বাংলারজমিন
কোরবানির আমেজ নেই চট্টগ্রামে
ইব্রাহিম খলিল, চট্টগ্রাম থেকে
৬ জুলাই ২০২০, সোমবার, ৮:১১ পূর্বাহ্ন
করোনা মহামারিতে মানুষ ঈদুল ফিতর পার করেছে নীরবে। একই অবস্থা বিরাজ করছে কোরবানিতেও। হাতে মাসখানেক সময় থাকলেও কোরবানি নিয়ে কোনো আমেজ নেই চট্টগ্রামে। কেবল কোরবানির গরু নিয়ে হৈ চৈ করছে বিক্রেতারা।
চট্টগ্রামে কোরবানিতে বড় অবদান রেখে আসছে নাহার এগ্রো। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক তানজিব জাওয়াদ রহমান বলেন, প্রতিবছর এ সময়ে কোরবানির গরু নিয়ে চট্টগ্রামের হাট-বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার আনাগোনা চলে। কিন্তু এ বছর করোনার কারণে সেই আমেজ নেই। বিক্রেতারা হাটে গরু নিয়ে গেলেও ক্রেতা না পেয়ে ফেরত যাচ্ছে।
তিনি বলেন, কোরবানিতে এবার বিক্রিযোগ্য ৩৫০ গরু লালনপালন করেছে নাহার এগ্রো। অনলাইন বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সেগুলো বিক্রি করা হবে। খুলশীতে আমাদের সেলস সেন্টার রয়েছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একজন ক্রেতার জন্য আধা ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়া হবে।
সাগরিকা বাজারের ইজারাদার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, কোরবানির গরু-ছাগল, ভেড়াসহ অন্যান্য পশু বিক্রি করার জন্য বিক্রেতারা আসলেও ক্রেতা নেই। ফলে কোরবানির আমেজ নেই বললেই চলে। তবুও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরবানির হাট বসানোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তাছাড়া তাদের স্বেচ্ছাসেবকরা থাকবে। তবে শেষ পর্যন্ত ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়কেই সচেতন থাকতে হবে। তা না হলে কোনো উদ্যোগই সফল হবে না।
তিনি আরো বলেন, গত এক বছর ধরে কোরবানির প্রস্তুতি নিচ্ছেন ছোট-বড় খামারি থেকে শুরু করে ব্যক্তি উদ্যোক্তরা। লালনপালন করেছেন শত শত কোরবানির পশু। চাঁপাই নবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে সাগরিকা বাজারে গরু আসে। মানুষ কাঁচা বাজারে যাচ্ছে। সেখানে নিজেকে রক্ষা করে বাজার করছেন। গরুর বাজারেও নিশ্চয়ই তারা একইভাবে সচেতন থাকবেন।
নগরীর ৩৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী নুরুল হকের পুত্র ব্যবসায়ী হাজী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত বছর কোরবানিতে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা দরে চারটি গরু কিনে কোরবানি দিয়েছেন। এবার একটি কমিয়ে এনে তিনটি গরু কেনার বাজেট করেছেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, করোনা সংক্রমণের পর থেকে দুই দফায় ১৩-১৪ হাজার পরিবারকে ত্রাণ দেয়া হয়েছে। ঈদেও রাজনৈতিক সহকর্মী ও গরিবদের মধ্যে ঈদসামগ্রী দেয়া হয়েছে। সবমিলে প্রায় কোটি টাকার অনুদান দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে ঈদের মতো কোরবানিতেও আগের সেই আমেজ থাকবে না। তাই আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-পড়শীদের মধ্যে মাংস বিলি-বণ্টন কমিয়ে আনা হবে। কোরবানি দেয়া তিনটি গরু এবার গরিব-মিসকিনদের মধ্যে বিলি-বণ্টন করে দেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, আমার অবস্থা যেমন- তেমন, চট্টগ্রামের অর্ধেক মানুষ এবার কোরবানি দিতে পারবে না। এরমধ্যে বেসরকারি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, প্রবাসী পরিবারগুলো অন্যতম। কারণ এই করোনায় ব্যবসা-বাণিজ্য অচল, চাকরিজীবীদের বেতন ঠিকমতো হচ্ছে না, প্রবাসীদের রেমিটেন্স শূন্যের কোটায়। বলতে গেলে কোরবানিদাতার সংখ্যা তাদের মধ্যেই বেশি। তারা নীরব থাকায় চট্টগ্রামের কোরবানি নিয়ে কোনো আমেজ দেখা যাচ্ছে না।
কোরবানিদাতা কমে যাওয়ার শঙ্কা জানিয়েছেন জেলা প্রাণিসমপদ কর্মকর্তা ডা. রেয়াজুল হক জসিমও। তিনি বলেন, গত বছর ৭ লাখ ২০ হাজার ৭৮৯টি পশু জবাই করা হয়েছে কোরবানিতে। সে অনুযায়ী ৬ লাখের বেশি পশু স্থানীয়ভাবে লালনপালন করা হয়েছে। আর কোরবানিতে দেড় থেকে দুই লাখ পশু আশপাশ এলাকা বা অন্যান্য জেলা থেকে আনা হয়। কিন্তু এবার সে রকম ক্রেতা মিলছে না। ফলে কোরবানির পশুর দামও কমে যাবে। নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী আহমদ নবী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। লোকসান গুনতে গুনতে কাহিল। তারপরও কোরবানি দিতে হবে। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার বাজেট কমিয়ে আনা হবে। আগে এক লাখ বা দেড় লাখ টাকায় গরু কেনা হতো। এখন তা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হবে। আর কোনো উপায় নেই।
কোরবানি ঈদের জন্য চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, বাঁশখালী, লোহাগাড়া, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী এলাকায় ব্যক্তি পর্যায়ে গরু লালন-পালন করা হয়। সাতকানিয়ার মো. কামরুল বলেন, তারা ৪-৫টি করে গরু লালন-পালন করেছেন। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে হাট-বাজার নিরাপদ মনে হচ্ছে না।
