প্রথম পাতা

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শাজাহান সিরাজ আর নেই

স্টাফ রিপোর্টার

১৫ জুলাই ২০২০, বুধবার, ৯:৩২ পূর্বাহ্ন

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, নিউক্লিয়াসের পক্ষে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠকারী শাজাহান সিরাজ আর নেই (ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন) । গতকাল বিকাল সাড়ে তিনটায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে (সাবেক এ্যাপোলো) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। শাজাহান সিরাজ দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী এবং দুই সন্তান রেখে গেছেন। আজ সকাল ১১টায় টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় প্রথম জানাজা, দ্বিতীয় জানাজা বাদ জোহর কালিহাতী উপজেলায়, বাদ এশা গুলশান সোসাইটি মসজিদে তৃতীয় জানাজা শেষে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে এই মুক্তিযোদ্ধাকে দাফন করা হবে।
শাজাহান সিরাজের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম রব। এক শোক বার্তায় আ স ম রব বলেন, বীর সংগ্রামী শাজাহান সিরাজের মৃত্যুতে জাতির অন্তরাত্মাতে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে অসম সাহসিকতা ও সংগ্রামী হিসেবে ছাত্র-যুবসমাজকে সংগঠিত ও তাদের মাঝে স্বাধীনতার মন্ত্র ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখেন। ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার সঙ্গে তিনি সিরাজুল আলম খানের স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াসের সঙ্গে যুক্ত হন। ফলে সিরাজুল আলম খানের নির্দেশে জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীত নির্বাচনের পরিকল্পনায়ও শাজাহান সিরাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। নিউক্লিয়াস প্রণীত মুক্তিযুদ্ধের ইশতেহার শাজাহান সিরাজ পাঠ করার মধ্য দিয়ে নিজেকে ইতিহাসের স্বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায়ে সংযুক্ত করেন। স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের তাগিদে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল গঠন ও সংগ্রাম আন্দোলনেও বিশাল ভূমিকা গ্রহণ করেন। যৌবনের বহু সোনালী দিন শাহজাহান সিরাজ দেশমাতৃকার জন্য কারাগারে কাটিয়েছেন। শাজাহান সিরাজ আমার আন্দোলন সংগ্রামের সাথী, আমার অনুভূতি, আমার চেতনার অংশ। যতদিন আমাদের স্বাধীনতা, জাতির অস্তিত্ব, পতাকা ও জাতীয় সংগীত থাকবে ততদিন শাজাহান সিরাজ বেঁচে থাকবেন সকল বাঙালির হৃদয়ে।
শাজাহান সিরাজ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। সেই সময়ের ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ছিলেন তিনি। তখন যাদের ‘চার খলিফা’ বলা হতো তাদেরই একজন শাজাহান সিরাজ।
১৯৭১ সালের ৩রা মার্চ ‘ছাত্র আন্দোলনের নিউক্লিয়াস’র পক্ষে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন তিনি। ওই দিন স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান ‘চার খলিফা’র আরেকজন ডাকসুর তৎকালীন ভিপি আ স ম আবদুর রব। ‘চার খলিফা’র অন্য দুজন হলেন ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকী এবং ডাকসুর তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস মাখন।
স্বাধীনতার পর রব-সিরাজের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ভাঙন থেকে জাসদ গঠিত হলে সেই দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন শাজাহান সিরাজ। তখন তাকে কিছু দিন কারাগারেও থাকতে হয়েছিল। পরে জাসদ কয়েকটি ভাগ হলে একটি অংশের নেতৃত্ব দেন শাজাহান সিরাজ। ১৯৯৫ সালে তার দল নিয়ে বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি সরকারের বন ও পরিবেশমন্ত্রী হন তিনি।
১৯৪৩ সালের ১লা মার্চ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে জন্মগ্রহণ করেন শাজাহান সিরাজ। ওই আসন থেকে ৪ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। টাঙ্গাইলের করটিয়া সাদত কলেজের ছাত্র সংসদের দুইবার ভিপি ছিলেন তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status