বাংলারজমিন

ঝুঁকি সেবা দিচ্ছেন সত্তরোর্ধ ডা. হরিশংকর

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ থেকে

২১ জুন ২০২০, রবিবার, ৭:৪৯ পূর্বাহ্ন

করোনা ভাইরাসের কারণে সারাদেশ যখন লকডাউন দেশের সকল বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও কনসালটেশনে চিকিৎসকরা রোগী দেখা বন্ধ করে বাসায় আবদ্ধ রেখে নিজেকে সুরক্ষিত রাখছেন ঠিক সেই মুহুর্তে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারসোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) পড়ে চেম্বারে রোগী দেখছেন।  করোনায় লকডাউন সত্ত্বেও তিনি এক দিনের জন্যেও রোগী দেখা বন্ধ করেননি। প্রতিদিন গড়ে ৩০ জন রোগী দেখছেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে রোগীরা আসছেন তাকে দেখাতে। করোনাকালে জীবনের ঝুকি নিয়ে মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ময়মনসিংহের বিশিষ্ট  চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ হরিশংকর দাস। সেবাই পরম ধর্ম, এই দীক্ষায় ব্রত হয়ে শতভাগ বাস্তবায়ন করে চলেছেন আর্তমানবতার সেবায় সদা নিয়োজিত সত্তরোর্ধ বয়সী মানবিক চিকিৎসক সমাজসেবক সাদামনের মানুষ বিশিষ্ট  চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ হরিশংকর দাস।
ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়ায় ডাঃ হরি শংকর পারমিতা চক্ষু হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী (প্রাইভেট) সত্ত্বাধিকারী ডাঃ হরিশংকর দাস বলেন চিকিৎকরা নিজের সুবিধার জন্য লেখাপাড়া শিখেন না। জ্ঞানার্জন করেন অসহায় রোগীদের চিকিৎসাসেবা করার জন্যেই মেডিকেল শিক্ষা। তাই তার কাছে এসে যেন কোনো রোগী বিনা চিকিৎসায় ফেরত না  যায়, এটাই তার মূল লক্ষ্য। রোগীর কাছে চিকিৎসক পরামর্শ ফি থাকুক আর নাই থাকুন সকল রোগীই যাতে চিকিৎসা নিয়ে খুশির সাথে ঘরে ফিরে যেতে পারেন, তাতেই তার আনন্দ। ১৯৭৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত গত ৪২ বছরে ৪ লক্ষাধিক রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন ডাঃ হরিশংকর দাস। সুস্থ্য শরীরে আজীবন রোগীরসেবায় নিজেকে নিয়োজিত থাকার তার ইচ্ছা। পারমিতা চক্ষু হাসপাতালের উপ-পরিচালক ফাতেমা বেগম জানান, খ্যাতিমান অভিজ্ঞ চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ হরিশংকর দাস ৪০ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও পরিচিতজন ও তাদের পরিবারের সদস্যসহ গরীর অসহায়, দুঃস্থ্য রোগীদের কোনো পরামর্শ ফি ছাড়াই চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। অনেক গরীব রোগীকে পকেটের পয়সা খরচ ওষুধপত্রও কিনে দেন।
ফাতেমা বেগম আরো জানান,  করোনা দুর্যোগের এই সময়ে শহরের বেশিরভাগ বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিক বন্ধ এবং অনেকে চাকরি চলে গেছে। এই হাসপাতালে ৫২ জন কর্মী রয়েছেন। ইদানিং হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে, সেইসাথে আয়ও হ্রাস পেলেও পারমিতা চক্ষু হাসপাতালের কেউ চাকরি হারাবেনা বলে নিশ্চিয়তা দিয়েছেন হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী। ভর্তুকি দিয়ে এই দুঃসময়ে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীসহ অন্যান্য কর্মীদের বেতন দিয়ে যাচ্ছেন।
ডঃ হরি শংকর দাস সেলফোনেও তার সেবা সরবরাহ করে চলেছেন। রোগীরা তাকে পরামর্শের জন্য প্রতিদিন কল করেন এবং ডাক্তারের ফেসবুক পেজে নম্বরটি পাওয়া যায়। হাসপাতালে জরুরি অপারেশনও করা হচ্ছে।
১৯৫০ সালে টাঙ্গাইলের ভুয়াপুরের নিকলা দাস বারে প্রয়াত ইন্দুভূষণ দাস ও রেণুকা প্রভা দাসের জন্ম, ডাঃ হরি শংকর  ১৯৭৪ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) থেকে এমবিবিএস পাস করেন এবং  এরপর মমেক-এ সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন। পরে তিনি ১৯৮৩ সালে চক্ষু চিকিৎসায় উন্নত ডিগ্রীর জন্য অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় যান। সেখানে ডিও, এবং এম.এ. এম. এস. ডিগ্রী লাভ করে দেশে চলে আসেন। ১৯৮৪ সালে পারমিতা চক্ষু হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। পেশাগত জীবনের শুরু থেকেই প্রতিদিন এক ঘন্টা ফ্রি রোগী দেখেন এবং প্রতি বছর গ্রামের বাড়িতেও ফ্রি রোগী দেখেন। বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও গরীবদেরকে তিনি ফ্রি চিকিৎসা দেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status