দেশ বিদেশ

মুজিববর্ষে ভারতের প্রতিনিধিত্ব বাদ দেয়ার কথা চিন্তাও করা যায় না: ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শুক্রবার, ৯:২৬ পূর্বাহ্ন

মুজিববর্ষে ভারতের প্রতিনিধিত্ব বাদ দেয়ার কথা চিন্তাও করা যায় না বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন,আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সাহায্যকারী ও সবচেয়ে বড় মিত্র দেশ ভারত। গতকাল সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা মুজিববর্ষে ভারতকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সাহায্যকারী ও মিত্র দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ করছি। তাদের দেশের অভ্যন্তরে কোনো বিষয়ে যে সংঘাত, সংঘর্ষ, রাজনৈতিক বিরোধ, এটা চিন্তা করে তো আমরা তাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি না। আর তাদের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে আমাদের এখানে কোনো বিরোধ প্রতিক্রিয়া হলে সে বিষয়ে আমরা ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই সমাধান করতে পারি। কিন্তু এ রকম একটা অনুষ্ঠানে সবচেয়ে বড় মিত্র দেশ ভারত এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সাহায্যকারী দেশ হিসেবে সে দেশের প্রতিনিধিত্ব বাদ দেয়ার কথা তো চিন্তাও করা যায় না। মুজিববর্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। তাকে না আনার জন্য ক্যাম্পেইন হচ্ছে-এ বিষয়টি সরকার কিভাবে দেখছে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের দেশেও রাজনীতিতে বিভিন্ন বিষয়ে ভিন্ন মত আছে। এ নিয়ে সরকার আর বিরোধী দলের মধ্যে সম্পর্কটা সুখকর নয়। কিন্তু তাতে অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাবই আসার কথা নয়। এখানে মুজিববর্ষ বাংলাদেশের জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের বিষয়। অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছি। এখানে মুজিববর্ষে ভারতকে আমন্ত্রণ করার মূল কারণ হচ্ছে, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত হচ্ছে সর্বোচ্চ সাহায্যদানকারী দেশ। ভারত আমাদের শরণার্থীদের সাহায্য করেছে। ভারতই আমাদের অস্ত্র চালানো ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছে। সর্বোপরি, মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ কমান্ডে মুক্তিযুদ্ধের শেষ অংশে আমরা বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলাম। এখানে আমাদের রক্তের সঙ্গে ভারতের রক্ত মিশে আছে। কাজেই ভারতকে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানো তো অকৃতজ্ঞতার পরিচয়। পাশাপাশি অসম্পূর্ণ একটা বিষয় হিসেবে থেকে যায়। দিল্লির সহিংসতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন,আমাদের দেশে সরকারি কোনো বিষয়ে সরকারের সঙ্গে বিরোধীদলের ভিন্নমত নিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপ, ভায়োলেন্স, এসব হয়ে থাকে। এটাতো ওই দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এ নিয়ে আমরা কেন অযথা নাক গলাতে যাবো? তাদের ইন্টারনাল সমস্যার সমাধান তারাই খুঁজে নেবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলা ২০০ কোটি না ২ কোটি এটা বিষয় না। দুর্নীতি হয়েছে কি না সেটা দেখার বিষয়। তিনি বলেন,দুদক স্বাধীন না হলে সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা টার্গেটে কেন? ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মুজিববর্ষে বিদেশি অতিথিরাও আসবেন। এ জন্য যাবতীয় প্রস্তুতির কাজ এগিয়ে চলছে। মন্ত্রী বলেন, এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন আমাদের খুব জরুরি বিষয়। এটা যোগাযোগের জন্যও খুব প্রয়োজন। মুজিববর্ষে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিস্থলে অনেকেই যাবেন।

নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নে উভয় পক্ষকে ছাড় দেয়ার আহ্বান
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নে সাংবাদিক ও মালিক উভয় পক্ষকে কিছু ছাড় দিতে হবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের স্বার্থকেও আমাদের দেখতে হবে। আবার যারা মালিক পক্ষ সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা দেবে, তাদের সঙ্গেও কিছুটা বোঝাপাড়ার বিষয় আছে। তা না হলে তো সমাধান হবে না। এটা সবাইকে বুঝতে হবে একটি বাস্তবভিত্তিক মনমানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। এখানে যুক্তির বিচারে চলতে হবে, যার যার অবস্থানে অনড় থাকলে এ সমস্যার সমাধান হবে না। এটা হলো বাস্তবতা। তিনি বলেন, নবম ওয়েজবোর্ডের বিষয়ে আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন মন্ত্রিসভা কমিটি ফাইনালি দেখে একটা সিদ্ধান্ত দিয়েছে, একটা অ্যাডজাস্টমেন্টের (মানিয়ে নেয়া) চেষ্টা করেছে। এখন সাংবাদিক ইউনিয়ন তার বিরুদ্ধে আবার রিট করেছে। তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের যে কোনো ব্যাপারে বাস্তববাদী হতে হবে। কারণ আপনি নেবেন কিন্তু যিনি দেবেন তিনি দেবেন কি-না, তারাও আবার তাদের পক্ষ থেকে মামলা করেছে। এটার একটা সমাধান খুঁজতে হবে। সমাধানের জন্য রিয়ালিস্টিক অ্যাপ্রোচ থেকে আমরা চেষ্টা করেছি, দু-একটা বিষয়ে কম্প্রোমাইজ অ্যান্ড অ্যাডজাস্টমেন্ট করে একটা ব্যালেন্স করার জন্য। কিন্তু সেটা তো সাংবাদিকদের মূল স্টেকহোল্ডাররা মানতে চান না। আবার যেটা হয়েছে সেটা মালিক পক্ষ মানতে চান না। ফলে মাঝখানে একটা ব্যালেন্সের দরকার আছে। সেটা না হলে বিষয়টি আলোর মুখ দেখবে না। সমাধানের পথ পাবে না। সেখানে আমাদের করণীয় কী? তিনি বলেন, এ বিষয়ে শুধু বৈঠক করলে হবে না। সাংবাদিকদের নিজেদের মধ্যেও বসতে হবে। কারণ, আপনারা যারা বেতন নেবেন আর যারা বেতন দেবেন তাদের সঙ্গে একটা কম্প্রোমাইজ করতে হবে। তাদের সঙ্গে পয়েন্ট অব নোটে গেলে, সেখানে বিষয়টা কোথায় দাঁড়ায় এখন আপনারা বিষয়টা পদে পদে টের পাচ্ছেন। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, এখানে সাংবাদিকদের স্বার্থটা খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। তাদের রুটি-রুজির বিষয় এর সঙ্গে জড়িত। কাজেই আমার মনে হয় সমস্যাটি সমাধানে উভয় পক্ষকে বাস্তবভিত্তিক পথ খুঁজতে হবে। সাংবাদিকদেরও বাঁচতে হবে মালিকদেরও স্বার্থ রক্ষা করে তাদের ইন্ডাস্ট্রি চালাতে হবে। এই দুটি বিষয়ের মধ্যে একটা বোঝাপড়া করতে হবে বলে আমি এটাই মনে করি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status