মেট্রো চলছে, মল এ সুবেশ নর নারীর ভিড়। পনের অক্টোবর সিনেমা হল খুলছে। অন্য বিনোদন কেন্দ্র খুলে গেছে। লোকাল ট্রেন খুললো বলে। পাড়ায় পাড়ায় চলছে না, চলবে না দাবি তুলে মিছিল বের হচ্ছে, নেতার দেহ গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে. এর থেকে স্বাভাবিক জীবন আর কি হতে পারে? অতিমারিকে জয় করেছে এই কলকাতা, এই বাংলা, এই ভারত। মৃতের সংখ্যা সারাদেশে কদিন আগেই লাখ ছাড়িয়েছে। তাতেও পরোয়া নেই। করোনার জুজুকে ঘাড়ে চাপতে দেওয়া চলবে না। এতটুকু শৈথিল্য দেখলেই সিন্দবাদের নাবিকের অবস্থা হবে। অতএব করোনা থাকুক করোনার মত, জীবন চলুক জীবনের মত। অতিমারি কবে আর জীবনকে হারাতে পেরেছে?