মত-মতান্তর
রম্য কথন
শাহেদের শখ এবং বোরকা কাহিনী
শামীমুল হক
১৯ জুলাই ২০২০, রবিবার, ১২:৩৫ অপরাহ্ন
শাহেদরা কখন বোরকা পরে? এর নানা উত্তর হতে পারে। তবে প্রতারণার ষোলকলা পূরণ হলে তাকে বোরকা পরতে হয়। এমন বোরকা কাহিনী নতুন নয়। পালাবার পথ খোঁজে পেতে বোরকা একটি উত্তম সহযোগী। প্রতারক শাহেদও তাই করেছে। ইতিমধ্যে শাহেদের নানা প্রতারণার কাহিনী, কৌশল দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সেসব নিয়ে কথা নয়। কথা হলো, সব কিছুরই শুরু যেমন আছে, শেষও আছে তার। এ বিষয়টি কেউ কেউ মনে রাখেনা। এতেই ঘটে বিপত্তি। শাহেদের শখ ছিল প্রতারণা। তাইতো সে নিত্য নতুন কৌশল আবিস্কার করত। প্রতারণা নিয়ে গবেষণা করত। এনিয়ে পিএইচডি ডিগ্রির ব্যবস্থা থাকলে বিশ্ব ডক্টরেট ডিগ্রিতে প্রথম হতেন। বাঙালি এ নিয়ে গর্ব করতেন। আমাদের একজন রিজেন্ট শাহেদ আছেন।
একেক জনের একেক বিষয়ে শখ থাকে। শাহেদেরও শখ প্রতারণা করা। তবে সবার শখ কি পূরণ হয়? শাহেদ এমন শখ বেছে নিয়েছেন যে শখ পূরণ হওয়ার নয়। এক সময় তা ধরা পড়ার কথা। তাই ধরা পড়েছে। এই ধরুন না সেই রাজার কথা। যার শখ দুধের পুকুর দেবেন। এ জন্য ডাকা হলো বিশেষজ্ঞদের। কিভাবে কি করলে এ পুকুর তৈরি করা যাবে। দুধের পুকুর দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসবে। অন্য দেশের রাজারাও আসবেন তার পুকুর দেখতে। একেকজন বিশেষজ্ঞ তাদের প্রস্তাবনা লিখিত আকারে জমা দিলেন। অবশেষে রাজা পুকুর খোদাইয়ের নির্দেশ দিলেন। বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো এমনভাবে পুকুর তৈরি করলেন যাতে দুধ নষ্ট না হয়। আকাশের বৃষ্টি যেন পুকুরে পড়তে না পারে সেজন্য দেয়া হলো ঢাকনা।
সুইচের মাধ্যমে এ ঢাকনা উপরে উঠানো যাবে। আবার সুইচের মাধ্যমে আগের মতো হয়ে যাবে। আবার ঢাকনার মধ্যেই রাখা হয়েছে একটি ফাঁকা জায়গাও। সেখানেও তৈরি করা হয়েছে আরেকটি ঢাকনা। দীর্ঘ চেষ্টার পর হলো পুকুর। এবার রাজা গোটা রাজ্যে এলান জারি করার নির্দেশ দিলেন। আগামী শনিবার যত গৃহস্থ পরিবার আছে তাদের প্রত্যেকের গাভীর দুধ রাজ দরবারে ফেলতে হবে। পুকুর ভর্তি হলে সেই দুধ পুকুর রাজা উদ্বোধন করবেন। অপেক্ষার শনিবার এলো। রাজ্যের সকল কৃষক ঘটি বাটি দিয়ে দুধ নিয়ে এসে রাজ দরবারের সেই পুকুর পাড়ে হাজির। এবার সিরিয়াল করে একজন একজন করে তাদের আনা দুধ ছাদের সেই ফাঁকা জায়গা দিয়ে পুকুরে ফেলার নির্দেশ দেয়া হলো। একজন একজন করে এগিয়ে যাচ্ছেন।
