ভারত
লকডাউনে কেমন কাটছে দিনগুলি
পরিতোষ পাল, কলকাতা থেকে
২৭ মার্চ ২০২০, শুক্রবার, ১০:০৭ পূর্বাহ্ন
একটা বড় বিপদের সম্ভাবনা আঁচ করতে পারছিলাম। তবে মঙ্গলবার রাত থেকে করোনা মোকাবিলায় ২১ দিনের লকডাউনে অনেকের মত আমিও হকচকিয়ে গিয়েছি। সকলের নিরাপত্তার স্বার্থে এটা হয়তো জরুরি ছিল। তাই মেনে নেওয়া ছাড়া কোনও পথ নেই। আর এই ঘোষনা শোনার পরেই তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে ঘরে প্রযোজনীয় খাদ্য মজুত আছে কিনা তা গৃহিনীর কাছে জানতেই তার মুখ বেজার। শুধু অস্ফুট ভাবে বললেন, চাল আরও কিছুটা আনিয়ে রাখলে হতো। অন্তত ফুটিয়ে খাওয়া যাবে। সবজি ও ডাল যা আছে তাতে বেশ কয়েকদিন চলে যাবে। তবে পুত্র বিহারের পাটনায় স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষনের জন্য একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় করোনা সংক্রান্ত কাগজপত্র তৈরিতে এতই ব্যস্ত যে নাওয়া-খাওয়া ভুলেছে। এটা মুঠোফোনে জানার পর থেকে গৃহিনী একটা কথাই বলে চলেছেন, ছেলেটা একা একা কি করছে এই লকডাউনে। ফলে তিনি এখন খাওয়ার কথা বললেই বেজায় চটে যাচ্ছেন।
এমনকি এক কাপ কফি চাইলেও কড়া দৃষ্টি হানছেন। অবশ্য কাজের চাপও বেড়েছে। রান্নার দিদিকে লকডাউনের জন্য সবেতন ছুটি দিয়ে আসতে না করার পর হেঁসেলের সব দায়িত্ব এখন গৃহিনীর উপর। এদিকে প্রতিদিনের মত সকালে ঘুম থেকে উঠেই খবরের কাগজের সন্ধান করতে গিয়ে হতাশ হতে হল। সকালে খবরের কাগজে চোখ বোলানো দীর্ঘ দিনের অভ্যাস। একটি দুটি নয়, গোটা চারেক বাংলা-ইংরেজি কাগজে চোখ না বোলালে যেন পেটের ভাত হজম হয় না। সেই কাগজই আসেনি।
জানতে পারলাম, লকডাউনের বিধিনিষেধ থেকে ছাড় দেওয়া হলেও হকাররা কাগজ বিলি করতে চাইছেন না করোনা আতঙ্কের জেরে। সাংবাদিক বন্ধু অমর সাহাকে যোগাযোগ করেও জানতে পারলাম তিনিও কাগজ পাচ্ছেন না লকডাউন ঘোষনার পর থেকে। ফলে খবরের কাগজ না পেয়ে নিজেই বেশ বিরক্ত হলাম। অনলাইন এবং টিভির পর্দাই এখন ভরসা প্রতি মুহূর্তের খবর জানার জন্য। অবশ্য সব চ্যানেলেই এখন করোনা আর করোনা। ফলে অল্পতেই টিভি দেখতেও বিরক্তি চেপে বসে। এরই মধ্যে একটি চ্যানেলে দেখলাম, কয়েকটি ছেলে-বুড়োকে কান ধরে ওঠবস করাচ্ছে পুলিশ। অপরাধ লকডাউনের সুরক্ষা বিধি না মেনেই এরা পথে বেরিয়ে ছিলেন। পথের ধারের চায়ের দোকানের নৈমিত্তিক আড্ডা চালু থাকার দৃশ্য থেকে একটা কথাই মনে হল, এরা কবে সচেতন হবে।
