ভারত

মানবজমিন অনুসন্ধান

পুলিশের মুহূর্তের ভুলেই বেঙ্গালুরু রণক্ষেত্র, তিনজনের মৃত্যু

বিশেষ সংবাদদাতা, কলকাতা

১৩ আগস্ট ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৯:২৯ পূর্বাহ্ন

পুলিশের ছোট একটি ভুল। আর তাতেই দাবানল জ্বলে উঠলো বেঙ্গালুরুর বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। গাড়ি এবং বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা, হিংসাত্মক কার্যকলাপ, পুলিশের গুলিতে তিনজনের মৃত্যু, আহত পঁয়ত্রিশ, সত্তর পুলিশ কর্মী জখম। এ সবই এড়ানো যেত যদি কে জি হাল্লির পুলিশ থানা একটু সক্রিয় হত। মানবজমিনের অনুসন্ধানে  উঠে এসেছে সেই চাঞ্চল্যকর তথ্য।

কি হয়েছিল বেঙ্গালুরুতে? কংগ্রেস বিধায়ক অখণ্ড শ্রীনিবাস মূর্তির ভাইপো নবীন বেশ কীর্তিমান। এলাকার মানুষদের প্রতারণা, জালিয়াতি, দুর্নীতির ব্যাপারে তার নামডাক আছে। সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে সক্রিয় নবীন ক’দিন আগে রামমন্দির শিলান্যাস নিয়ে একটি পোস্ট দেয়। ক’দিন পরেই সংখ্যালঘু মানুষদের আবেগকে আহত করে নবীন একটি সাম্প্রদায়িক পোস্ট করে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ এই পোস্টে অত্যান্ত ক্ষিপ্ত হন। তাও তাঁরা আইন নিজের হাতে নিতে চাননি। মানবজমিন জানতে পেরেছে এই বিতর্কিত পোস্টটি প্রকাশ হওয়ার পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা কে জি হাল্লি থানার অদূরে একটি বাড়িতে বসে এক বৈঠকে নবীন এর বিরুদ্ধে এফ আই আর করার সিদ্ধান্ত নেন। এই সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হওয়ার পর একটি দল কেজি হাল্লি থানায় যায় অভিযোগ দায়ের করতে। অন্য একটি দল যায় অখণ্ড শ্রীনিবাসমূর্তির বাড়িতে প্রতিবাদ জানাতে। কেজি হাল্লি পুলিশ স্টেশন নবীনের বিরুদ্ধে এফ আই আর গ্রহণ করলেই সমস্যা মিটে যেত। কিন্তু তারা এফ আই আর নিতে অস্বীকার করে। সঙ্গে সঙ্গে সেই বার্তা পৌঁছে যায় অখণ্ড শ্রীনিবাসমূর্তির বাড়িতে যাওয়া দলটির কাছে। মুহূর্তের মধ্যে ভাঙচুর শুরু হয় অখণ্ড শ্রীমূর্তির বাড়িতে। অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কেজি হাল্লি, ডিজি হাল্লি, ভারতনগর, পুলোকেশনগর, বারানাসদী এলাকা। পুলিশ গুলি চালায়। এই ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হয়। পুলিশ সেই রাতেই গ্রেফতার করে নবীনকে। গ্রেফতার করা হয় সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের নেতা মুস্সামীল হাসানকে। পুলিশের একটি ভুলে এতবড়ো ঘটনা ঘটে গেল। নবীন জানিয়েছে, তার ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক করে অন্য কেউ এই সাম্প্রদায়িক পোস্ট করেছে। পুলিশ মানেনি সে কথা । পুলিশের ত্রুটি সম্পর্কে কেজি হাল্লি পুলিশ থানা বলছে, সেদিন এফ আই আর নিতে তারা অস্বীকার করেনি। শুধু বলেছিল, সিনিয়র অফিসাররা আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে। মানবজমিনের প্রশ্ন, এফ আই আর নিতে সিনিয়র অফিসার লাগে কি? নাকি অভিযুক্ত প্রভাবশালী বিধায়কের ভাইপো বলেই? একমাত্র সঠিক তদন্তই পারে সত্য উদ্ঘাটন করতে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status