সঙ্গে আনা দুধ সেই ফাঁক দিয়ে পুকুরে ঢালছেন। এভাবে ঢালতে ঢালতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। একসময় বুঝা গেল পুকুর দুধে ভর্তি হয়ে গেছে। রাজা-রানি, উজির, পাইক পেয়াদা সবাই হাজির। এখনই রাজা পুকুরের ঢাকনা সুইচ টিপে উপরে তুলবেন। উদ্বোধন হবে দুধ পুকুরের। পুকুরকে ঘিরে দাঁড়িয়েছেন রাজ্যের সাধারণ মানুষও। এবার রাজা এলেন। সুইচ টিপলেন। ঢাকনা আস্তে আস্তে উপরে উঠতে থাকল। একসময় গিয়ে থামল ঢাকনা। পুকুরের দিকে নজর দিয়ে রাজা দেখলেন দুধ পুকুরে পানিতে ভরা। এ কি হলো? এতো দুধ গেল কোথায়? দুধ কিভাবে পানি হয়ে গেল? ভীষণ রেগে গেলেন রাজা। ডাকা হলো সকল গৃহস্থকে। রাজ দরবারে বসানো হলো দরবার। একে একে গৃহস্থকে ডাকা হচ্ছে। তাদের সওয়াল জওয়াব নেয়া হচ্ছে।
প্রত্যেকেরই এক কথা আমি মনে করেছি সবাই দুধ আনবেন। আমি এক ঘটি পানি নিয়ে গেলে কি হবে? কেউতো আর বুঝতে পারবে না। এমনটা ভেবে সকল গৃহস্থই দুধের বদলে পানি নিয়ে এসেছেন। আর এতে দুধ পুকুর ভরে গেল পানিতে। রাজার আর শখ পূরণ হলো না। এইতো গেল রাজা-বাদশার কথা। বর্তমান সমাজেও কেউ কেউ নানা ধরনের শখ করেন। এসব শখ পূরণে নানা চেষ্টা করেন। কিন্তু দেখা যায় তাদের এ শখ কখনো পূরণ হয় না। কারণ, তাদের শখটাই হলো উল্টো। ওই দুধ পুকুরের মতো। রাজাকে চিন্তা করা উচিত ছিল, দুধের কখনো পুকুর হতে পারে না। পুকুরে থাকবে পানি।
দুধ এমন একটি জিনিস যাতে এক সময় পচন ধরে। আবার এটাও রাজার ভাবা দরকার ছিল তিনি যে এলান জারি করলেন, সকলকে দুধ নিয়ে আসতে। এটা সবাই মানবে কিনা? শাহেদের বেলায়ও ঘটেছে এমন। দুধের যেমন পুকুর হতে পারেনা তেমন শাহেদেরও ভাবা উচিৎ ছিল সব প্রতারণা ধুপে টেকেনা। জনতা বড় বুদ্ধিমান। তারা দুধের বদলে পানি আনতে জানে। তারা সম্মান করতে যেমন জানে আবার অসম্মানও করতে জানে। শাহেদের এ পরিণতি দেখে সকল শাহেদদের শিক্ষা নেয়ার সময় এসেছে। আর কোন শাহেদ যেন বোরকার আশ্রয় নিতে না হয়। এমন দৃশ্য আর দেখতে চাইনা। শাহেদরা সাবধান।
একেক জনের একেক বিষয়ে শখ থাকে। শাহেদেরও শখ প্রতারণা করা। তবে সবার শখ কি পূরণ হয়? শাহেদ এমন শখ বেছে নিয়েছেন যে শখ পূরণ হওয়ার নয়। এক সময় তা ধরা পড়ার কথা। তাই ধরা পড়েছে। এই ধরুন না সেই রাজার কথা। যার শখ দুধের পুকুর দেবেন। এ জন্য ডাকা হলো বিশেষজ্ঞদের। কিভাবে কি করলে এ পুকুর তৈরি করা যাবে। দুধের পুকুর দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসবে। অন্য দেশের রাজারাও আসবেন তার পুকুর দেখতে। একেকজন বিশেষজ্ঞ তাদের প্রস্তাবনা লিখিত আকারে জমা দিলেন। অবশেষে রাজা পুকুর খোদাইয়ের নির্দেশ দিলেন। বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো এমনভাবে পুকুর তৈরি করলেন যাতে দুধ নষ্ট না হয়। আকাশের বৃষ্টি যেন পুকুরে পড়তে না পারে সেজন্য দেয়া হলো ঢাকনা।
