অনলাইন

পরশুরামে পোল্ট্রি খামারিদের মাথায় হাত

এমএ হাসান, পরশুরাম (ফেনী) থেকে

৫ এপ্রিল ২০২০, রবিবার, ১২:৩৩ অপরাহ্ন

করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বন্ধ রয়েছে হোটেল-রেস্তোরা ও দোকানপাট। বিয়ে,জেয়াফতসহ সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোও বন্ধ। ফলে পরশুরামে কমছে পোল্ট্রি মুরগি ও ডিমের দাম। চরম লোকসান গুনতে হচ্ছে পোল্ট্রি খামারিদের।

উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিস সুত্র জানায়, উপজেলায় নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত প্রায় ৫শ বয়লার, লেয়ার ও সোনালি (কক) মুরগির খামার রয়েছে। প্রায় সব খামারই ছোট বা মাঝারি ধরণের। তবে ব্রয়লার মুরগির খামারই বেশি।

খামারিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস বিস্তারের আগে পরশুরামে বয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হতো ১২৫ -১৩০ টাকায়। বর্তমানে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। প্রতিদিনই কমছে মুরগির দাম।

পশ্চিম সাহেবনগর গ্রামের খামারি সাইদুল ইসলাম জানান,প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগিতে খরচ হচ্ছে প্রায় ১শ টাকা।এখন সেই মুরগি ৩০-৪০ টাকা লোকসানে বিক্রি করতে হচ্ছে। দুটি খামারের মুরগি বিক্রি করে গত সপ্তাহে প্রায় ১লাখ টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে।

পরশুরাম বাজারের সবচেয়ে বড় পোল্ট্রি খাদ্যে বিক্রির প্রতিষ্ঠান আল আমিন পোল্ট্রি ফিডের স্বত্তাধিকারি মনিরুল কবির মাসুদ জানান, আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রায় ২ শ খামারি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এসব খামারে বাকি-নগদে মুরগির খাদ্য ও ওষুদের যোগান আমরা দিয়ে থাকি। উৎপাদিত মুরগি ও ডিম ফেনী এবং চট্টগ্রামে বিক্রি করা হতো।  বর্তমান পরিস্থিতিতে চাহিদা না থাকায় ফেনী ও চট্টগ্রামে  মুরগি ও ডিম  সাপ্লাই প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন,৫ দিনের বেশি ডিম সংরক্ষণ করা যায়না। চাহিদা না থাকায় হাজার হাজার ডিম বিক্রি হচ্ছে না।ফেনী ও চট্টগ্রামে ৩ টাকা দরে সীমিত ডিম বিক্রি হচ্ছে। এভাবে আর এক সপ্তাহ চললে ব্যাপক লোকসানের মুখে খামার বন্ধ করে দিতে হবে মালিকদের।


জয়ন্তীনগর গ্রামের লেয়ার মুরগির খামারি নুরুল আবছার রুবেল জানান,প্রতিটি ডিম উৎপাদনে ৬ টাকার বেশি খরচ পড়ে। এখন সেই ডিম বিক্রি হচ্ছে গড়ে ৫ টাকা ২০ পয়সা করে।   আগে লেয়ার মুরগি কেজি বিক্রি হতো ১৯০ -২০০ টাকা।এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা করে। পরশুরামে ৩০-৪০ টি লেয়ার মুরগির খামার আছে।লোকসান গুনতে গুনতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খামারিরা।

চিথলিয়া গ্রামের খামারি নুর রহমান মুরাদ বলেন,বর্তমানে বিয়েসহ সামাজিক অনুষ্ঠানের  সময় ছিল। হোটেল রেস্তোরাসহ এসব অনুষ্ঠানে মুরগির ব্যাপক চাহিদা ছিল।করোনার কারণে এসব অনুষ্ঠান বন্ধ। ফলে বড় ধরণের ধাক্কা খেয়েছেন খামারিরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন খামারি জানান,সমিতি ও এনজি থেকে ঋণ নিয়ে খামার চালাতেন। এখন করোনার কারণে লোকসান গুনে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। জীবন বাঁচাতে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন।মুরগির ওষুধ ও খাবার নিচ্ছেন বাকিতে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.ইসমাইল হোসেন জানান,পরশুরামে প্রায় ছোট ও মাঝারি আকারের খামার রয়েছে। করোনার প্রভাবে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক না হলে তারা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status