খেলা
এ কেমন দায়িত্বহীনতা বাফুফের!
স্পোর্টস রিপোর্টার
৯ আগস্ট ২০২০, রবিবার, ৮:৩৫ পূর্বাহ্ন
তিনদিনে জাতীয় দলের ২৪ ফুটবলারের মধ্যে ১৮ জনের করোনা শনাক্ত। বিস্মিত না হয়ে উপায় আছে? অবাক কোচ জেমি ডেও। বর্তমানে ইংল্যান্ডে থাকা বাংলাদেশ দলের বৃটিশ কোচ বলেছেন, এটা কী করে সম্ভব! এখন প্রশ্ন উঠতে পারে আদৌ এই ফুটবলারদের কোনো অভিভাবক আছে কি?
কাগজে-কলমে অবশ্যই আছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনেরই (বাফুফে) তো আগলে রাখার কথা ছিল তাদের। কিন্তু এই করোনাকালে কী করেছে বাফুফে? উল্টো ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের ক্যাম্প শুরু করতে গিয়ে আরও একবার বেরিয়ে এসেছে বাফুফে কর্তাদের উদাসীনতার নমুনা।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ সামনে রেখে প্রাথমিকভাবে ডাক পাওয়া ৩৬ জন ফুটবলার নিয়ে ৭ই আগস্ট শুরু হওয়ার কথা ছিল অনুশীলন ক্যাম্প। গাজীপুরের ছায়া সুনিবিড় সারাহ রিসোর্টও ছিল প্রস্তুত। তার আগে ফুটবলারদের বাধ্যতামূলক করোনাভাইরাস টেস্ট করতে গিয়েই জানা গেল, গত চার মাস ফুটবলাররা কিভাবে কোথায় দিন কাটিয়েছেন কিছুই হয়তো জানা ছিল না বাফুফের। এই সুযোগে বিভিন্ন জেলায় ‘খ্যাপ’ খেলে বেড়িয়েছেন ফুটবলাররা। আবাহনীর ফুটবলার মামুনুল ইসলামের এলাকায় প্রীতি ফুটবল ম্যাচ খেলার খবর জানা গেছে। বসুন্ধরা কিংসের জিকো (আনিসুর), ইব্রাহিম কক্সবাজারে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ খেলেছে। দুজন নাকি দুই দলের অধিনায়কত্বও করেছে। এতে বোঝা যায়, করোনা মহামারিতে যথেষ্ট সতর্ক হয়ে চলেনি ফুটবলাররা।
এ অবস্থায় সিদ্ধান্ত হয়- ফুটবলাররা প্রথমে নিজ নিজ উদ্যোগে কোভিড টেস্ট করাবেন। এরপর তাদের অফিসিয়ালি টেস্ট করাবে বাফুফে। খেলোয়াড়রা প্রথমে নিজ উদ্যোগে নিজেদের সুবিধা মতো স্থানে টেস্ট করিয়েছেন। যেখানে ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ ছাড়া সবারই কোভিড-১৯ রিপোর্ট আসে নেগেটিভ। এরপর ৫ই আগস্ট থেকে বাফুফে নিজেদের উদ্যোগে শুরু করে বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষা। বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ধাপে ১১ জন এবং ৬ই আগস্ট দ্বিতীয় ধাপে আরও ১২ জনের করোনা পরীক্ষা হয়। দুই দিনে মোট ২৩ জনের মধ্যে ১১ জন করোনা পজিটিভ হন। বাকিদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় গাজীপুরের সারাহ রিসোর্টে। খেলোয়াড়রা ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার একদিন পরই আসে চমকে যাওয়ার মতো খবর! ১১ জন নয়, করোনায় আক্রান্ত জাতীয় দলের ১৮ জন ফুটবলার!