দেশব্যাপী পুলিশ প্রশাসন অবশ্য কড়া হাতে আইন ভঙ্গকারীদের শাসন করছে। লাঠি চালাচ্ছে। দোকানের শাটার টেনে নামিয়ে দিচ্ছে। নিজেদের বিপদ, পরিবারের সমূহ বিপদ জেনেও যেন এরা সব অকুতোভয় বিপ্লবী। আর তাই এই সব বিপ্লবীদের ঠান্ডা করতে বেদম লাঠি পেটাই এখন জরুরি মনে হচ্ছে। অবশ্য বাজারে বা মুদি ও দুধের দোকানে সকলকে ভিড় না করে দূরত্ব বজায় রেখে লাইন দেওয়ার অনুরোধে কাজ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। অন্তত টিভি পর্দায় সেটাই দেখতে পাচ্ছি। সকাল সকাল টিভির পর্দা ছেড়ে আমার টেরেস বাগানের গাছগুলির চর্চায় এদিন যেন অনেকটা সময় কাটালাম। জানতে পারলাম, লকডাউনে করোনার দাপট কতটা আটকানো যাবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে দূষণ কমে যাওয়ায় পরিবেশবিদরা বেজায় খুশি। পাখি ও অন্যন্য প্রাণীকুলের এ বড় সুসময়। কোলাহলহীন পরিবেশে তাদের জীবন যাপন এবং যাতায়াতও অনেক স্বচ্ছন্দ।
এরই মধ্যে ফোনে এক বন্ধু উপদেশ দিলেন, এই অফুরন্ত সময়টাকে কাজে লাগাতে যেন শরীর চর্চায় মন দিই। অন্তত আধঘন্টা ব্যায়াম করার দাওয়াই দিয়েই তিনি কেটে দিলেন লাইনটা। এটা ঠিকই, দিনের পর দিন ঘরের মধ্যে থাকার অভ্যেস কোনদিনই নেই। কীভাবে কাটবে নিঃসঙ্গ বিচ্ছিন্নতার দিনগুলি ? অপেক্ষাকৃত তরুণরা ডিজিটাল প্লাটফর্মে উপুড় হয়েছেন। নেটফ্লিক্সে সকলেই ডুবে রয়েছে। মথ্য বয়স্করা অনলাইন গেমসে মজে রয়েছেন। সব ইন্টারনেট প্রোভাইডাররাও ৫০ জিবি পর্যন্ত বিনামূল্যে ডাটা দেবার ঘোষনা দিয়েছে। এমনকি নতুন নতুন সিনেমা দেখার কথা জানিযেছে হৈ চৈ-এর মত ডিজিটাল প্লাটফর্মও। আমাদের মত মানুষদের আবার ওসবে বিশেষ রুচি নেই। আর তাই মোবাইল ঘেটে সংবাদ জানায় ডুব দিতে গিয়ে হঠাৎ হোয়াটস অ্যাাপ গ্রুপে দেখি কারা যেন পাঠিয়েছে বাংলা সাহিত্যের একগুচ্ছ লেখকের ই-বইয়ের লিঙ্ক। বিমল কর, তারাশঙ্কর, বিভুতিভুষন থেকে সত্যজিৎ রায় পর্যন্ত অনেকের লেখা। আমার প্রিয় ঘনাদার সব লেখাও পেয়ে গেলাম। আর পেলাম পুরনো দিনের হেমেন্দ্র কুমার রায়ের লেখা। সে সবই একটার পর একটা পড়া শুরু করেছি। এরই মাঝে দু চারটা ঘরের কাজে হাত না লাগালে গৃহিনীর গোসা আন্দাজ করতে পারি। ফলে এই মুক্ত সময়ে লেগে পড়েছি, ঘর দোর পরিস্কার করার কাজে। কোথাও ঝুল জমে ছিল অনেকদিন। বইয়ের তাকগুলোতে হাত পড়েনি বহুদিন। বইয়ের গন্ধ শোকার সুযোগটাও কাজে লাগাচ্ছি । আসলে বইয়ের গন্ধ একটা অদ্ভুত প্রশান্তি এনে দেয় মনের গভীরে। এসবের মাঝেই আমাদের মতো প্রফেশনের মানুষদের ঘরে বসেই কাজ করতে হচ্ছে। সেই কাজে মাঝে মাঝেই বসতে হচ্ছে কম্পিউটারের সামনে। ফলে অনেকটা সময় কেটে যাচ্ছে কাজের তাগিদে। কিন্তু যাদের সেই দায়িত্ব নেই তাদের পক্ষে টিভি দেখে আর মোবাইলে হুমড়ি খেয়ে সময় কাটানো সত্যিই কষ্টকর। তাই আনেকেই ছুটে বেরিয়ে যাচ্ছেন পাড়ার মোড়ে। অবশ্য পুলিশের ব্যাটনের ঘাও পড়ছে অনেকের পেছনে। আর তাই ফেসবুকে একটা মিম ঘুরে বেড়াচ্ছে তাতে লেখা হয়েছে, ”বাড়িতে বসে যদি গা ব্যাথা করে তবে বাইরে বেরিয়ে ম্যাসাজ করিয়ে নিতে পারেন। পুলিশ আপনার সেবার সর্বদা প্রস্তুত।” এই ধরণের মজা-মসকরা ছড়িয়ে রয়েছে ফেবু ও হোয়াটসঅ্যাপে। তবে