এক্সক্লুসিভ
বাংলাদেশে ৬ মাস কাটানোয় ব্রিটেনে বিপাকে ড. নাজিয়া
মানবজমিন ডেস্ক
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শুক্রবার, ৮:৫২ পূর্বাহ্ন
এক অভিনব অভিবাসন সংক্রান্ত আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়েছেন যুক্তরাজ্যে বসবাসরত এক কন্যা সন্তানের জননী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ড. নাজিয়া হোসেন। ২৫শে ফেব্রুয়ারি এ খবর দিয়েছে বিলাতি দৈনিক দি গার্ডিয়ান। যুক্তরাজ্যের ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছিলেন তিনি। ২০০৯ সালের কথা। ওইসময় তিনি বাংলাদেশে শ্রেণি এবং লিঙ্গ পরিচিতি নিয়ে গবেষণা করতে ছয় মাস ব্যয় করেছিলেন, তখন তার কোনো ধারণা ছিল না, একদশক পরে, ব্রিটিশ হোম অফিস ব্রিটেনে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য তার আবেদন প্রত্যাখ্যান করার জন্য ১১ বছর আগের বাংলাদেশ সফরটিকেই ব্যবহার করবে। লিঙ্গ, জাতি এবং ধর্ম সম্পর্কে তিনি একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত। এখন ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক। ‘তিনি পুরোপুরি হতবাক’ হয়েছিলেন যখন তার অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্রিটিনে থাকার অনুমতি (আইএলআর) লাভের আবেদন গত বছর প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল ১০ বছরের আবেদনকালে তিনি দেশের বাইরে বড় বেশি সময় ব্যয় করেছেন। যদিও তার পিএইচডি গবেষণার স্বার্থে প্রয়োজনীয় গবেষণা এবং সেজন্য পর্যাপ্ত সময় অনুপস্থিতি থাকাটা বৈধ এবং তার অনুকূলে তিনি সুস্পষ্ট প্রমাণ জমা দিয়েছিলেন।
নাজিয়া হোসেনের স্বামীকে আইএলআর ভিসা দেয়া হয়েছিল, যা তাদের তিন বছরের কন্যাকে ব্রিটিশ পাসপোর্ট লাভে সাহায্য করেছিল।
‘হোম অফিস তাদের চিঠিতে বলেছে যে, আমি অত্যন্ত যোগ্য এবং সহজেই বাংলাদেশে আবাস গড়ে তুলতে পারবো। তারা সঠিক যে আমি খুব যোগ্য। কিন্তু আমি তো এই দেশে থাকাটাকেই বেছে নিয়েছি।’
নাজিয়া আরো বলেন, ‘আমার যোগ্যতা অর্জন করা এই দেশ থেকেই এবং আমি গত ১০ বছর এই দেশের তরুণদের পড়াতে ব্যয় করেছি।’
গত জানুয়ারিতে বরিস জনসন শীর্ষ গবেষক ও তার টিমের জন্য নতুন একটি গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসা ঘোষণা করেছিলেন। বলা হয়েছিল ব্রেক্সিট-পরবর্তী ব্রিটেন ‘বিশ্বের সবচেয়ে মেধাবীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।’
তবে এখন শিক্ষাবিদরা হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন যে, অভিবাসন বিধিমালা বিষয়ে হোম অফিসের আক্রমণাত্মক প্রয়োগ বিদেশি গবেষকদের যুক্তরাজ্যে আসা থেকে বিরত রাখবে।
নাজিয়ার অভিজ্ঞতা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। গত নভেম্বরে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন ভারতীয় সমাজবিজ্ঞানী ডা. আসিয়া ইসলাম জানতে পেরেছিলেন যে, যুক্তরাজ্যে এক দশক গবেষণা করার পরেও তার আইএলআর প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল এবং তার ক্ষেত্রেও একই কারণ দেখানো হয়।
