প্রথম পাতা

দক্ষিণ এশিয়ায় রুগ্‌ণতার ঝুঁকিতে ৩৯ লাখ শিশু

স্টাফ রিপোর্টার

২৯ জুলাই ২০২০, বুধবার, ৯:২০ পূর্বাহ্ন

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় ৩৯ লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগতে পারে। এ বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ। সম্প্রতি মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত এক সমীক্ষার ভিত্তিতে ইউনিসেফ এই পরিসংখ্যান দিয়েছে। ল্যানসেটের প্রকাশিত প্রতিবেদন  নিয়ে ইউনিসেফ বলছে, বিশ্বজুড়ে করোনায় আর্থসামাজিক প্রভাবে ৬৭ লাখ শিশু তীব্র রুগ্‌ণতার শিকার হবে। যার অর্ধেক শিশুই হবে দক্ষিণ এশিয়ার। চরম অপুষ্টির কারণে তীব্র রুগ্‌ণতা দেখা দেবে। এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে শিশুদের সঠিক বৃদ্ধি এবং বিকাশ ঘটে না। এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়বে। করোনার আগে ২০১৯ সালে ৪ কোটি ৭০ লাখ শিশু তীব্র রুগ্‌ণতায় ভুগছে। তখন বাংলাদেশে ১৭ লাখ শিশু এর শিকার হয়েছিল বলে জানায় ইউনিসেফ। এই মহামারির সময়ে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এর সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৫ কোটি ৭০ লাখে পৌঁছাতে পারে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোরে বলেছেন, করোনা রোগ নিজে যতটা না শিশুদের ক্ষতি করছে মহামারির ফলে তার চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। তিনি বলেছেন, গৃহস্থালির দারিদ্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টিসেবা ও সরবরাহ চেইন বিঘ্নিত হয়েছে। খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে শিশুদের খাদ্যমান নিম্নমুখী হয়েছে। আর বৃদ্ধি পেয়েছে পুষ্টিহীনতার হার। একে নষ্ট হয়ে যাওয়া হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, অপুষ্টির একটি প্রাণঘাতী রূপ হলো এই নষ্ট হয়ে যাওয়া বা ওয়েস্টিং। এতে শিশুরা আরো পাতলা ও দুর্বল হয়ে পড়ে। তারা মারা যাওয়ার বিরাট ঝুঁকিতে থাকে। তাদের বৃদ্ধি হয় না বললেই চলে। বিঘ্নিত হয় তাদের উন্নয়ন ও শিক্ষা।

ইউনিসেফের মতে, কোভিড-১৯ মহামারির আগেও ২০১৯ সালেই বিশ্বে ৪ কোটি ৭০ লাখ শিশু ‘ওয়েস্টেড’ হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ২ কোটি ৫০ লাখেরই বসবাস দক্ষিণ এশিয়ায়। জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ না নিলে এ বছর এভাবে ‘ওয়েস্টেড’ শিশুর সংখ্যা বিশ্বে দাঁড়াতে পারে ৫ কোটি ৪০ লাখ। ফলে এই সহস্রাব্দে বিশ্ব দেখেনি এমন একটি অবস্থায় চলে যেতে পারে এই ‘ওয়েস্টিং’।

ল্যানচেটের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শিশুদের মধ্যে ওয়েস্টিং শিশু, যাদের বয়স ৫ বছরের নিচে, তাদের সংখ্যা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে এ বছর বৃদ্ধি পেতে পারে শতকরা ১৪.৩ ভাগ। এর কারণ, কোভিড-১৯ এর কারণে আর্থসামাজিক প্রভাব। শিশুদের এভাবে অপুষ্টিতে ভোগা, সঙ্গে ভিটামিন ‘এ’ এবং বুকের দুধের স্বল্পতার অর্থ হবে বিশ্বে প্রতিদিন বাড়তি ১০ হাজার শিশুর মৃত্যু। জাতিসংঘের এজেন্সিগুলো সতর্ক করে বলেছে, ‘চাইল্ড ওয়েস্টিং’ বা শিশুদের এভাবে নষ্ট হয়ে যাওয়া বৃদ্ধি হলো একটি বরফচাঁইয়ের অগ্রভাগ মাত্র। কোভিড-১৯ শিশু ও নারীদের মধ্যে অপুষ্টির অন্য ধারাগুলোও বৃদ্ধি করবে। দুর্বল খাবারের ফলে তাদের মধ্যে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ঘাটতি, অতি ওজন ও স্থ্থূলতা দেখা দেবে। করোনা মহামারির প্রথমদিককার মাসগুলোতে ইউনিসেফের রিপোর্ট অনুযায়ী অত্যাবশ্যকীয় শতকরা ৩০ ভাগ জিনিসের চাহিদা কমিয়ে দেয়া হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় এই হার আরো অনেক বেশি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status