এক্সক্লুসিভ

লাইব্রেরি ব্যবসায়ীদের অপেক্ষা

মো. জয়নাল উদ্দীন

২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার, ৯:৪৪ পূর্বাহ্ন

তিন ভাইয়ের পরিবারসহ মা-বাবা ঢাকায় থাকতেন। করোনা সংকটে বেচাকেনা না থাকায় লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাড়ি চলে যান তারা। এখন ধারদেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে। বিদ্যুতের বিলও দিতে কষ্ট হচ্ছে। এ অবস্থা ঢাকার নীলক্ষেত ‘মায়ের দোয়া’ লাইব্রেরির মালিক মো. সিরাজের পরিবারের।
করোনার থাবায় সিরাজের মতো অনেক বই ব্যবসায়ী স্বাভাবিক জীবনযাপন থেকে ছিটকে পড়েছেন। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। বইয়ের দোকান খোলার অনুমতি পেলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলায় এই অবস্থা বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

নীলক্ষেত ও বাংলাবাজারের বইয়ের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ দোকানে বেচাকেনা নেই। পুঁজি কমে যাওয়ায় অনেক দোকান বন্ধ হওয়ার উপক্রম। অনেক দোকানে তালা ঝুলছে। বইয়ের দোকানের পাশে কয়েকটি মুদির দোকান খোলা থাকলেও বেচাকেনা না থাকায় অনেকে ব্যবসা পরিবর্তন করেছে। ফুটপাথে পুরনো বইয়ের দোকানের সংখ্যা কমে গেছে। বারবার পাঠ্যক্রম পরিবর্তন হওয়ায় এ ব্যবসায় মন্দাভাব আগে থেকেই লেগে ছিল। আর এখন মোবাইল ফোনে নানারকম বই পড়ার অ্যাপস লাইব্রেরি ব্যবসায় ধাক্কা দিয়েছে। নীলক্ষেতের কাশবন বুক সাপ্লাইয়ের মালিক রিপন জানান, দিনে হাজার দুই বেচা হয়। লাভ হবে দেড়-দুইশ’। এগুলো দিয়ে আমি চলবো নাকি পরিবার চালাবো। পরিবারকে গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছি। ধারদেনা করে চলছি। দোকান ভাড়ার জন্য অগ্রিম দিয়েছিলাম সেখান থেকে ভাড়া দিচ্ছি। আর এভাবে চলতে থাকলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।

বাংলাবাজারের মহানগর পুস্তাকালয়ের মালিক মুশফিকুর রহমান বলেন, ১৫ বছর ধরে বই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আগে ১৫টার উপরে অর্ডার পেতাম এখন মাসে দুই তিনটাও পাই না। সমস্যাটা দুই-এক মাস হলে ব্যবসাটা ঠিকিয়ে রাখতে পারতাম। তারপরও ব্যবসায়ীরা অপেক্ষা করছেন কখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে। আবার বই কিনতে দলবেঁধে আসবেন শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকরা।

বাংলাবাজারের দুই-তিনজন ব্যবসায়ী  জানান, করোনার সময় দোকান ভাড়া কমানো আর অন্যান্য সমস্যা সমাধানে তেমন সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। তবে নীলক্ষেতের ইসলামিয়া মার্কেট, শাহজালাল মার্কেট ও বাবুপুরা মার্কেটে ৩০ শতাংশ দোকান ভাড়া মওকুফ করেছেন দোকান মালিকরা।
 
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন বলেন, ঢাকাতে ১৮শ’ ও পুরো বাংলাদেশে ২৬ হাজারের মতো বই ব্যবসায়ী রয়েছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দুঃসময়ের মধ্যে সবাই জীবনযাপন করছেন। সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছি। আশা করি আমরা সহযোগিতা পাবো।




 
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status