হোম অফিস তাকেও বলেছিল যে, তিনি ব্রিটেনের বাইরে অনেক বেশি দিন অতিবাহিত করেছেন। যদিও কেমব্রিজ তার এই দাবিটি সমর্থন করেছে যে, তার পিএইচডি গবেষণার জন্য দিল্লিতে তাকে এক বছর সময় কাটাতে হবে।
আসিয়া ইসলামের ঘটনাটি সহকর্মী শিক্ষাবিদদের ক্ষুব্ধ করেছে, যারা বলেছেন যে হোম অফিস বুঝতে পারে না গবেষণায় কতটা কী সময় লাগতে পারে।
১৮৩ জন অধ্যাপকসহ দুই হাজার বিশ্ববিদ্যালয় স্টাফ তার বিরুদ্ধে নেয়া ব্যবস্থার প্রতিবাদ জানিয়ে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।
তবে এটি কোনো নতুন ট্রেন্ড নয়। গার্ডিয়ান জানতে পেরেছে যে, ২০১৮ সালে হোম অফিস ক্যামেরুন বংশোদ্ভূত লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. এলসা জেকংয়ের আইএলআর প্রত্যাখ্যান করেছিল। কারণ তিনি ২০১৫ সালে গিনিতে ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবায় কাটিয়েছিলেন। যদিও সে জন্য তিনি রানীর পদক পেয়েছিলেন এবং দক্ষিণ আফ্রিকাতে সংক্রামক রোগের নমুনা সংগ্রহে তাকে সময় দিতে হয়েছিল। এবং সেটাও ছিল তার পিএইচডি’র জন্যই। তিনি আদালতে আপিল করেছিলেন। এবং বিচারক ওই সিদ্ধান্তটি উল্টে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জো গ্রেডি বলেছেন: ‘এটা হাস্যকর যে, বৈধ গবেষণা কার্যক্রমে প্রবাসীদের ইউকে’র বাইরে যাওয়ার অধিকার অস্বীকার করা হচ্ছে। বিদেশ ভ্রমণ সম্পর্কে নিয়ন্ত্রিত নিয়মগুলো সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচারী।’
নাজিয়ার পিএইচডি তত্ত্বাবধায়ক, কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন প্রো-ভিসি প্রফেসর ক্রিস্টিনা হফস বলেছেন, বাংলাদেশের ফিল্ডওয়ার্ক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি বলেন, ‘ডক্টর নাজিয়া এমন এক নতুন প্রমাণ খুঁজে পেয়েছিলেন যা বাংলাদেশি মহিলাদের প্রথাগত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানায়।’
‘এই ধরনের অভিজ্ঞতাবাদী তদন্ত আমাদের বিশ্বব্যাপী নারীদের পরিবর্তিত অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও উন্নতভাবে বোঝার সুযোগ এনে দেয়। এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এটি বর্ণবাদকে চ্যালেঞ্জ জানানোর পক্ষে প্রমাণ সরবরাহ করে।’
নাজিয়াকে চিনেন এমন অন্যান্য শিক্ষাবিদদের মতো, অধ্যাপক হফসও তার সঙ্গে হোম অফিসের এমন ব্যবহারে ক্ষুব্ধ এবং যুক্তরাজ্যে গবেষণার জন্য এর প্রভাব সম্পর্কে উদ্বিগ্ন।
‘বিশ্বকে আরও উন্নত স্থানে পরিণত করার জন্য তিনি অসাধারণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এক অভূতপূর্ব গবেষক।’
