অনলাইন

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান পরবর্তী জরুরি উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তায় সশস্ত্র বাহিনী

আইএসপিআর

২১ মে ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৮:৩৫ পূর্বাহ্ন

ঘূর্ণিঝড় আম্পান পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনীর বিভাগের নেতৃত্বে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী সার্বিক ত্রাণ, উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এর দিক নির্দেশনায় পূর্ব থেকেই সেনাবাহিনী ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রম, ত্রাণ তৎপরতা ও চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। বর্তমানে তারা ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত এলাকাসমূহ অসামরিক প্রশাসনের সাথে যৌথভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপন করছে। ইতিমধ্যে দুর্যোগ মোকাবেলার নিমিত্তে সেনাবাহিনীর ১৪৬টি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল স্বল্প সময়ে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। দুর্যোগ উপদ্রুত এলাকাসমূহে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের নিমিত্তে সেনাবাহিনীর ৭৬টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কবলিত স্থানসমূহে খাদ্য সহায়তা হিসেবে সেনাবাহিনীর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ১২,৫০০ প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রী প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের নিমিত্তে ১৬টি ওয়াটার পিউরিফিকেশন প্ল্যান্ট ও ১৪টি ওয়াটার বাউজার প্রস্তুত রয়েছে।

একই সাথে করোনা মোকাবেলায় নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০২৭টি যানবাহনের সমন্বয়ে মোট ৫৩১টি টহল ৬২টি জেলায় অসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় প্রেরণ করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি এ সকল টহল দল এবং ইউনিটসমুহ প্রয়োজনে সহায়তা প্রদানের জন্য অসামরিক প্রশাসন এর সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ জেলা ভোলা ও হাতিয়ায় দূর্গত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা প্রদানের জন্য নৌবাহিনীর দুটি জাহাজ চট্টগ্রাম নৌ জেটি ত্যাগ করেছে। অন্যদিকে খুলনা নৌ অঞ্চল হতে সাতক্ষীরার গাবুরা ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রাণ ও পূনর্বাসন কাজে সহায়তা জন্য ২২ সদস্যের একটি নৌবাহিনী কন্টিনজেন্ট এবং উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য ৭ সদস্যের একটি ডাইভিং টিম সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে গমন করেছে।

নৌবাহিনীর দুটি জাহাজ এলসিইউ-০৩ ৬০০ প্যাকেট নিয়ে ভোলা এবং এলসিইউ-০৪ ৬০০ প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে হাতিয়া উদ্দেশ্যে গমন করে। এছাড়া পরিস্থিতি বিবেচনায় চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের অন্যান্য জাহাজগুলো দূর্গত এলাকায় জরুরী উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের জন্য যাত্রা করবে। অন্যদিকে খুলনা নৌ অঞ্চল হতে বানৌজা কপোতাক্ষ ২০০ প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে পটুয়াখালি এবং বানৌজা পদ্মা ৩৫০ প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত এর দিক নির্দেশনায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ০১টি সি-১৩০ পরিবহন বিমান, ০১টি এমআই-১৭এসএইচ হেলিকপ্টার, ০১টি অগাস্টা-১১৯ হেলিকপ্টার এবং ০১টি বেল-২১২ হেলিকপ্টার এর মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান উপদ্রুত খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, বরগুনা, নোয়াখালি, ঝালকাঠি, কুয়াকাটা ও সুন্দরবন এলাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের উদ্দেশ্যে দ্রুততার সহিত পরিদর্শন করে। পরিদর্শন শেষে ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত এলাকার  ক্ষয়ক্ষতির বাস্তবচিত্র যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করা হয়। এছাড়াও, ১১৯ জন বিমান বাহিনীর সদস্যের (০৪ জন কর্মকর্তা, ৮১ জন বিমানসেনা ও ৩৪ জন অসামরিক সদস্য) একটি টিম আম্ফান পরবর্তী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে বিমান বাহিনীর নিজস্ব পরিবহনে সাতক্ষীরায় গমন করেন।

উল্লেখ্য যে, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান পরবর্তী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ৬টি পরিবহন বিমান এবং ২৯টি হেলিকপ্টার সবদা প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঘাঁটি বাশার এ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সেল গঠন সহ বিমান বাহিনীর সকল ঘাঁটিতে ২৪ ঘন্টা প্রয়োজনীয় সহায়তার প্রদানের জন্য অপস্ রুম খোলা আছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status