খেলা
সৌম্যর শুধুই ‘প্রার্থনা’
স্পোর্টস রিপোর্টার
২৯ মার্চ ২০২০, রবিবার, ৫:২৩ পূর্বাহ্ন
এক মাসও হয়নি বিয়ে করেছে জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার সৌম্য সরকার। এ সময়ে নতুন বউকে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর কথা তার। সেটি আর হলো কই! করোনা ভাইরাসের কারণে নিজেকে গৃহবন্দি করেছেন এই ক্রিকেটার। তার মাঝে কাজ করছে ভয়ও। তার এখন একটাই কাজ- ‘শুধুই প্রার্থনা’। মানুষ যেন ভয়াবহ এই বিপদ থেকে রক্ষা পায়, আবার প্রাণ খুলে হাসতে পারে, ফিরতে পারে স্বাভাবিক জীবনে- এমনটাই চান তিনি। সৌম্য বলেন, ‘বাসাতেই থাকছি। বাইরে বের হওয়ার সাহস পাচ্ছি না। আমার মধ্যে দারুণ ভয় কাজ করছে। করোনা ভাইরাস ছোয়াঁচে রোগ। কিভাবে শরীরে চলে আসবে বলা যায়না। আমার শুধু একটাই প্রর্থনা মানুষ যেন এই বিপদ থেকে দ্রুত বের হতে পারে।’
প্রফেশনাল ক্রিকেটার সৌম্য সরকার। ফিটনেস ঠিক রাখার বিকল্প নেই তার। তাই নিজ বাসাতে ফিটনেস ঠিক রাখার কাজগুলো করে যাচ্ছেন নিয়মিত। তিনি বলেন, ‘বাইরে যাওয়ার অবস্থা নেই। কিন্তু ফিটনেস নিয়ে কাজ করতে হবে। তাই বাসাতে যতটা সম্ভব তা করছি। যেমন করিডোরে হালকা ব্যায়ামগুলো করছি। মানে ঘরের মধ্যে যতটা সম্ভব করা যায় সেগুলো নিয়েই ব্যস্ত।’
কবে আবার ক্রিকেটাররা মাঠে ফিরতে পারবেন তার নিশ্চয়তা নেই। কীভাবে এই ক্ষতিপূরণ হবে? সৌম্য এসব নিয়ে মোটেও ভাবছেন না। তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, আমি ক্রিকেট নিয়ে এখন একদমই ভাবছি না। জীবন থাকলে অবশ্য ক্রিকেট খেলতে পারবো। আগে তো বাঁচি। এখন আমার একটাই চিন্তা কীভাবে করোনা থেকে নিজেকে ও পরিবারকে রক্ষা করবো। মাঠে ফিরতে পারলে অনেক ক্রিকেট খেলা যাবে। সেসব পরের ভাবানা।’
জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা নিজেদের এক মাসের বেতনের অর্ধেকটা করোনা তহবিলে দিয়েছেন। তালিকায় আছেন সৌম্য সরকারও। এর বাইরেও অনেক ক্রিকেটার নিজেদের উদ্যোগে পাশে দাঁড়াচ্ছেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের। বাসায় বসে থাকা সৌম্যকে দারুণভাবে পোড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করতে না পারাটা। তিনি বলেন, ‘যখন সুযোগ এসেছে বেতনের অর্ধেকটা দেয়ার দিয়েছি। এরপরও অনেকেই বাইরে বের হয়ে কিছু না কিছু করছে। সত্যি কথা জানেন? আমি একদমই সাহস পাচ্ছি না। আমার ইচ্ছা কিছু করি সেসব খেটে খাওয়া মানুষের জন্য। আবার চিন্তা করি নিজে যদি বেঁচে থাকি তাহলে আরো করার সুযোগ আসবে। পরিস্থিতি ভালো হলেও অনেকের প্রয়োজন হবে। তখন না হয় পাশে দাঁড়বো।’
এছাড়াও দেশের সবশ্রেণির মানুষের প্রতি জাতীয় দলের এই তারকা ক্রিকেটার জানিয়েছেন বিশেষ অনুরোধ। তিনি বলেন, ‘আমরা সাবাই জানি করোনা ভাইরাসের কোনো ঔষুধ নেই এখন পর্যন্ত। কিন্তু যদি সচেতন থাকি তাহলে এটি থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব। সরকার বলেছে ঘর থেকে না বের হতে। আমরা যেন অকারণে বের না হই। এরপর হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় টিস্যু বা অন্য কিছু ব্যবহার করতে হবে। যেখানে সেখানে থুতু ফেলা যাবে না। পরিষ্কার থাকা ও সাবান দিয়ে হাত ধোঁয়া অবশ্য জরুরী। যদি আমরা কিছু দিন এই সব ঠিক মেনে চলি তাহলে অবশ্য এই বিপদ থেকে রক্ষা পাবো। আবার সবাই ক্রিকেট খেলে ও ক্রিকেট খেলা দেখে আনন্দ নিতে পারবো।’