প্রথম ধাপে সুমন রেজা, নাজমুল ইসলাম রাসেল, ম্যাথিউস বাবলু ও বিশ্বনাথ এবং দ্বিতীয় ধাপে শহিদুল আলম সোহেল, সোহেল রানা, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, সুশান্ত ত্রিপুরা, রবিউল হাসান, আনিসুর রহমান জিকো ও টুটুল হোসেন বাদশার কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়।
নেগেটিভ সার্টিফিকেট পেয়ে ক্যাম্পে যোগ দেন- মঞ্জুরুর রহমান মানিক, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ পারভেজ, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, পাপ্পু হোসেন, রহমত মিয়া, ইয়াসিন আরাফাত, মানিক হোসেন মোল্লা, বিপলু আহমেদ, মাহবুবুর রহমান সুফিল, রকিব হোসেন, সাদউদ্দিন, রিয়াদুল হাসান রাফি ও আরিফুর রহমান। নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে ১৩ জন ফুটবলার সারাহ রিসোর্টে গিয়ে দুদিন থাকার পর ফের নতুন রিপোর্ট এসেছে। সেখানে আরও ৭ জনের করোনা পজিটিভ! তারা হলেন- মঞ্জুরুর রহমান মানিক, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ পারভেজ, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, পাপ্পু হোসেন, রহমত মিয়া, ইয়াসিন আরাফাত, মানিক হোসেন মোল্লা, বিপলু আহমেদ ও মাহবুবুর রহমান সুফিল।
এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে তাদের নেগেটিভ সার্টিফিকেট দিলেন কারা? বাফুফের হযবরল অবস্থা। হাসপাতালে করোনা টেস্ট করানো হলেও সেখানে খেলোয়াড়দের কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। ফুটবলারদের ফলাফল নেগেটিভ না পজিটিভ সেটা মুঠোফোনে কল করে কিংবা এসএমএস-এ জানিয়ে দেওয়া হয়। প্রথম ধাপে যে দুই-তিন জনের নম্বর দেওয়া ছিল তাদের হাসপাতাল থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়। বাকিদের ব্যাপারে কোনো রকম তথ্যই দেওয়া হয়নি। আর বাফুফে বিস্ময়করভাবে মনগড়া রিপোর্ট বসিয়ে খেলোয়াড়দের পাঠিয়ে দেয় গাজীপুরের ক্যাম্পে। বাফুফের একজন কোচও রয়েছেন আক্রান্তের তালিকায়। আর তিনি সুস্থ খেলোয়াড়দের সঙ্গে সারাহ রিসোর্টে ঘুরে বেড়িয়েছেন। শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এক ফুটবলারকে ফোন করে বলা হয়, আপনারা কিসের ক্যাম্প করছেন? ক্যাম্পে তো অনেক খেলোয়াড় করোনা পজিটিভ। এরমধ্যে রয়েছেন কোচও। ক্যাম্প বন্ধ করুন আপনারা! জাতীয় ফুটবলারদের জীবন নিয়ে এমন ছিনিমিনি খেলায় বাফুফের বিরুদ্ধে বইছে সমালোচনার ঝড়। প্রশ্ন উঠেছে খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্য ঝুঁকির দায় কে নেবে? এই যখন অবস্থা তখন আগামী ৮ই অক্টোবর সিলেটে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ পেছানোর সুযোগ নেই। এই ম্যাচ দিয়েই ফের বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব শুরু করবে বাংলাদেশ। এর মধ্যেও বাফুফের চেয়ার আকড়ে থাকার চেষ্টা চলছেই। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে শীর্ষ পদে থাকলেও কাজী সালাউদ্দিনরা থাকতে চাইছেন আরও ৪ বছর। ফুটবলারদের যথেষ্ট স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেওয়ার কথা মাথা থেকে সরিয়ে নির্বাচনে জিততে কাউন্সিলরদের প্রভাবিত করার চেষ্টায় ব্যস্ত ছিলেন তারা। তাদের এমন কীর্তিই আসলে বুঝিয়ে দেয় কেন পেছন পথে হাঁটছে দেশের ফুটবল! কেন ফুটবলে সাফল্য এখন শুধুই সোনার হরিণ!
কাগজে-কলমে অবশ্যই আছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনেরই (বাফুফে) তো আগলে রাখার কথা ছিল তাদের। কিন্তু এই করোনাকালে কী করেছে বাফুফে? উল্টো ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের ক্যাম্প শুরু করতে গিয়ে আরও একবার বেরিয়ে এসেছে বাফুফে কর্তাদের উদাসীনতার নমুনা।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ সামনে রেখে প্রাথমিকভাবে ডাক পাওয়া ৩৬ জন ফুটবলার নিয়ে ৭ই আগস্ট শুরু হওয়ার কথা ছিল অনুশীলন ক্যাম্প। গাজীপুরের ছায়া সুনিবিড় সারাহ রিসোর্টও ছিল প্রস্তুত। তার আগে ফুটবলারদের বাধ্যতামূলক করোনাভাইরাস টেস্ট করতে গিয়েই জানা গেল, গত চার মাস ফুটবলাররা কিভাবে কোথায় দিন কাটিয়েছেন কিছুই হয়তো জানা ছিল না বাফুফের। এই সুযোগে বিভিন্ন জেলায় ‘খ্যাপ’ খেলে বেড়িয়েছেন ফুটবলাররা। আবাহনীর ফুটবলার মামুনুল ইসলামের এলাকায় প্রীতি ফুটবল ম্যাচ খেলার খবর জানা গেছে। বসুন্ধরা কিংসের জিকো (আনিসুর), ইব্রাহিম কক্সবাজারে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ খেলেছে। দুজন নাকি দুই দলের অধিনায়কত্বও করেছে। এতে বোঝা যায়, করোনা মহামারিতে যথেষ্ট সতর্ক হয়ে চলেনি ফুটবলাররা।
এ অবস্থায় সিদ্ধান্ত হয়- ফুটবলাররা প্রথমে নিজ নিজ উদ্যোগে কোভিড টেস্ট করাবেন। এরপর তাদের অফিসিয়ালি টেস্ট করাবে বাফুফে। খেলোয়াড়রা প্রথমে নিজ উদ্যোগে নিজেদের সুবিধা মতো স্থানে টেস্ট করিয়েছেন। যেখানে ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ ছাড়া সবারই কোভিড-১৯ রিপোর্ট আসে নেগেটিভ। এরপর ৫ই আগস্ট থেকে বাফুফে নিজেদের উদ্যোগে শুরু করে বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষা। বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ধাপে ১১ জন এবং ৬ই আগস্ট দ্বিতীয় ধাপে আরও ১২ জনের করোনা পরীক্ষা হয়। দুই দিনে মোট ২৩ জনের মধ্যে ১১ জন করোনা পজিটিভ হন। বাকিদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় গাজীপুরের সারাহ রিসোর্টে। খেলোয়াড়রা ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার একদিন পরই আসে চমকে যাওয়ার মতো খবর! ১১ জন নয়, করোনায় আক্রান্ত জাতীয় দলের ১৮ জন ফুটবলার!
