প্রথম পাতা
ইমরানের ফোন নানা কৌতূহল
কূটনৈতিক রিপোর্টার
২০২০-০৭-২৩
পারস্পরিক শ্রদ্ধা-বিশ্বাস ও সার্বভৌম-সাম্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক গভীর করতে চায় পাকিস্তান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ৯ মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফায় ফোনালাপে ইসলামাবাদের এমন প্রতিশ্রুতিই ব্যক্ত করলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। গতকাল দুপুর দেড়টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেন তিনি। সেগুনবাগিচা জানিয়েছে, বেশক’দিন ধরে ইসলামাবাদের তরফে দুই প্রধানমন্ত্রীর ফোনালাপের সময় চাওয়া হচ্ছিল। অবশেষে ঢাকা রাজি হয়। কিন্তু কী বিষয়ে ইমরান খান কথা বলতে চান? তা আগাম খোলাসা হয়নি। পর্যবেক্ষকরা অবশ্য ফোনকলের বিষয়টি চাউর হওয়ার পর থেকেই নানান কথা বলছেন। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতার প্রেক্ষাপটে, বেইজিংয়ের পরামর্শে পাকিস্তান যে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চাইছে এবং ঢাকার তাতে সায় রয়েছে সে বিষয়টি এখন বেশ খোলামেলাই আলোচনা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ তার জাতীয় স্বার্থ এবং নিজস্ব বিবেচনায় কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াচ্ছে বা কমাচ্ছে। এটা একান্তই ঢাকার সিদ্ধান্ত। কিন্তু ঐতিহাসিক এবং দুর্দিনের বন্ধু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টিকে ঢাকার বিবেচনায় রাখতেই হবে। বিশেষ করে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর যেকোনো আয়োজনে দিল্লির সতর্ক পর্যবেক্ষণ থাকবেই। গত অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের কয়েক ঘণ্টা আগে সর্বশেষ ফোনকলটি করেছিলেন ইমরান খান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি মতে, দু’নেতার গতকালের কথোপকথনটি প্রায় ১৫ মিনিট স্থায়ী হয়। কুশলাদি বিনিময়ের পর ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট বাংলাদেশে কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ও এর মোকাবিলায় সরকার কর্তৃক গৃহীত উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চান। প্রত্যুত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকার করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় এবং এর চিকিৎসা ক্ষেত্রে যে সকল উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। এরপর ইমরান খান শেখ হাসিনার নিকট বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি তাকে চলমান বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন। তবে আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইসলামাবাদ জানিয়েছে, করোনা এবং বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর করার বিষয়ে অত্যন্ত খোলামেলা কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। সার্কের প্রতি পাকিস্তানের অঙ্গীকারের প্রেক্ষাপটে তিনি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, টেকসই শান্তি এবং সমৃদ্ধির জন্যও বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন। দু’দেশের সম্পর্ক আরো দৃঢ় করার ওপর জোর দিয়েছেন।
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু কাশ্মির পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের যে দৃষ্টিভঙ্গি বা ইসলামাবাদ যেভাবে বিষয়টি দেখছে সেটিও তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শেয়ার করেছেন। ইমরান খান জম্মু কাশ্মির সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে জোর দিয়েছেন। এখানেও তিনি আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনেছেন। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাকিস্তান সফরেও আন্তরিক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
স্মরণ করা যায়, গত ১লা জুলাই ঢাকায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি তাৎপর্যপূর্ণ বৈঠক হয়। করোনা ঠেকাতে বিদ্যমান সতর্কতার মধ্যেই সেগুনবাগিচায় বৈঠকটি হয়। যেখানে দু’দেশের সম্পর্ক বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়। মূলত বৈঠকটি ছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে ঢাকায় নবনিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকীর প্রথম এবং সৌজন্য সাক্ষাৎ। কিন্তু আলোচনার পরিধি বা গভীরতায় সৌজন্য বৈঠকটি বাড়তি কিছু হয়ে ওঠে- পাকিস্তান মিশনের বরাতে এমনটাই জানায় তার্কিশ নিউজ এজেন্সি আনাদুলু। ‘পাকিস্তান, বাংলাদেশ হোল্ড টকস ইন পসিবল থ্রো’ শিরোনামে প্রচারিত ওই রিপোর্টের সাব হেডে পাকিস্তানি দূতকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধিতে দেশটির আগ্রহের বিষয়টি ফোকাস করা হয়েছিল। রিপোর্টে কর্মকর্তাদের বরাতে বলা হয়- বাংলাদেশ-পাকিস্তান টপ ডিপ্লোমেট পর্যায়ের সাম্প্রতিক বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে প্রমোট বা এগিয়ে নিতে সম্ভাব্য সকল উপায়ের ব্যবহারে ওপর জোর দেয়া হয়েছে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বৃদ্ধিতে আগামীর সম্ভাব্য সব উপায় বা উদ্যোগ কাজে লাগাতে উভয় পক্ষ সম্মত হয় বলেও উল্লেখ ছিল সংবাদে।