লকডাউনের সময়ে এই বিচ্ছিন্নতার ভুবনে থেকেও যে লাভের কড়ি গোনা যায় সেকথা মনে করিয়ে দিযেছেন এক মনরোগের চিকিৎসক বন্ধু। তিনি বললেন, এখন সবাই সুখী গৃহকোণে দিন কাটাচ্ছেন। নানা কারণে তৈরি পারিবারিক ফাটল মেরামতির অপূর্ব সুযোগ এসেছে সকলের সামনে। আর করোনার সামাজিক দূরত্ব আসলে মনের দূরত্ব কমানোর এবং ভুল বোঝাবুঝি দূরে রেখে মিলেমিশে থাকার সত্যকে আবিষ্কার করার ছন্দে আমাদের পৌঁছে দিয়েছে। তবে গৃহিনীকে এসব কথা জানাতেই তিনি হেঁকে উঠলেন, খিটিমিটিটা যে বেড়ে গেছে সেই খবর কি অন্যরা রাখেন।
এমনকি এক কাপ কফি চাইলেও কড়া দৃষ্টি হানছেন। অবশ্য কাজের চাপও বেড়েছে। রান্নার দিদিকে লকডাউনের জন্য সবেতন ছুটি দিয়ে আসতে না করার পর হেঁসেলের সব দায়িত্ব এখন গৃহিনীর উপর। এদিকে প্রতিদিনের মত সকালে ঘুম থেকে উঠেই খবরের কাগজের সন্ধান করতে গিয়ে হতাশ হতে হল। সকালে খবরের কাগজে চোখ বোলানো দীর্ঘ দিনের অভ্যাস। একটি দুটি নয়, গোটা চারেক বাংলা-ইংরেজি কাগজে চোখ না বোলালে যেন পেটের ভাত হজম হয় না। সেই কাগজই আসেনি।
জানতে পারলাম, লকডাউনের বিধিনিষেধ থেকে ছাড় দেওয়া হলেও হকাররা কাগজ বিলি করতে চাইছেন না করোনা আতঙ্কের জেরে। সাংবাদিক বন্ধু অমর সাহাকে যোগাযোগ করেও জানতে পারলাম তিনিও কাগজ পাচ্ছেন না লকডাউন ঘোষনার পর থেকে। ফলে খবরের কাগজ না পেয়ে নিজেই বেশ বিরক্ত হলাম। অনলাইন এবং টিভির পর্দাই এখন ভরসা প্রতি মুহূর্তের খবর জানার জন্য। অবশ্য সব চ্যানেলেই এখন করোনা আর করোনা। ফলে অল্পতেই টিভি দেখতেও বিরক্তি চেপে বসে। এরই মধ্যে একটি চ্যানেলে দেখলাম, কয়েকটি ছেলে-বুড়োকে কান ধরে ওঠবস করাচ্ছে পুলিশ। অপরাধ লকডাউনের সুরক্ষা বিধি না মেনেই এরা পথে বেরিয়ে ছিলেন। পথের ধারের চায়ের দোকানের নৈমিত্তিক আড্ডা চালু থাকার দৃশ্য থেকে একটা কথাই মনে হল, এরা কবে সচেতন হবে।
দেশব্যাপী পুলিশ প্রশাসন অবশ্য কড়া হাতে আইন ভঙ্গকারীদের শাসন করছে। লাঠি চালাচ্ছে। দোকানের শাটার টেনে নামিয়ে দিচ্ছে। নিজেদের বিপদ, পরিবারের সমূহ বিপদ জেনেও যেন এরা সব অকুতোভয় বিপ্লবী। আর তাই এই সব বিপ্লবীদের ঠান্ডা করতে বেদম লাঠি পেটাই এখন জরুরি মনে হচ্ছে। অবশ্য বাজারে বা মুদি ও দুধের দোকানে সকলকে ভিড় না করে দূরত্ব বজায় রেখে লাইন দেওয়ার অনুরোধে কাজ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। অন্তত টিভি পর্দায় সেটাই দেখতে পাচ্ছি। সকাল সকাল টিভির পর্দা ছেড়ে আমার টেরেস বাগানের গাছগুলির চর্চায় এদিন যেন অনেকটা সময় কাটালাম। জানতে পারলাম, লকডাউনে করোনার দাপট কতটা আটকানো যাবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে দূষণ কমে যাওয়ায় পরিবেশবিদরা বেজায় খুশি। পাখি ও অন্যন্য প্রাণীকুলের এ বড় সুসময়। কোলাহলহীন পরিবেশে তাদের জীবন যাপন এবং যাতায়াতও অনেক স্বচ্ছন্দ।