প্রথম ধাপে সুমন রেজা, নাজমুল ইসলাম রাসেল, ম্যাথিউস বাবলু ও বিশ্বনাথ এবং দ্বিতীয় ধাপে শহিদুল আলম সোহেল, সোহেল রানা, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, সুশান্ত ত্রিপুরা, রবিউল হাসান, আনিসুর রহমান জিকো ও টুটুল হোসেন বাদশার কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়।
নেগেটিভ সার্টিফিকেট পেয়ে ক্যাম্পে যোগ দেন- মঞ্জুরুর রহমান মানিক, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ পারভেজ, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, পাপ্পু হোসেন, রহমত মিয়া, ইয়াসিন আরাফাত, মানিক হোসেন মোল্লা, বিপলু আহমেদ, মাহবুবুর রহমান সুফিল, রকিব হোসেন, সাদউদ্দিন, রিয়াদুল হাসান রাফি ও আরিফুর রহমান। নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে ১৩ জন ফুটবলার সারাহ রিসোর্টে গিয়ে দুদিন থাকার পর ফের নতুন রিপোর্ট এসেছে। সেখানে আরও ৭ জনের করোনা পজিটিভ! তারা হলেন- মঞ্জুরুর রহমান মানিক, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ পারভেজ, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, পাপ্পু হোসেন, রহমত মিয়া, ইয়াসিন আরাফাত, মানিক হোসেন মোল্লা, বিপলু আহমেদ ও মাহবুবুর রহমান সুফিল।
এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে তাদের নেগেটিভ সার্টিফিকেট দিলেন কারা? বাফুফের হযবরল অবস্থা। হাসপাতালে করোনা টেস্ট করানো হলেও সেখানে খেলোয়াড়দের কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। ফুটবলারদের ফলাফল নেগেটিভ না পজিটিভ সেটা মুঠোফোনে কল করে কিংবা এসএমএস-এ জানিয়ে দেওয়া হয়। প্রথম ধাপে যে দুই-তিন জনের নম্বর দেওয়া ছিল তাদের হাসপাতাল থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়। বাকিদের ব্যাপারে কোনো রকম তথ্যই দেওয়া হয়নি। আর বাফুফে বিস্ময়করভাবে মনগড়া রিপোর্ট বসিয়ে খেলোয়াড়দের পাঠিয়ে দেয় গাজীপুরের ক্যাম্পে। বাফুফের একজন কোচও রয়েছেন আক্রান্তের তালিকায়। আর তিনি সুস্থ খেলোয়াড়দের সঙ্গে সারাহ রিসোর্টে ঘুরে বেড়িয়েছেন। শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এক ফুটবলারকে ফোন করে বলা হয়, আপনারা কিসের ক্যাম্প করছেন? ক্যাম্পে তো অনেক খেলোয়াড় করোনা পজিটিভ। এরমধ্যে রয়েছেন কোচও। ক্যাম্প বন্ধ করুন আপনারা! জাতীয় ফুটবলারদের জীবন নিয়ে এমন ছিনিমিনি খেলায় বাফুফের বিরুদ্ধে বইছে সমালোচনার ঝড়। প্রশ্ন উঠেছে খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্য ঝুঁকির দায় কে নেবে? এই যখন অবস্থা তখন আগামী ৮ই অক্টোবর সিলেটে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ পেছানোর সুযোগ নেই। এই ম্যাচ দিয়েই ফের বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব শুরু করবে বাংলাদেশ। এর মধ্যেও বাফুফের চেয়ার আকড়ে থাকার চেষ্টা চলছেই। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে শীর্ষ পদে থাকলেও কাজী সালাউদ্দিনরা থাকতে চাইছেন আরও ৪ বছর। ফুটবলারদের যথেষ্ট স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেওয়ার কথা মাথা থেকে সরিয়ে নির্বাচনে জিততে কাউন্সিলরদের প্রভাবিত করার চেষ্টায় ব্যস্ত ছিলেন তারা। তাদের এমন কীর্তিই আসলে বুঝিয়ে দেয় কেন পেছন পথে হাঁটছে দেশের ফুটবল! কেন ফুটবলে সাফল্য এখন শুধুই সোনার হরিণ!