ব্রিস্টলের স্কুল অব সোসোলজি, রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক স্টাডিজের গবেষক অধ্যাপক থেরেস ও’টুল বলেছেন, নাজিয়া এখন সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি ফাউন্ডেশন কোর্সের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পাশাপাশি মুসলিম নারীদের নেতিবাচক ভাবমূর্তিকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য বিভিন্ন মহিলা গ্রুপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন।
‘এই সরকার বলেছে যে, আমরা বিশ্বব্যাপী উন্মুক্ত এবং গ্রহণযোগ্য। তবে নাজিয়াদের মতো সত্যই মহান গবেষকরা এখানে তাদের জীবন গড়ে তুলতে পারেন। কিন্তু তাদের জন্য এ রকম বাধা তৈরি করাটা আসলে একটি পুরোপুরি ভুল বার্তা দেয়। তিনি বলেছিলেন।
নাজিয়া বলেছেন যে, তিনি হোম অফিসের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কারণ তার আইনজীবী তাকে সতর্ক করেছিলেন যে, যদিও তার মামলাটির সত্যিকারের জোরালো ভিত্তি আছে। কিন্তু এটি সুরাহায় লম্বা সময় লাগবে। তাই তিনি ওভার স্টের ঝুঁকি নেন। এবং কাজ চালাতে অযোগ্য হয়ে পড়বেন।
‘একাডেমিয়া ক্ষেত্রে চাকরি পাওয়া সহজ নয় এবং আমি আমার চাকরিটি হারাতে চাইনি।’
‘এবং আমি সত্যিই ভয় পেয়েছিলাম। আপিলে যদি আমি কোনো কারণে হেরে যাই, তবে আমাকে কি দেশ ছাড়তে হবে? আমার মেয়ে এখানে আছে এবং যখন আমি চিঠি পেয়েছি, তখন সে ছিল মাত্র তিন বছরের’
এখন তাকে দুই বছরের নির্ভরশীল ভিসা দেয়া হয়েছে। সেজন্য তিনি তার স্বামীর আবাস ভিসাকেই ভিত্তি ধরেছিলেন। কেবল গত বছরেই এই পরিবারটি ইমিগ্রেশন ফি বাবদ ১১ হাজার পাউন্ডের বেশি ব্যয় করেছে।
আমরা এখানে থাকাকালীন ভিসা এবং এনএইচএস সারচার্জে আমরা যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছি, তা দিয়ে আমরা একটি বাড়ি কিনতে পারতাম। এটি অর্জন করা অবশ্যই আমাদের জন্য এখন অনেক দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়ার বিষয় বলে মনে হচ্ছে’।
তিনি আরো বলেন, ‘আপনি যখন অব্যাহত অনিশ্চয়তার অবস্থায় বাস করছেন, তখন আপনি ভবিষ্যতের জন্য সত্যি কোনো পরিকল্পনা করতে পারবেন না’।
হোম অফিস বলেছে: ‘আমরা আন্তর্জাতিক শিক্ষাবিদদের স্বাগত জানাই এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা খাতে তাদের অবদানকে স্বীকৃতি জানাই। অভিবাসন সংক্রান্ত সমস্ত অ্যাপ্লিকেশনগুলো ইমিগ্রেশনের বিধি অনুসারে তাদের পৃথক যোগ্যতা এবং প্রাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বিবেচিত হয়।’
নাজিয়া হোসেনের স্বামীকে আইএলআর ভিসা দেয়া হয়েছিল, যা তাদের তিন বছরের কন্যাকে ব্রিটিশ পাসপোর্ট লাভে সাহায্য করেছিল।
‘হোম অফিস তাদের চিঠিতে বলেছে যে, আমি অত্যন্ত যোগ্য এবং সহজেই বাংলাদেশে আবাস গড়ে তুলতে পারবো। তারা সঠিক যে আমি খুব যোগ্য। কিন্তু আমি তো এই দেশে থাকাটাকেই বেছে নিয়েছি।’
নাজিয়া আরো বলেন, ‘আমার যোগ্যতা অর্জন করা এই দেশ থেকেই এবং আমি গত ১০ বছর এই দেশের তরুণদের পড়াতে ব্যয় করেছি।’
গত জানুয়ারিতে বরিস জনসন শীর্ষ গবেষক ও তার টিমের জন্য নতুন একটি গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসা ঘোষণা করেছিলেন। বলা হয়েছিল ব্রেক্সিট-পরবর্তী ব্রিটেন ‘বিশ্বের সবচেয়ে মেধাবীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।’