চট্টগ্রামে কোরবানিতে বড় অবদান রেখে আসছে নাহার এগ্রো। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক তানজিব জাওয়াদ রহমান বলেন, প্রতিবছর এ সময়ে কোরবানির গরু নিয়ে চট্টগ্রামের হাট-বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার আনাগোনা চলে। কিন্তু এ বছর করোনার কারণে সেই আমেজ নেই। বিক্রেতারা হাটে গরু নিয়ে গেলেও ক্রেতা না পেয়ে ফেরত যাচ্ছে।
তিনি বলেন, কোরবানিতে এবার বিক্রিযোগ্য ৩৫০ গরু লালনপালন করেছে নাহার এগ্রো। অনলাইন বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সেগুলো বিক্রি করা হবে। খুলশীতে আমাদের সেলস সেন্টার রয়েছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একজন ক্রেতার জন্য আধা ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়া হবে।
সাগরিকা বাজারের ইজারাদার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, কোরবানির গরু-ছাগল, ভেড়াসহ অন্যান্য পশু বিক্রি করার জন্য বিক্রেতারা আসলেও ক্রেতা নেই। ফলে কোরবানির আমেজ নেই বললেই চলে। তবুও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরবানির হাট বসানোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তাছাড়া তাদের স্বেচ্ছাসেবকরা থাকবে। তবে শেষ পর্যন্ত ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়কেই সচেতন থাকতে হবে। তা না হলে কোনো উদ্যোগই সফল হবে না।
তিনি আরো বলেন, গত এক বছর ধরে কোরবানির প্রস্তুতি নিচ্ছেন ছোট-বড় খামারি থেকে শুরু করে ব্যক্তি উদ্যোক্তরা। লালনপালন করেছেন শত শত কোরবানির পশু। চাঁপাই নবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে সাগরিকা বাজারে গরু আসে। মানুষ কাঁচা বাজারে যাচ্ছে। সেখানে নিজেকে রক্ষা করে বাজার করছেন। গরুর বাজারেও নিশ্চয়ই তারা একইভাবে সচেতন থাকবেন।
নগরীর ৩৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী নুরুল হকের পুত্র ব্যবসায়ী হাজী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত বছর কোরবানিতে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা দরে চারটি গরু কিনে কোরবানি দিয়েছেন। এবার একটি কমিয়ে এনে তিনটি গরু কেনার বাজেট করেছেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, করোনা সংক্রমণের পর থেকে দুই দফায় ১৩-১৪ হাজার পরিবারকে ত্রাণ দেয়া হয়েছে। ঈদেও রাজনৈতিক সহকর্মী ও গরিবদের মধ্যে ঈদসামগ্রী দেয়া হয়েছে। সবমিলে প্রায় কোটি টাকার অনুদান দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে ঈদের মতো কোরবানিতেও আগের সেই আমেজ থাকবে না। তাই আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-পড়শীদের মধ্যে মাংস বিলি-বণ্টন কমিয়ে আনা হবে। কোরবানি দেয়া তিনটি গরু এবার গরিব-মিসকিনদের মধ্যে বিলি-বণ্টন করে দেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, আমার অবস্থা যেমন- তেমন, চট্টগ্রামের অর্ধেক মানুষ এবার কোরবানি দিতে পারবে না। এরমধ্যে বেসরকারি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, প্রবাসী পরিবারগুলো অন্যতম। কারণ এই করোনায় ব্যবসা-বাণিজ্য অচল, চাকরিজীবীদের বেতন ঠিকমতো হচ্ছে না, প্রবাসীদের রেমিটেন্স শূন্যের কোটায়। বলতে গেলে কোরবানিদাতার সংখ্যা তাদের মধ্যেই বেশি। তারা নীরব থাকায় চট্টগ্রামের কোরবানি নিয়ে কোনো আমেজ দেখা যাচ্ছে না।
কোরবানিদাতা কমে যাওয়ার শঙ্কা জানিয়েছেন জেলা প্রাণিসমপদ কর্মকর্তা ডা. রেয়াজুল হক জসিমও। তিনি বলেন, গত বছর ৭ লাখ ২০ হাজার ৭৮৯টি পশু জবাই করা হয়েছে কোরবানিতে। সে অনুযায়ী ৬ লাখের বেশি পশু স্থানীয়ভাবে লালনপালন করা হয়েছে। আর কোরবানিতে দেড় থেকে দুই লাখ পশু আশপাশ এলাকা বা অন্যান্য জেলা থেকে আনা হয়। কিন্তু এবার সে রকম ক্রেতা মিলছে না। ফলে কোরবানির পশুর দামও কমে যাবে। নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী আহমদ নবী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। লোকসান গুনতে গুনতে কাহিল। তারপরও কোরবানি দিতে হবে। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার বাজেট কমিয়ে আনা হবে। আগে এক লাখ বা দেড় লাখ টাকায় গরু কেনা হতো। এখন তা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হবে। আর কোনো উপায় নেই।
কোরবানি ঈদের জন্য চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, বাঁশখালী, লোহাগাড়া, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী এলাকায় ব্যক্তি পর্যায়ে গরু লালন-পালন করা হয়। সাতকানিয়ার মো. কামরুল বলেন, তারা ৪-৫টি করে গরু লালন-পালন করেছেন। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে হাট-বাজার নিরাপদ মনে হচ্ছে না।