বাংলারজমিন

মৌলভীবাজারে ত্রাণ ও মজুরির দাবিতে কর্মহীন হোটেল ও রিকশা শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি

স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার থেকে

২০ মে ২০২০, বুধবার, ৪:২১ পূর্বাহ্ন

খাদ্যসহ পর্যাপ্ত ত্রাণ, নগদ অর্থ এবং বকেয়া মজুরি ও ঈদ বোনাস প্রদানের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে মৌলভীবাজারের হোটেল ও রিকশা শ্রমিকরা। করোনা ভাইরাসজনিত দূর্যোগে ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি তথা লকডাউন পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে জেলার হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও রিকশা-ঠেলা-ভ্যান শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়লেও সরকারিভাবে কোন ত্রাণ ও আর্থিক সহযোগিতা না পাওয়ায় মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি ঃ নং চট্টঃ-২৩০৫ এবং মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৪৫৩ এর উদ্যোগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। ২০ মে সকাল ১১ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত মৌলভীবাজার শহরের চৌমুহনা চত্ত্বরে আয়োজিত এই অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি ঃ নং চট্টঃ-২৩০৫ মোঃ মোস্তফা কামাল। কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস। এছাড়াও কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৪৫৩ এর সভাপতি মোঃ সুহেল মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মোঃ দুলাল মিয়া, মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিয়া, রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন কালেঙ্গা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মোঃ গিয়াসউদ্দিন, হোটেল শ্রমিকনেতা মোঃ জামাল মিয়া, তারেশ বিশ্বাস সুমন, রিকশা শ্রমিকনেতা মোঃ শাহজাহান মিয়া, আব্দুল হান্নান খোকন, মোঃ জসিমউদ্দিন প্রমূখ। কর্মসূচিতে বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন মার্চ মাস থেকে হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ করার পর থেকে কর্মহীন শ্রমিকরা মানবেতরভাবে জীবনযপান করছেন। যে শ্রমিকদের রক্ত ঘাম করা পরিশ্রমে হোটেল মালিকদের মুনাফা-আরাম-আয়েশ সেই মালিকরা গত দুই মাসে কোন শ্রমিকের একবারের জন্যও খোঁজ নেননি। এমনকি অনেক মালিক হোটেল শ্রমিকদের বকেয়া পাওনাও পরিশোধ করেননি। বর্তমানে রোজার সময়ে ফজিলতের পরিবর্তে শ্রমিকদের উপবাসের জীবনযাপন করতে হচ্ছে। সরকার প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বারবার বলছেন ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হবে, একটি লোকও না খেয়ে থাকবে না, ঈদ উপহার হিসেবে ৫০ লাখ শ্রমিককে নগদ ২,৫০০ টাকা করে প্রদান করা হবে। অথচ কর্মহীন হোটেল শ্রমিক ও রিকশা শ্রমিকরা স্ব স্ব সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক, ইউএনওসহ জনপ্রতিনিধিদের একাধিকবার নাম, ঠিকানা মোবাইল নম্বর, জাতীয়পরিচয়পত্র নম্বরসহ তালিকা প্রদান করে সরকারিভাবে কোন ত্রাণ বা আর্থিক সহযোগিতা পাননি। উপরন্তু এব্যাপারে জেলা প্রশাসন, ইউএনও বা জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করলে এক জন থেকে আরেক জনকে পাঠিয়ে শ্রমিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। বক্তারা ত্রাণ প্রদান ও নগদ আর্থিক সহযোগিতা প্রদানে অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও দলীয়করণের অভিযোগ এনে বলেন ত্রাণ লুটপাটের কারণে সরকারও বাধ্য হয়ে প্রায় ৫৬ জন জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করেছে। এছাড়া ৫০ লাখ আর্থিক প্রণোদনার তালিকায় প্রায় ৪৩ লাখ নামের মধ্যে অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতির সংবাদ পত্রিকায় এসেছে, যার কারণে ঈদের আগে শ্রমিকদের নগদ অর্থ পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। করোনা মোকাবেলার জন্য পৃথিবীব্যাপী স্বীকৃত করণীয় "সংগনিরোধ কর্মসুচি" বাস্তবায়নের অপরিহার্য শর্ত হলো সকলের খাদ্যের নিশ্চয়তা প্রদান করা। ফলে হোটেল ও রিকশা শ্রমিকসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের সামগ্রিক দায়িত্ব সরকার না নিলে অদূর ভবিষ্যতে যেকোন ধরনের পরিস্থিতি সৃস্টি হতে পারে বলে বক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন ।  ঈদের আগ মুহুর্তে অনাহার-অর্ধাহারে জীবনযাপন করা কর্মহীন হোটেল ও রিকশা শ্রমিকদের অবিলম্বে নগদ আর্থিক সহযোগিতা ও খাদ্যসামগ্রীসহ পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রদানের জোর দাবি জানান। এছাড়াও কর্মসূচি থেকে হোটেল শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ও মাসিক মজুরির সমপরিমান ঈদ উৎসব বোনাস প্রদান করার দাবি জানান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status