তবে এখন শিক্ষাবিদরা হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন যে, অভিবাসন বিধিমালা বিষয়ে হোম অফিসের আক্রমণাত্মক প্রয়োগ বিদেশি গবেষকদের যুক্তরাজ্যে আসা থেকে বিরত রাখবে।
নাজিয়ার অভিজ্ঞতা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। গত নভেম্বরে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন ভারতীয় সমাজবিজ্ঞানী ডা. আসিয়া ইসলাম জানতে পেরেছিলেন যে, যুক্তরাজ্যে এক দশক গবেষণা করার পরেও তার আইএলআর প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল এবং তার ক্ষেত্রেও একই কারণ দেখানো হয়।
হোম অফিস তাকেও বলেছিল যে, তিনি ব্রিটেনের বাইরে অনেক বেশি দিন অতিবাহিত করেছেন। যদিও কেমব্রিজ তার এই দাবিটি সমর্থন করেছে যে, তার পিএইচডি গবেষণার জন্য দিল্লিতে তাকে এক বছর সময় কাটাতে হবে।
আসিয়া ইসলামের ঘটনাটি সহকর্মী শিক্ষাবিদদের ক্ষুব্ধ করেছে, যারা বলেছেন যে হোম অফিস বুঝতে পারে না গবেষণায় কতটা কী সময় লাগতে পারে।
১৮৩ জন অধ্যাপকসহ দুই হাজার বিশ্ববিদ্যালয় স্টাফ তার বিরুদ্ধে নেয়া ব্যবস্থার প্রতিবাদ জানিয়ে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।
তবে এটি কোনো নতুন ট্রেন্ড নয়। গার্ডিয়ান জানতে পেরেছে যে, ২০১৮ সালে হোম অফিস ক্যামেরুন বংশোদ্ভূত লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. এলসা জেকংয়ের আইএলআর প্রত্যাখ্যান করেছিল। কারণ তিনি ২০১৫ সালে গিনিতে ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবায় কাটিয়েছিলেন। যদিও সে জন্য তিনি রানীর পদক পেয়েছিলেন এবং দক্ষিণ আফ্রিকাতে সংক্রামক রোগের নমুনা সংগ্রহে তাকে সময় দিতে হয়েছিল। এবং সেটাও ছিল তার পিএইচডি’র জন্যই। তিনি আদালতে আপিল করেছিলেন। এবং বিচারক ওই সিদ্ধান্তটি উল্টে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জো গ্রেডি বলেছেন: ‘এটা হাস্যকর যে, বৈধ গবেষণা কার্যক্রমে প্রবাসীদের ইউকে’র বাইরে যাওয়ার অধিকার অস্বীকার করা হচ্ছে। বিদেশ ভ্রমণ সম্পর্কে নিয়ন্ত্রিত নিয়মগুলো সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচারী।’
নাজিয়ার পিএইচডি তত্ত্বাবধায়ক, কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন প্রো-ভিসি প্রফেসর ক্রিস্টিনা হফস বলেছেন, বাংলাদেশের ফিল্ডওয়ার্ক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি বলেন, ‘ডক্টর নাজিয়া এমন এক নতুন প্রমাণ খুঁজে পেয়েছিলেন যা বাংলাদেশি মহিলাদের প্রথাগত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানায়।’
‘এই ধরনের অভিজ্ঞতাবাদী তদন্ত আমাদের বিশ্বব্যাপী নারীদের পরিবর্তিত অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও উন্নতভাবে বোঝার সুযোগ এনে দেয়। এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এটি বর্ণবাদকে চ্যালেঞ্জ জানানোর পক্ষে প্রমাণ সরবরাহ করে।’
