শেষের পাতা

ভাঙছে মিলনমেলা

মুনির হোসেন

২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শনিবার, ৮:২৯ পূর্বাহ্ন

ছুটির ঘণ্টা বাজছে, তাই শেষলগ্নে ভিড় বেড়েছে। ঠাঁই নেই অমর একুশে গ্রন্থমেলার দুই প্রান্তে। সময় নষ্ট নয়, তালিকা করে বই কিনছেন দর্শনার্থীরা। দেখতে দেখতে মাস পার। আবার কোলাহলপূর্ণ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নামবে  সুনসান নিরবতা। ফের এক বছরের দীর্ঘ অপেক্ষা, কিছুটা কষ্ট হলেও মেনে নিতে হবে বইপ্রেমীদের। তাইতো শেষ সময়ে তালিকা ধরে বই কেনায় সময় ব্যয় করছেন তারা। বড়দের সঙ্গে এসময় হাজির হয়েছেন শিশু-কিশোররাও। সকলের হাতে বই। কেউ যেন খালি হাতে বাড়ি ফিরতে চাইছেন না। গতকাল সকাল থেকে গ্রন্থমেলা ছিল শিশু-কিশোরদের দখলে। বিকেলে ঢল নামে সর্বস্তরের মানুষের। তাইতো এদিন বেচাবিক্রিও ছিল ঢের বেশি। খুশি প্রকাশকরা। সকলের একটাই চাওয়া আগামীবার আরো সুন্দর ও নতুনত্ব নিয়ে উপস্থিত হবে গ্রন্থমেলা। যে মিলনমেলা বাঙালির জাত চেনাবে আরো শক্তিশালী করে। মাসব্যাপী গ্রন্থমেলার আজ শেষদিন। ছুটির দিন হওয়ায় মেলার দ্বার খুলবে সকাল ১১টায়। চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। লেখক, প্রকাশক ও দর্শনার্থীদের আশা শেষদিনে মেলা আরো প্রাণবন্ত, আরো কোলাহলপূর্ণ হবে। বেচাবিক্রিও হবে আরো বেশি। এবারের মেলা নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন সকলে। কেমন ছিলো এবারের গ্রন্থমেলা, জানতে চাইলে বেসরকারি চাকিরজীবী রহমত উল্লাহ বলেন, ভালোই কেটেছে। এবারের মেলা অন্য যেকোনবারের মেলাকে ছাড়িয়ে গেছে। অনেক স্পেস নিয়ে করা হয়েছে। খোলামেলা পরিবেশ। মানসম্মত অনেকগুলো বই এসেছে বলেও শুনেছি। নিতাই চন্দ্র নামে আরেক দর্শনার্থী বলেন, মেলা অনেক গোছালো ছিল। এটা আমার এবার ভালো লেগেছে। অনেক তরুণ লেখক উঠে আসছে এ মেলার মাধ্যমে। আশা করি সাহিত্য চর্চার এ ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। কাকলী প্রকাশনীর স্বত্তাধিকারী নাসির উদ্দিন সেলিম বলেন, পুরো মাসজুড়েই দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল। সকলে বই কেনার চেষ্টা করেছেন। এটা ভালো দিক। আমরা ব্যবসায়িকভাবে ভালো একটি গ্রন্থমেলা পার করেছি। কোন ধরণের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়নি। যেটি খুব ভালো লেগেছে। ঐতিহ্য প্রকাশনীর কর্ণধার আরিফুর রহমান নাঈম বলেন, বেচাবিক্রি ভালো ছিল। আশা করি, সামনের দিনে আরো সাফল্য যোগ হবে গ্রন্থমেলার। এদিকে পাঠক এবারের গ্রন্থমেলার সুনাম করলেও মানসম্মত বই মেলায় আসার ব্যপারে বাংলা একাডেমির আরো শক্ত অবস্থান প্রত্যাশা করেন। তারা বলেন, মেলায় আমরা দেখেছি অনেক নিন্মমানের প্রতিষ্ঠানকেও স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আবার অনেকে যেনতেন বই মেলায় নিয়ে আসছেন। আমরা মনে করি, বাংলা একাডেমি চাইলে মানসম্মত বই বাজারে আসতে বাধ্য। তাদের আরো কঠোর হতে হবে, যেন কেউ যেন তেন বই মেলায় না আনে। বই প্রকাশের ক্ষেত্রেও কিছু নীতিমালা থাকা উচিত বলে জানান অনেকেই। স্টুডেন্ট ওয়েজ এর স্বত্তাধিকারী জানান, সার্বিকভাবে মেলা ভালো হয়েছে। এদিকে, গতকাল মেলায় দেখা যায়, মেলার দুই প্রান্তে তিল পরিমাণ ঠাঁই নেই। যারাই মেলায় এসেছেন তারা সময় নষ্ট না করে বই কেনায় মনেযোগী হয়েছেন। স্টলগুলোর বিক্রয়কর্মীরাও এদিন ব্যস্ত সময় পার করেছেন। অন্যদিকে, অনেক লেখককেও এদিন মেলায় দেখা গেছে। তারা ভক্তদের আবদার মেটাতে গিয়ে অটোগ্রাফ আর সেলফিতে সময় পার করেছেন। লেখক, প্রকাশক ও দর্শনার্থীদের ভিড়ে মিলনমেলায় পরিণত হয় গ্রন্থমেলা।

ছবি: জীবন আহমেদ
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status