বিশ্বজমিন

অক্সফোর্ডের টিকা নিয়ে সন্দেহ, পরীক্ষায় অংশ নেয়া সব বানর করোনা আক্রান্ত

মানবজমিন ডেস্ক

১৯ মে ২০২০, মঙ্গলবার, ৭:৫১ পূর্বাহ্ন

করোনা ভাইরাসের (কভিড-১৯) চিকিৎসায় অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির টিকাটি ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রাণীদেহে টিকাটির সর্বশেষ পরীক্ষায় এর কোনো কার্যকারিতা দেখা যায়নি। ছয়টি বানরের উপর ওই পরীক্ষা চালানো হয়। পরীক্ষা শেষে এদের প্রত্যেকের দেহেই করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ খবর দিয়েছে দ্য ডেইলি মেইল।

হারভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের সাবেক অধ্যাপক ডা. উইলিয়াম হাসেলটাইন জানিয়েছেন, পরীক্ষায় কিছু বানরের দেহে ভাইরাস প্রবেশ করানোর পর টিকা দেয়া হয় ও কিছু বানরকে টিকা দেয়া হয়নি। কিন্তু উভয় ধরনের বানরের মধ্যেই সমপরিমাণ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ থেকে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যে, টিকাটি ভাইরাসটিকে পরাজিত করতে সক্ষম নাও হতে পারে। সিএইচএডিওএক্স১ এনসিওভি-১৯ নামের ওই টিকাটি এখন মানবদেহে পরীক্ষার প্রথম পর্যায়ে রয়েছে।  

এদিকে, অক্সফোর্ডের টিকা হতাশাজনক ফল দিলেও, মার্কিন প্রতিষ্ঠান মডার্নার একটি টিকা ইতিবাচক ফল দেখিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তাদের টিকাটি করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কিছু পরিমাণে কার্যকর। এই টিকা প্রয়োগের ফলে ভাইরাসটি আক্রান্তের ফুসফুসে পৌঁছতে পারে না। সাধারণত ফুসফুস আক্রান্ত হলেই ভাইরাসটি মানুষের জন্য প্রাণঘাতী হয়ে উঠে। মডার্নার টিকাটির ভাইরাসটিকে থামিয়ে দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

অক্সফোর্ডের টিকাটি হাসেলটাইন বলেন, টিকা দেয়া প্রত্যেক বানরই করোনায় আক্রান্ত ছিল। তাদের ও টিকা দেয়া হয়নি এমন বানরের মধ্যে এন্টিবডির পরিমাণে কোনো পার্থক্য দেখা যায়নি। যার মানে হচ্ছে, টিকা দেয়া সকল বানরই আক্রান্ত হয়েছে।

নটিংহাম ইউনিভার্সিটির মলিকিউলার বায়োলজি বিষয়ক অধ্যাপক জন বেল অক্সফোর্ডের টিকার সাম্প্রতিক অকার্যকারিতাকে উদ্বেগজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, মানুষের ক্ষেত্রেও যদি এমনটি হয়, তাহলে এই টিকাপ্রাপ্ত মানুষরা বিশাল পরিমাণে সংক্রমণ ঘটাতে পারেন। ভাইরাসটি অন্যান্য কমিউনিটিতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

প্রসঙ্গত, গত মাস থেকে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির টিকাটির মানবদেহে পরীক্ষা শুরু করেছে। এই ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১ হাজারের বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে অর্ধেককে এই টিকা দেয়া হচ্ছে, বাকি অর্ধেককে দেয়া হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত এই টিকা তৈরিতে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি সরকার থেকে ৯ কোটি পাউন্ড সহায়তা পেয়েছে। ভবিষ্যতে আরো ৬ কোটি ৫৫ লাখ পাউন্ড সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কোনো কার্যকরী চিকিৎসা নেই। বিশ্বজুড়ে শতাধিক প্রতিষ্ঠান ভাইরাসটির টিকা ও ওষুধ আবিষ্কারের চেষ্টা চালাচ্ছে। এর মধ্যে বেশকিছু টিকা ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিগগিরই কোনো টিকা ব্যবহারের উপযোগী হয়ে উঠছে না। আগামী বছরের আগে কোনো টিকার বাণিজ্যিক উৎপাদনের সম্ভাবনা ক্ষীণ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status