সুইচের মাধ্যমে এ ঢাকনা উপরে উঠানো যাবে। আবার সুইচের মাধ্যমে আগের মতো হয়ে যাবে। আবার ঢাকনার মধ্যেই রাখা হয়েছে একটি ফাঁকা জায়গাও। সেখানেও তৈরি করা হয়েছে আরেকটি ঢাকনা। দীর্ঘ চেষ্টার পর হলো পুকুর। এবার রাজা গোটা রাজ্যে এলান জারি করার নির্দেশ দিলেন। আগামী শনিবার যত গৃহস্থ পরিবার আছে তাদের প্রত্যেকের গাভীর দুধ রাজ দরবারে ফেলতে হবে। পুকুর ভর্তি হলে সেই দুধ পুকুর রাজা উদ্বোধন করবেন। অপেক্ষার শনিবার এলো। রাজ্যের সকল কৃষক ঘটি বাটি দিয়ে দুধ নিয়ে এসে রাজ দরবারের সেই পুকুর পাড়ে হাজির। এবার সিরিয়াল করে একজন একজন করে তাদের আনা দুধ ছাদের সেই ফাঁকা জায়গা দিয়ে পুকুরে ফেলার নির্দেশ দেয়া হলো। একজন একজন করে এগিয়ে যাচ্ছেন।
সঙ্গে আনা দুধ সেই ফাঁক দিয়ে পুকুরে ঢালছেন। এভাবে ঢালতে ঢালতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। একসময় বুঝা গেল পুকুর দুধে ভর্তি হয়ে গেছে। রাজা-রানি, উজির, পাইক পেয়াদা সবাই হাজির। এখনই রাজা পুকুরের ঢাকনা সুইচ টিপে উপরে তুলবেন। উদ্বোধন হবে দুধ পুকুরের। পুকুরকে ঘিরে দাঁড়িয়েছেন রাজ্যের সাধারণ মানুষও। এবার রাজা এলেন। সুইচ টিপলেন। ঢাকনা আস্তে আস্তে উপরে উঠতে থাকল। একসময় গিয়ে থামল ঢাকনা। পুকুরের দিকে নজর দিয়ে রাজা দেখলেন দুধ পুকুরে পানিতে ভরা। এ কি হলো? এতো দুধ গেল কোথায়? দুধ কিভাবে পানি হয়ে গেল? ভীষণ রেগে গেলেন রাজা। ডাকা হলো সকল গৃহস্থকে। রাজ দরবারে বসানো হলো দরবার। একে একে গৃহস্থকে ডাকা হচ্ছে। তাদের সওয়াল জওয়াব নেয়া হচ্ছে।
প্রত্যেকেরই এক কথা আমি মনে করেছি সবাই দুধ আনবেন। আমি এক ঘটি পানি নিয়ে গেলে কি হবে? কেউতো আর বুঝতে পারবে না। এমনটা ভেবে সকল গৃহস্থই দুধের বদলে পানি নিয়ে এসেছেন। আর এতে দুধ পুকুর ভরে গেল পানিতে। রাজার আর শখ পূরণ হলো না। এইতো গেল রাজা-বাদশার কথা। বর্তমান সমাজেও কেউ কেউ নানা ধরনের শখ করেন। এসব শখ পূরণে নানা চেষ্টা করেন। কিন্তু দেখা যায় তাদের এ শখ কখনো পূরণ হয় না। কারণ, তাদের শখটাই হলো উল্টো। ওই দুধ পুকুরের মতো। রাজাকে চিন্তা করা উচিত ছিল, দুধের কখনো পুকুর হতে পারে না। পুকুরে থাকবে পানি।
দুধ এমন একটি জিনিস যাতে এক সময় পচন ধরে। আবার এটাও রাজার ভাবা দরকার ছিল তিনি যে এলান জারি করলেন, সকলকে দুধ নিয়ে আসতে। এটা সবাই মানবে কিনা? শাহেদের বেলায়ও ঘটেছে এমন। দুধের যেমন পুকুর হতে পারেনা তেমন শাহেদেরও ভাবা উচিৎ ছিল সব প্রতারণা ধুপে টেকেনা। জনতা বড় বুদ্ধিমান। তারা দুধের বদলে পানি আনতে জানে। তারা সম্মান করতে যেমন জানে আবার অসম্মানও করতে জানে। শাহেদের এ পরিণতি দেখে সকল শাহেদদের শিক্ষা নেয়ার সময় এসেছে। আর কোন শাহেদ যেন বোরকার আশ্রয় নিতে না হয়। এমন দৃশ্য আর দেখতে চাইনা। শাহেদরা সাবধান।