অনলাইন

নিজেদের ইতিহাস, পরম্পরা ভেঙে আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রথম মহিলা সম্পাদক

মানবজমিন কলকাতা ব্যুরো

৭ জুন ২০২০, রবিবার, ১:১৮ পূর্বাহ্ন

অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়ের জায়গায় ঈশানী দত্ত রায়কে সম্পাদক করে ভারতের অন্যতম সেরা সংবাদপত্র গোষ্ঠী আনন্দবাজার তাদের ঐতিহ্য শুধু ভাঙেনি, ইতিহাস এবং পরম্পরাকেও ভেঙেছে। সহ সম্পাদক এবং পরবর্তী পর্বে বার্তা সম্পাদক ঈশানী দত্ত রায় এর যোগ্যতা সম্পর্কে দ্বিধাহীন থেকেও মানবজমিনের অনুসন্ধানে উঠে এলো চমকপ্রদ তথ্য। যে সংবাদপত্রের মালিকানা কিংবা পরিচালনায় সরকার পরিবারের মেয়েদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ, সেই সংবাদপত্রের সম্পাদক এক মহিলা ! এই বৈপরীত্য আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রায় একশো বছরের ইতিহাসে ঘটেনি। আশির দশকে গৌরী চট্টোপাধ্যায় নামে এক মহিলা সাংবাদিক আনন্দবাজার এর বার্তা সম্পাদকের চেয়ারে বসেছিলেন। কিন্তু ঈশানী বার্তা সম্পাদকের চেয়ার হয়ে পৌছালেন এডিটর এর চেয়ারে। অমন একটি প্রতিষ্ঠানে যেখানে পরিবারের মেয়েরা উচ্চশিক্ষিত এবং যোগ্য হয়েও ঢুকতে পারেন না।

উনিশশো বাইশ সালের তের মার্চ আনন্দবাজার পত্রিকার যাত্রা শুরু হয়। প্রফুল্ল কুমার সরকার এবং সুরেশ চন্দ্র মজুমদার ছিলেন কাণ্ডারি। পরবর্তী পর্বে সরকার পরিবার আনন্দবাজার এর একচ্ছত্র মালিকানা পায়। প্রফুল্ল কুমার সরকারের পুত্র অশোক কুমার সরকার পরে আনন্দবাজার এর প্রধান পরিচালক হন। প্রফুল্ল সরকারের আমলেই নির্দিষ্ট হয় বাড়ির মেয়েরা কোনোভাবেই কারবারের অংশীদার হবে না। কাগজ পরিচালনাতেও তাদের ভূমিকা থাকবে না। প্রয়াত অশোক সরকার এর চার পুত্র, এক কন্যা। অভিক, অরুপ, অধীপ, অশনি ও সর্বানী। অধীপ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আগেই মারা যান। অশনি তার প্রাপ্য অংশ দাদাদের কাছে বিক্রি করে আমেরিকা প্রবাসী। কন্যা সর্বানী সরকার থেকে সর্বানী রথ হয়ে নিয়ম অনুযায়ী আনন্দবাজার সম্পর্কে নিরাসক্ত। অভীক বাবুর দুই সন্তান। মেয়ে চিকি এবং ছেলে অরিত্র। চিকি একটি প্রকাশনা সংস্থা চালান। নিয়ম অনুযায়ী আনন্দবাজার এর সঙ্গে সম্পর্ক বিবর্জিত। অরিত্র ব্যাক্তিগত কারণে নিজের অংশ বাবা কাকাদের কাছেই বিক্রি করে দিয়েছে। ফলত, এখন আনন্দবাজারের মালিকানায় অভিক সরকার, অরুপ সরকার, অরুপ সরকার এর পুত্র আতিদেব সরকার। অভীক সরকার ভাইস চেয়ারম্যান এবং এমেরিটাস এডিটর। অভিকের স্ত্রী রাখী এবং অরুপের স্ত্রী সিঁথি অংশীদারিত্বে আছেন কিন্তু কোনোভাবেই পরিবারের নিয়ম ভেঙে পরিচালনায় নেই। দায়িত্ব এখন সবটাই অরুপ সরকার এবং তাঁর পুত্র আতিদেব এর হাতে। এহেন পুরুষ শাসিত সাম্রাজ্যে ঈশানী দত্ত রায় এর সম্পাদক হওয়াটা নজিরবিহীন তো বটেই, হয়তো প্রথা ভাঙার প্রথম সোপানও।
যাইহোক, ঈশানী দত্ত রায়ের জন্য রইলো শুভকামনা। তিনি সফল হবেন এটাই প্রত্যাশা ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status