বাংলারজমিন

সুনামগঞ্জে বন্যায় ক্ষতি ৫শ’ কোটি টাকা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

১৩ আগস্ট ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৮:৩৯ পূর্বাহ্ন

সুনামগঞ্জে ৩ দফা বন্যায় ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫শ’ কোটি টাকার। এর মধ্যে সড়ক, মৎস্য খামার, ফসলি জমি, গৃহপালিত পশু আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। দিন দিন বাড়ছে ক্ষতির পরিমাণ। ব্যক্তি মালাকানাধীন বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও সড়কের ক্ষতি হিসাবে আনলে ক্ষয়ক্ষতি হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। সবকিছু হারিয়ে পথে বসেছেন খামারিরা। দরিদ্র মানুষের কষ্টের সীমা নেই। মৎস্যচাষি ও খামারিরা জানান, করোনার পাশাপাশি এবারের ৩ দফা বন্যায় পথে বসিয়ে দিয়েছে তাদের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৮শে জুন থেকে ২২শে জুলাই এই ৩ সপ্তাহের মধ্যে ৩ বার বন্যায় আক্রান্ত হয় জেলার ১১টি উপজেলা। হাওর জনপদে বন্যায় বিপর্যস্ত বাড়িঘর ঠিক করতে হিমশিম খাচ্ছেন কাজকর্ম হারিয়ে বেকার হয়ে পড়া বানভাসি লাখো পরিবার। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেকের ঘুরে দাঁড়ানোর মতো সামর্থ্য নেই। তারা সরকারি ঋণ সহায়তার দিকে তাকিয়ে আছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, তিন দফা বন্যায় জেলার ১১ উপজেলায় ৮ হাজার ৬৬৫টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৪৮৪ মাছের খামারি। এসব খামার থেকে দুই হাজার ৯শ’ ৮৪ টন মাছ এবং ৪ লাখ ৬৫ হাজার পোনা ভেসে গেছে। অবকাঠামো অর্থাৎ পুকুরের পাড়ও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে এই খাতে ক্ষতি হয়েছে ৫২ কোটি ৯২ লাখ ৮৮ হাজার টাকার। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান খান জানান, তিন দফা বন্যায় সব মিলিয়ে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বললেন, জেলার ৩৮১ প্রাথমিক বিদ্যালয় আংশিক এবং শাল্লা ও জগন্নাথপুর উপজেলায় দু’টি করে চারটি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকার অংকে সাড়ে তিন কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সুনামগঞ্জ এলজিইডি’র সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী হরজিৎ সরকার জানালেন, বন্যায় ৯০০ কিলোমিটার কাঁচা পাকা সড়ক ভেঙে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জানালেন, ৩০ কিলোমিটার সড়ক ভেঙে তাদের ৪০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সমপ্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক সফর উদ্দিন জানান, ৮২৬ হেক্টর আউশ এবং ৫৯ হেক্টর আমন বীজতলা এবং
৫৬ হেক্টর সবজীক্ষেত ডুবে ক্ষতি হয়েছে ৯ কোটি টাকার। মৎস্য চাষিরা জানান, এ বছর করোনাকালীন সময় এমনটিতে ক্ষতির মুখে রয়েছেন জেলার খামারিরা। এ অবস্থায় ৩ দফা বন্যায় সবকিছুই হারিয়েছেন তারা। জামালগঞ্জ সদরের এক হাঁস খামারি বলেন, ‘আমার খামারে ৬শ’ হাঁস ছিল। বন্যার সময় খামারে পানি উঠায় বেশির ভাগ হাঁস বিক্রি করেছি কম দামে। খামারিরা জানান, সরকারি প্রণোদনা বা ঋণ পেলে আবারও ঘুরে দাঁড়াবেন তারা। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শরিফুল ইসলাম বললেন, সড়ক অবকাঠামো, মৎস্য, পশু সম্পদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status