শেষের পাতা

‘ভগবানের কাছে নালিশ দিলাম’

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে

২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, রবিবার, ৯:৩৯ পূর্বাহ্ন

এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদিত হয়নি সিলেট আওয়ামী লীগের। অনুমোদনের জন্য কমিটি জমা দিয়েছেন নেতারা। এরই মধ্যে ‘হাওয়ায়’ ভাসছে নানা নাম। বাদ পড়ছেন অনেকেই। আবার নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন কেউ কেউ। যারা নতুন করে দু’টি কমিটিতে সংযুক্ত হচ্ছেন তারা নীরব। দীর্ঘদিন রাজনীতি করে যারা বাদ পড়ছেন তারা সরব। এ কারণে ক্ষোভ বিরাজ করছে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগে। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন তপন মিত্র। তিনি ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক। এক নামেই রয়েছে তপন মিত্রের পরিচিতি। ৫ই ডিসেম্বর জেলা ও মহানগর সম্মেলনের আগে সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য লবিং করেছিলেন তিনি। কিন্তু ওই তপন মিত্র এবার বাদ পড়লেন মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি থেকে। প্রস্তাবিত কমিটিতে তাকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়নি। তবে উপদেষ্টা পরিষদে অন্তর্ভুক্তির খবর জানা গেছে। কমিটি থেকে বাদ পড়ার খবরে দুঃখ পেয়েছেন তপন মিত্র। নিজের ফেসবুক আইডিতে গতকাল স্ট্যাটাস দিয়ে মনের ক্ষোভ ঝেড়েছেন। স্ট্যাটাসে তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে উল্লেখ করেন ‘আপনি তথা সিলেটবাসীর পাশে আছি, পাশেই থাকবো, নাইবা পেলাম পদবি। আমার প্রাণের সংগঠনের সভানেত্রীর কাছে আত্মকষ্টের কাহিনী জানাতে চাই। ভগবানের কাছে নালিশ দিলাম।’ নিজের ফেসবুক আইডিতে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তপন মিত্র উল্লেখ করেন ‘আমি তপন মিত্র, পিতা মৃত হরেন্দ্র মিত্র, মীরাবাজার সিলেটের স্থায়ী বাসিন্দা। রাজনৈতিকভাবে নতুন করে পরিচয় দিবো, আপনারা আমাকে চিনেন। তারপরও বলে রাখা ভালো সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ ও প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মহানগর আওয়ামী লীগ। সাবেক প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক মহানগর যুবলীগ। যদিও আমি সিলেটের রাজনৈতিক ময়দানে পরিচিত মুখ। বিগত দিনে প্রতিটা আন্দোলনে আমার ভূমিকা পত্রপত্রিকায় দেখেছেন তারপরও কিছু কষ্টের কথা শেয়ার করতে গেলাম।’ তপন মিত্র উল্লেখ করেন ‘আমি একজন সহায় সম্পত্তিহীন সরল প্রকৃতির লোক। রাজনৈতিকভাবে কলঙ্কহীন, অনৈতিক কোনো কাজে অদ্যাবধি সম্পৃক্ত নই। আগামীতেও লুটেরাদের দলে নিজেকে জড়ানোর কোনো ইচ্ছে নেই। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় দীর্ঘ ক্লিন রাজনীতির ব্যক্তি হয়েও কেন্দ্রে আমার নামটি জমা পড়েনি।’ স্ট্যাটাসে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি উল্লেখ করেন ‘আমার অপরাধ মহানগর সাধারণ সম্পাদকের পদে অংশগ্রহণ করতে চেয়েছিলাম? পাইনি, ক্ষতি কি! আমিতো বিদ্রোহ ঘোষণা করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করিনি। আমি সভানেত্রীর নৌকাপাগল এক কর্মী।  নৌকার বিজয়ে নিরলস কাজ করে যাই। আমি কি প্রতিহিংসার শিকার? আমি সিলেটে টেন্ডার বাণিজ্যে লিপ্ত ছিলাম না। খাল বিল নদী নালার ইজারা নেইনি। অবৈধভাবে প্রভাব খাটিয়ে পেয়ে দিতেও সহায়তা করিনি। তবে কেন এতো অবিচার।’ এদিকে তপন মিত্রের এই স্ট্যাটাসে প্রস্তাবিত কমিটি নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ ঝেড়েছেন। সিলেটের সামাদ আজাদ গ্রুপের নেতা ছিলেন তপন মিত্র। এক সময় জাতীয় ছাত্রলীগ করেছেন। সামাদ আজাদ বলয়ের ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি পরিচিতি পান। এরপর সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ সম্পর্কের কারণে অনেকের কাছে অপ্রিয় ছিলেন তিনি। কামরান নেই। এই অবস্থায় কামরান বলয়ের নেতাদের এবার মহানগর কমিটিতে ঠাঁই হচ্ছে না। একে একে বাদ পড়ছেন নেতারা। এ নিয়েও আপসোস তপন মিত্রের। জানালেন- ‘আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও সাবেক মেয়র কামরানের বলয়ের নেতারা যেনো আওয়ামী লীগে ‘অচ্ছুত’ হয়ে গেছেন। প্রস্তাবিত কমিটিতে রাখা হয়নি তাদের। যাদের রাখা হয়েছে তাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status