এক্সক্লুসিভ

আগস্টে দেশের পুঁজিবাজারের পারফরমেন্স ছিল অভাবনীয়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, শনিবার, ৮:০৫ পূর্বাহ্ন

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। করোনাজনিত সাধারণ ছুটি শেষে বাজারে লেনদেন চালু হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে বাজার চরম মন্দাবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে থাকে। বিশেষ করে জুলাই মাস থেকে বাজারে নতুন গতি সঞ্চার হয়। আগস্ট মাসে সেটি হয় আরো সুসংহত। আগস্টে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের পারফরমেন্স ছিল অভাবনীয়। আলোচিত সময়ে এই বাজারের রিটার্ন ছিল ডেভেলপ্‌ড মার্কেট, ফ্রন্টিয়ার মার্কেট ও এমার্জিং মার্কেট সব পুঁজিবাজারের চেয়ে বেশি। দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্রোকারহাউজ ব্র্যাক-ইপিএল স্টক ব্রোকারেজের এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে। নিজস্ব তথ্য-উপাত্ত ও ব্লুমবার্গ ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
উল্লেখ্য, নানা ক্রাইটেরিয়ার ভিত্তিতে বিশ্বপুঁজিবাজারকে ডেভেলপ্‌ড মার্কেট, ফ্রন্টিয়ার মার্কেট ও এমার্জিং মার্কেট- এই তিন ভাগে ভাগ করা হয়। সবচেয়ে পরিণত বাজারগুলোকে ডেভেলপ্‌ড মার্কেট বলা হয়। আর সবচেয়ে কম বিকশিত বাজারকে বলা হয় ফ্রন্টিয়ার মার্কেট। ডেভেলপ্‌ড ও ফ্রন্টিয়ার মার্কেটের মাঝামাঝিতে অবস্থানরত বাজারগুলোকে চিহ্নিত করা হয় এমার্জিং মার্কেট হিসেবে। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের অবস্থান ফ্রন্টিয়ার মার্কেট ক্যাটাগরিতে। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ইউরোপের বেশির ভাগ দেশের বাজারকে বলা হয় ডেভেলপ্‌ড মার্কেট। ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশ আছে এমার্জিং মার্কেটের তালিকায়।
প্রতিবেদন অনুসারে, গত আগস্ট মাসে বাংলাদেশের বাজারে রিটার্ন ছিল ১৫.৮ শতাংশ, যা সকল সেগমেন্টেই সবচেয়ে বেশি। এই সময়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রিটার্ন ছিল ভিয়েতনামে (১০.৪০%); তৃতীয় সর্বোচ্চ রোমানিয়ার বাজারে (৭.৪%)। এই ৩টি বাজারই ফ্রন্টিয়ার মার্কেট ক্যাটাগরিভুক্ত। ডেভেলপ্‌ড মার্কেটের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ছিল সবচেয়ে বেশি রিটার্ন, যার হার ৭.২ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬.৬ শতাংশ ছিল জাপানের বাজারে।
অন্যদিনে এমার্জিং মার্কেটগুলোর মধ্যে মিশর ও কম্বোডিয়া ৭.২ শতাংশ রিটার্ন নিয়ে ছিল সবার উপরে। রিটার্নের দিক থেকে পরের দু’টি অবস্থানে ছিল যথাক্রমে পেরু (৬.৫%) ও কাতার (৬.২%)।
রিপোর্টে বলা হয়, বেশকিছু কারণে আগস্ট মাসে বাংলাদেশের বাজার অসাধারণ পারফরম করেছে। এর মধ্যে আছে- করোনাভাইরাস মোকাবিলাজনিত সাধারণ ছুটি শেষে স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়া, রপ্তানি আয়ে ইউটার্ন, রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধি এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি’র নতুন কমিশনের নানামুখী উদ্যোগ।
প্রতিবেদনে বিএসইসি’র নতুন কমিশনের বেশ কিছু উদ্যোগকে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ইস্যুতে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে নতুন কমিশনের বৈঠক ও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ, সিকিউরিটিজ আইনের পরিপালনে কঠোর অবস্থান, আইনলঙ্ঘনকারী কোম্পানি ও ব্রোকারহাউজের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, সন্দেজনক আইপিও আবেদন বাতিল করা, নতুন প্রোডাক্ট চালুর উদ্যোগ, বাজারে স্বচ্ছতা বাড়াতে রিপোর্টিংকে গুরুত্ব দেয়া এবং ডিজিটাল মাধ্যমে সহজে রিপোর্ট জমা দেয়ার ব্যবস্থা। এসব উদ্যোগের ফলে কমিশন ও বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীসহ স্টেকহোল্ডারদের আস্থা বেড়েছে। অন্যদিকে, বিএসইসি’র উদ্যোগের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া বিভিন্ন ব্যবস্থায় বাজারে তারল্য বেড়েছে। আর এসব বিষয়ের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাজারে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আগস্ট মাসের পারফরমেন্সে আত্মতুষ্টিতে না ভুগে বাজারের গতি ও স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে সব সময় সচেষ্ট থাকতে হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status