এরই মধ্যে ফোনে এক বন্ধু উপদেশ দিলেন, এই অফুরন্ত সময়টাকে কাজে লাগাতে যেন শরীর চর্চায় মন দিই। অন্তত আধঘন্টা ব্যায়াম করার দাওয়াই দিয়েই তিনি কেটে দিলেন লাইনটা। এটা ঠিকই, দিনের পর দিন ঘরের মধ্যে থাকার অভ্যেস কোনদিনই নেই। কীভাবে কাটবে নিঃসঙ্গ বিচ্ছিন্নতার দিনগুলি ? অপেক্ষাকৃত তরুণরা ডিজিটাল প্লাটফর্মে উপুড় হয়েছেন। নেটফ্লিক্সে সকলেই ডুবে রয়েছে। মথ্য বয়স্করা অনলাইন গেমসে মজে রয়েছেন। সব ইন্টারনেট প্রোভাইডাররাও ৫০ জিবি পর্যন্ত বিনামূল্যে ডাটা দেবার ঘোষনা দিয়েছে। এমনকি নতুন নতুন সিনেমা দেখার কথা জানিযেছে হৈ চৈ-এর মত ডিজিটাল প্লাটফর্মও। আমাদের মত মানুষদের আবার ওসবে বিশেষ রুচি নেই। আর তাই মোবাইল ঘেটে সংবাদ জানায় ডুব দিতে গিয়ে হঠাৎ হোয়াটস অ্যাাপ গ্রুপে দেখি কারা যেন পাঠিয়েছে বাংলা সাহিত্যের একগুচ্ছ লেখকের ই-বইয়ের লিঙ্ক। বিমল কর, তারাশঙ্কর, বিভুতিভুষন থেকে সত্যজিৎ রায় পর্যন্ত অনেকের লেখা। আমার প্রিয় ঘনাদার সব লেখাও পেয়ে গেলাম। আর পেলাম পুরনো দিনের হেমেন্দ্র কুমার রায়ের লেখা। সে সবই একটার পর একটা পড়া শুরু করেছি। এরই মাঝে দু চারটা ঘরের কাজে হাত না লাগালে গৃহিনীর গোসা আন্দাজ করতে পারি। ফলে এই মুক্ত সময়ে লেগে পড়েছি, ঘর দোর পরিস্কার করার কাজে। কোথাও ঝুল জমে ছিল অনেকদিন। বইয়ের তাকগুলোতে হাত পড়েনি বহুদিন। বইয়ের গন্ধ শোকার সুযোগটাও কাজে লাগাচ্ছি । আসলে বইয়ের গন্ধ একটা অদ্ভুত প্রশান্তি এনে দেয় মনের গভীরে। এসবের মাঝেই আমাদের মতো প্রফেশনের মানুষদের ঘরে বসেই কাজ করতে হচ্ছে। সেই কাজে মাঝে মাঝেই বসতে হচ্ছে কম্পিউটারের সামনে। ফলে অনেকটা সময় কেটে যাচ্ছে কাজের তাগিদে। কিন্তু যাদের সেই দায়িত্ব নেই তাদের পক্ষে টিভি দেখে আর মোবাইলে হুমড়ি খেয়ে সময় কাটানো সত্যিই কষ্টকর। তাই আনেকেই ছুটে বেরিয়ে যাচ্ছেন পাড়ার মোড়ে। অবশ্য পুলিশের ব্যাটনের ঘাও পড়ছে অনেকের পেছনে। আর তাই ফেসবুকে একটা মিম ঘুরে বেড়াচ্ছে তাতে লেখা হয়েছে, ”বাড়িতে বসে যদি গা ব্যাথা করে তবে বাইরে বেরিয়ে ম্যাসাজ করিয়ে নিতে পারেন। পুলিশ আপনার সেবার সর্বদা প্রস্তুত।” এই ধরণের মজা-মসকরা ছড়িয়ে রয়েছে ফেবু ও হোয়াটসঅ্যাপে। তবে লকডাউনের সময়ে এই বিচ্ছিন্নতার ভুবনে থেকেও যে লাভের কড়ি গোনা যায় সেকথা মনে করিয়ে দিযেছেন এক মনরোগের চিকিৎসক বন্ধু। তিনি বললেন, এখন সবাই সুখী গৃহকোণে দিন কাটাচ্ছেন। নানা কারণে তৈরি পারিবারিক ফাটল মেরামতির অপূর্ব সুযোগ এসেছে সকলের সামনে। আর করোনার সামাজিক দূরত্ব আসলে মনের দূরত্ব কমানোর এবং ভুল বোঝাবুঝি দূরে রেখে মিলেমিশে থাকার সত্যকে আবিষ্কার করার ছন্দে আমাদের পৌঁছে দিয়েছে। তবে গৃহিনীকে এসব কথা জানাতেই তিনি হেঁকে উঠলেন, খিটিমিটিটা যে বেড়ে গেছে সেই খবর কি অন্যরা রাখেন।