১৯৪৭ থেকে ৭১ অবধি পাকিস্তানের শাসকরা নানাভাবে এ অঞ্চলের জনগণকে বঞ্চিত করে। ব্যাপক বঞ্চনা আর নিপীড়নের একপর্যায়ে একাত্তর সনে চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধপরবর্তী সময়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হলেও আজ অবধি তা তেমন এগোয়নি। বরং যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রশ্নে তাতে বেশ বরফ জমেছে। তার্কিশ সংবাদ মাধ্যম নিজস্ব ভঙ্গিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের প্রেক্ষাপট এবং বিদ্যমান সম্পর্কের বিষয়টি তুলে ধরে। তাতে মন্ত্রীর সঙ্গে হাইকমিশনারের ১লা জুলাই’র বৈঠককে রেফার করে বলা হয় পাকিস্তান হাইকমিশনার সিদ্দিকীর ফোকাস ছিল সম্পর্ক বৃদ্ধিতে। তিনি বলেন, আমাদের একটাই চাওয়া, ভ্রাতৃসুলভ বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা শক্তিশালী সম্পর্ক চাই। গতকালের টেলিফোন আলাপেও ইমরান খান দুই দেশের জনগণের পর্যায়ে অর্থাৎ পিপল টু পিপল রিলেশনশিপে জোর দিয়েছেন। পাকিস্তানের প্রেস রিলিজে তা-ই বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি মতে, দু’নেতার গতকালের কথোপকথনটি প্রায় ১৫ মিনিট স্থায়ী হয়। কুশলাদি বিনিময়ের পর ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট বাংলাদেশে কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ও এর মোকাবিলায় সরকার কর্তৃক গৃহীত উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চান। প্রত্যুত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকার করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় এবং এর চিকিৎসা ক্ষেত্রে যে সকল উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। এরপর ইমরান খান শেখ হাসিনার নিকট বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি তাকে চলমান বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন। তবে আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইসলামাবাদ জানিয়েছে, করোনা এবং বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর করার বিষয়ে অত্যন্ত খোলামেলা কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। সার্কের প্রতি পাকিস্তানের অঙ্গীকারের প্রেক্ষাপটে তিনি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, টেকসই শান্তি এবং সমৃদ্ধির জন্যও বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন। দু’দেশের সম্পর্ক আরো দৃঢ় করার ওপর জোর দিয়েছেন।
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু কাশ্মির পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের যে দৃষ্টিভঙ্গি বা ইসলামাবাদ যেভাবে বিষয়টি দেখছে সেটিও তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শেয়ার করেছেন। ইমরান খান জম্মু কাশ্মির সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে জোর দিয়েছেন। এখানেও তিনি আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনেছেন। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাকিস্তান সফরেও আন্তরিক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
স্মরণ করা যায়, গত ১লা জুলাই ঢাকায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি তাৎপর্যপূর্ণ বৈঠক হয়। করোনা ঠেকাতে বিদ্যমান সতর্কতার মধ্যেই সেগুনবাগিচায় বৈঠকটি হয়। যেখানে দু’দেশের সম্পর্ক বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়। মূলত বৈঠকটি ছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে ঢাকায় নবনিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকীর প্রথম এবং সৌজন্য সাক্ষাৎ। কিন্তু আলোচনার পরিধি বা গভীরতায় সৌজন্য বৈঠকটি বাড়তি কিছু হয়ে ওঠে- পাকিস্তান মিশনের বরাতে এমনটাই জানায় তার্কিশ নিউজ এজেন্সি আনাদুলু। ‘পাকিস্তান, বাংলাদেশ হোল্ড টকস ইন পসিবল থ্রো’ শিরোনামে প্রচারিত ওই রিপোর্টের সাব হেডে পাকিস্তানি দূতকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধিতে দেশটির আগ্রহের বিষয়টি ফোকাস করা হয়েছিল। রিপোর্টে কর্মকর্তাদের বরাতে বলা হয়- বাংলাদেশ-পাকিস্তান টপ ডিপ্লোমেট পর্যায়ের সাম্প্রতিক বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে প্রমোট বা এগিয়ে নিতে সম্ভাব্য সকল উপায়ের ব্যবহারে ওপর জোর দেয়া হয়েছে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বৃদ্ধিতে আগামীর সম্ভাব্য সব উপায় বা উদ্যোগ কাজে লাগাতে উভয় পক্ষ সম্মত হয় বলেও উল্লেখ ছিল সংবাদে।
১৯৪৭ থেকে ৭১ অবধি পাকিস্তানের শাসকরা নানাভাবে এ অঞ্চলের জনগণকে বঞ্চিত করে। ব্যাপক বঞ্চনা আর নিপীড়নের একপর্যায়ে একাত্তর সনে চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধপরবর্তী সময়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হলেও আজ অবধি তা তেমন এগোয়নি। বরং যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রশ্নে তাতে বেশ বরফ জমেছে। তার্কিশ সংবাদ মাধ্যম নিজস্ব ভঙ্গিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের প্রেক্ষাপট এবং বিদ্যমান সম্পর্কের বিষয়টি তুলে ধরে। তাতে মন্ত্রীর সঙ্গে হাইকমিশনারের ১লা জুলাই’র বৈঠককে রেফার করে বলা হয় পাকিস্তান হাইকমিশনার সিদ্দিকীর ফোকাস ছিল সম্পর্ক বৃদ্ধিতে। তিনি বলেন, আমাদের একটাই চাওয়া, ভ্রাতৃসুলভ বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা শক্তিশালী সম্পর্ক চাই। গতকালের টেলিফোন আলাপেও ইমরান খান দুই দেশের জনগণের পর্যায়ে অর্থাৎ পিপল টু পিপল রিলেশনশিপে জোর দিয়েছেন। পাকিস্তানের প্রেস রিলিজে তা-ই বলা হয়েছে।