শেষের পাতা

ভারত বিচ্ছিন্ন পশ্চিমবঙ্গ পুরো লকডাউন

কলকাতা প্রতিনিধি

২৫ মার্চ ২০২০, বুধবার, ৮:৩০ পূর্বাহ্ন

ভারত এখন বিচ্ছিন্ন বিশ্ব থেকে। সমস্ত সড়ক, ট্রেন ও বিমান যোগাযোগ বন্ধ। বন্ধ সমস্ত আন্তর্জাতিক সীমান্তও। এরই মধ্যে করোনা সংক্রমণ প্রতিহত করতে লকডাউন করে দেশের মানুষকে ঘরের মধ্যে থাকতে বলা হয়েছে। সোমবার থেকেই শুরু হয়েছে এই লকডাউন। মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটির ৩২টি রাজ্য ও  কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫৭১টি  জেলায় সম্পূর্ণ লকডাউন চালু করা হয়েছে আংশিক ভাবে করা হয়েছে আরো ৫৮টি জেলায়। ভারতের অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গেও গতকাল বিকাল ৫টা থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে। তবে রাজ্য সরকার লকডাউনের সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার এক  ঘোষণায় জানিয়েছেন, রাজ্যে লকডাউনের মেয়াদ ৩১শে মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এবং তা বলবৎ করা হয়েছে গোটা রাজ্যেই। আগে শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্যে আংশিকভাবে লকডাউন করা হয়েছিল।  ফলে সারা দেশ এক প্রকার স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। জরুরি পরিষেবা ছাড়া সবই বন্ধ রয়েছে। তবে মানুষ এখনো সচেতন না হওয়ায় প্রশাসনকে আইনি ব্যবস্থার পথে যেতে হচ্ছে। দেশটির অনেক জায়গা থেকেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে রিপোর্ট দিয়েছে যে, মানুষ লকডাউন অমান্য করে রাস্তায় নামছে। সেই পরিস্থিতির  মোকাবিলা করতে রাজ্য সরকারগুলোকে প্রয়োজনে কারফিউ জারি করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মঙ্গলবার সকালেও দেশের বিভিন্ন শহরে অনেক অত্যুৎসাহী মানুষকে ইতস্তত ঘুরতে বা বাজারে যেতে দেখা গিয়েছে। নির্দেশ অমান্য করে যেসব বাজার ও দোকানপাট খোলা রাখা হয়েছিল সেগুলোকে অবশ্য পুলিশ বন্ধ করে দিয়েছে। লকডাউন বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই সারা দেশে ৯০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮, ২৬৯ ও ২৭০ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই সংখ্যা বাড়ছে বলে জানা যাচ্ছে। কলকাতার পুলিশ সুপার অনুজ শর্মা টুইট করে জানিয়েছেন, আইন ভাঙার দায়ে কলকাতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৫৫ জনকে। পাঞ্জাবে লকডাউনকে কার্যকর করতে কারফিউ জারি করেছে সরকার। মহারাষ্ট্রেও কারফিউ জারি হয়েছে। দিল্লিসহ অনেক রাজ্যে ১৪৪ ধারাও জারি করা হয়েছে। দিল্লির পুলিশ কমিশনার এস এন শ্রীবাস্তব লকডাউনের আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ভারতে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। অবশ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মাইকেল জে রায়ান মঙ্গলবার বলেছেন, বিশ্বব্যাপী মহামারি বা প্যানডেমিক করোনা ভাইরাস সুদক্ষভাবে  মোকাবিলা করার পূর্ণ যোগ্যতা রয়েছে ভারতের।
এদিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই কলকাতাসহ রাজ্যের সব পথঘাট সুনসান চেহারা নিয়েছে। নেই সরকারি বা বেসরকারি কোনো গণপরিবহনের ব্যস্ত যাতায়াত।  শুধু জরুরি পরিষেবার গাড়ি এবং তাদের কর্মী ছাড়া আর কোনো যানবাহন শহরের পথে দেখা যায়নি। বসেনি বেশির ভাগ বাজারও। তবে কিছু বাইক, সাইকেল ও রিকশা পথে দেখা গেলেও পুলিশ তাদের সতর্ক করে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। ছুটির মেজাজে পথের মোড়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন যারা তাদেরও সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। পথের ধারের চায়ের দোকানগুলোকে বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। শহরজুড়ে সর্বত্র চলছে পুলিশের নজরদারি। কলকাতার টালা পার্ক, খিদিরপুর, পার্ক সার্কাস, ইএম বাইপাসসহ শহরের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চলছে পুলিশের চেকিং। জেলা শহরগুলোতেও চলছে পুলিশের উচ্চপদাধিকারীদের নেতৃত্বে টহল। তবে সরকারের তরফে বার বার বলা হয়েছে খুব প্রয়োজন না হলে বাড়ি থেকে যেন  কেউ না বেরোন,  কিন্তু তারপরেও  যে ভাবে দু’চারটি খোলা বাজারে মানুষ ঘেঁষাঘেঁষি করে জিনিসপত্র কিনছেন তাতে সামাজিক দূরত্ব কতটা মানা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status