বাংলারজমিন

আম্ফান কেড়ে নিল কৃষকের  স্বপ্ন       

মির্জাগঞ্জ(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

২৩ মে ২০২০, শনিবার, ১১:০০ পূর্বাহ্ন

মাঠে মাঠে ভরা   ছিল কৃষকের  শস্য ও ফসল। স্বপ্ন  ও ছিল অনেক। কেউ ক্ষেতে চাষ করেছিল মরিচ, বাদাম  ডাল ও আলু। কেউ  বপন করেছে আউশধানের বীজ । আবার কারও কারও ছিল সবজি ভরা ক্ষেত আর বরজে ঝুলছিল পান পাতা। আশা ছিল বুক ভরা। এসব ফসল ঘর তুলবে। ন্যায্য দামে বিক্রি করে লাভবান হবে। কিন্তু কৃষকের সে আশা আর পূরণ হলো না।    পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে কৃষকের সে স্বপ্ন কেড়ে নিল ঘূর্ণিঝড়" আম্ফান"। ঘরে আর আনা হলো ফসল পানিতেই তলিয়ে রইল মাঠে।ডুবে গেলে কৃষকের আশা। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় "আম্ফান" এর প্রভাবে পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যায় আবহাওয়া অধিদপ্তর। গত ২০ মে বুধবার রাতে উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড়টি। এর প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পায়রা নদীর পানি ৫-৭ ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পায়। ফলে তীব্র স্রোতে তোপে উপজেলার গোলখালী,মির্জাগঞ্জ মাজার এলাকা, পিঁপড়াখালী, সু্ন্দ্র ও রামপুরসহ বিভিন্ন বেরিবাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে ওই সব এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয় এবং তলিয়ে যায় ফসলের মাঠ। এতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে ফসলের এমন কথা বলে ভুক্তভোগী কৃষকরা। ২- ৪ দিন এভাবে পানিবন্দি থাকলে হয়তো মাঠেই পঁচে পানিতে ভেসে যেতে পারে ফসলে এমন আশঙ্কা করছে কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, এবছর উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে ১১ হাজার ১ শত ৫ ০হেক্টর জমিতে ফসল চাষ করেছেন কৃষক । ঘূর্ণিঝড়ের ফলে পানিতে প্লাবিত রয়েছে ১৫ শত হেক্টর জমির ফসল। তার মধ্যে ১০০ হেক্টর আউশধান ,  ১০০ হেক্টর চিনাবাদাম ,  ৩০০ হেক্টর মরিচ , ১০০ হেক্টর পান  ও  ৪৫০ হেক্টর  জমির  সবজি সহ মোট ১৫ শত হেক্টর জমির  ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকের প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতি হতে পারে বলে উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়। উপজেলার ঘটকের আন্দুয়া গ্রামের কৃষক মোঃ সেলিম বলেন,আম্ফানের ফলে বেরিবাঁধ ভেঙে পানিতে আমাদের ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে । মুগ ডাল ঘরে তুললেও মরিচ ও বাদাম  ক্ষেতে রয়ে গেছে। সব বাদাম ও মরিচগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। এত ক্ষতি কী দিয়ে পূরণ করবো।উপজেলার  পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামের কৃষক মোঃ আঃ জব্বার বলেন, পানি ঢুকে সব আউশের বীজ তলিয়ে গেছে। পানি না কমলে আউশের বীজতলা গুলো শেষ হয়ে যাবে। ধার করে বীজ ক্রয় করে বপন করছি । যদি বীজ গুলো পঁচে যায় তাহলে কী রোপন করবো? আর বীজ রোপন না করতে পারলে ধান পামু কই? কী দিয়া ধারের টাকা শোধ করমু? বউ পোলা পান লইয়া তো না খাইয়া থাহা লাগবে। মির্জাগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আরাফাত হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বেই কৃষক তার মাঠের  অধিকাংশ বাদাম, মুগডাল ও মরিচ ঘরে তুলেছে। কিন্তু আউশের বীজ তলা পানিতে পানিতে সম্পূর্ণভাবে তলিয়ে গেছে। এভাবে কিছু দিন পানি থাকলে আউশের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হবে।তবে দ্রুত পানি সরিয়ে নেওয়া জন্য আমরা কৃষকদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ ও সহায়তা করছি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status