বাংলারজমিন

চোখের পলকেই তিস্তায় বিলীন শ’ শ’ বাড়িঘর

সাওরাত হোসেন সোহেল, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) থেকে

১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, শুক্রবার, ৮:১২ পূর্বাহ্ন

ভাঙছে তিস্তা কাঁদছে মানুষ। ভাঙনের তীব্রতায় অসহায় মানুষের কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে তিস্তার পাড়। কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে আকাশ-বাতাসও। চোখের পলকেই হারিয়ে যাচ্ছে শত শত মানুষের ঘরবাড়ি। সাজানো গোছানো সংসার হারিয়ে অনেকে হয়েছেন বাকরুদ্ধ। বাড়িঘর সরানোর সুযোগও পাচ্ছেন না অনেকে। বরাদ্দ না থাকার অজুহাতে হাত পা গুটিয়ে বসে দিন পার করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ভাঙন অব্যাহত থাকলে পুরো কাশিমবাজারসহ চিলমারী ও উলিপুরের বেশকিছু এলাকাসহ বিভিন্ন স্থাপনা, বাঁধ, সড়ক নদীতে বিলীন হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে গত কয়েকদিন থেকে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে তিস্তা। তিস্তার থাবায় নিমিষেই বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, সড়কসহ বিভিন্ন স্থপনা। ঘরবাড়ি হারিয়ে দিশাহারা সদ্য নদী ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো। কয়েকদিন থেকে শত শত পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করলেও মেলেনি সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনো সহযোগিতা। চোখের সামনে নিমিষেই সাজানো ঘরসংসার হারিয়ে অনেকেই এখন বাকরুদ্ধ। ভাঙনের শিকার বেশিরভাগ পরিবার শেষ সম্বল আশ্রয়টুকু হারিয়ে এখন দিশাহারা। নেই থাকার কিংবা যাওয়ার কোনো স্থান। তাই নদীপাড়েই খোলা আকাশের নিচে পরিবার-পরিজন নিয়ে করছে মানবেতর জীবনযাপন। সোমবার চিলমারী উপজেলার সীমান্তবর্তী সুন্দরগঞ্জ ও উলিপুর উপজেলার কাশিমবাজার এলাকায় সরজমিনে দেখা যায় ভাঙনের তাণ্ডবলীলা। ভাঙছে তো ভাঙছে- নিমিষেই গিলে খাচ্ছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ সাজানো সংসার। ভাঙনের শিকার দেলদার, শহিদ, আয়শাসহ এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েকদিনে কয়েকটি গ্রামের শত শত পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। ভাঙনে বিলীন হয়েছে বাঁধ ও পাকা সড়ক। বেশকিছু এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভাঙনের তাণ্ডবলীলা চললেও ভাঙন প্রতিরোধে মাঠে দেখা মেলেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড কিংবা কোনো দপ্তরকে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি দাবি করে এলাকাবাসী জানান, পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন শুরু হলেও তীব্রতা ছিল না কিন্তু বিষয়টি জানলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড এগিয়ে না আশায় ধীরে ধীরে তিস্তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। তিস্তা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করায় নিমিষেই গিলে খাচ্ছে একের পর এক ঘরবাড়ি, গ্রাম বিলীন হচ্ছে। এলাকাবাসী আরো জানান, সময়মতো পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে শত শত পরিবারকে হারাতে হতো তাদের আশ্রয়ের স্থানটুকু। ভাঙনের তীব্রতার কথা স্বীকার করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রাম নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, কিছু জিও ব্যাগ ফেলানো হয়েছে, চাহিদা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো জানান, যেহেতু সড়কের কাজ হচ্ছে এবং সড়কটিও ভাঙনের মুখে তাই সড়ক ও জনপথ বিভাগের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য গাইবান্ধা-১ শামীম হায়দার পাটোয়ারীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে এবং পানি শুকিয়ে গেলে নতুন করে বাঁধ দেয়া হবে। তিনি আরো জানান ক্ষতিগ্রস্ত সব পরিবারকে দ্রুত সহায়তা দেয়া হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status