নাজিয়াকে চিনেন এমন অন্যান্য শিক্ষাবিদদের মতো, অধ্যাপক হফসও তার সঙ্গে হোম অফিসের এমন ব্যবহারে ক্ষুব্ধ এবং যুক্তরাজ্যে গবেষণার জন্য এর প্রভাব সম্পর্কে উদ্বিগ্ন।
‘বিশ্বকে আরও উন্নত স্থানে পরিণত করার জন্য তিনি অসাধারণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এক অভূতপূর্ব গবেষক।’
ব্রিস্টলের স্কুল অব সোসোলজি, রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক স্টাডিজের গবেষক অধ্যাপক থেরেস ও’টুল বলেছেন, নাজিয়া এখন সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি ফাউন্ডেশন কোর্সের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পাশাপাশি মুসলিম নারীদের নেতিবাচক ভাবমূর্তিকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য বিভিন্ন মহিলা গ্রুপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন।
‘এই সরকার বলেছে যে, আমরা বিশ্বব্যাপী উন্মুক্ত এবং গ্রহণযোগ্য। তবে নাজিয়াদের মতো সত্যই মহান গবেষকরা এখানে তাদের জীবন গড়ে তুলতে পারেন। কিন্তু তাদের জন্য এ রকম বাধা তৈরি করাটা আসলে একটি পুরোপুরি ভুল বার্তা দেয়। তিনি বলেছিলেন।
নাজিয়া বলেছেন যে, তিনি হোম অফিসের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কারণ তার আইনজীবী তাকে সতর্ক করেছিলেন যে, যদিও তার মামলাটির সত্যিকারের জোরালো ভিত্তি আছে। কিন্তু এটি সুরাহায় লম্বা সময় লাগবে। তাই তিনি ওভার স্টের ঝুঁকি নেন। এবং কাজ চালাতে অযোগ্য হয়ে পড়বেন।
‘একাডেমিয়া ক্ষেত্রে চাকরি পাওয়া সহজ নয় এবং আমি আমার চাকরিটি হারাতে চাইনি।’
‘এবং আমি সত্যিই ভয় পেয়েছিলাম। আপিলে যদি আমি কোনো কারণে হেরে যাই, তবে আমাকে কি দেশ ছাড়তে হবে? আমার মেয়ে এখানে আছে এবং যখন আমি চিঠি পেয়েছি, তখন সে ছিল মাত্র তিন বছরের’
এখন তাকে দুই বছরের নির্ভরশীল ভিসা দেয়া হয়েছে। সেজন্য তিনি তার স্বামীর আবাস ভিসাকেই ভিত্তি ধরেছিলেন। কেবল গত বছরেই এই পরিবারটি ইমিগ্রেশন ফি বাবদ ১১ হাজার পাউন্ডের বেশি ব্যয় করেছে।
আমরা এখানে থাকাকালীন ভিসা এবং এনএইচএস সারচার্জে আমরা যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছি, তা দিয়ে আমরা একটি বাড়ি কিনতে পারতাম। এটি অর্জন করা অবশ্যই আমাদের জন্য এখন অনেক দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়ার বিষয় বলে মনে হচ্ছে’।
তিনি আরো বলেন, ‘আপনি যখন অব্যাহত অনিশ্চয়তার অবস্থায় বাস করছেন, তখন আপনি ভবিষ্যতের জন্য সত্যি কোনো পরিকল্পনা করতে পারবেন না’।
হোম অফিস বলেছে: ‘আমরা আন্তর্জাতিক শিক্ষাবিদদের স্বাগত জানাই এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা খাতে তাদের অবদানকে স্বীকৃতি জানাই। অভিবাসন সংক্রান্ত সমস্ত অ্যাপ্লিকেশনগুলো ইমিগ্রেশনের বিধি অনুসারে তাদের পৃথক যোগ্যতা এবং প্রাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বিবেচিত হয়।’