বাংলারজমিন

‘উন্নত যন্ত্র কৃষিতে বিপ্লব ঘটাবে’

বগুড়া প্রতিনিধি

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, রবিবার, ৮:৩৬ পূর্বাহ্ন

আলু বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের মাটি জলবায়ু আলু উৎপাদনের উপযোগী। বাংলাদেশের জনসংখ্যা দিনদিন বাড়ছে বিপরীতে কমছে কৃষি জমি। অল্প জমি থেকে ক্রমবর্ধমান জনগণের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা মেটানোর জন্য প্রয়োজন অল্প সময়ে বেশি পরিমাণ খাদ্য উৎপাদন। এর জন্য ভালো বীজ-সার সেচ যথেষ্ট নয়, পাশাপাশি প্রয়োজন উন্নত কৃষি যন্ত্রপাতি। ইদানীং কৃষিতে নানা কারণে প্রয়োজনীয়সংখ্যক শ্রমিকের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। সেজন্য কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহার এখন সময়ের দাবি। শ্রমিক চাহিদার দিক বিবেচনা করেই বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ফার্ম মেশিনারি অ্যান্ড পোস্ট হারভেস্ট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিট আলুু চাষের যন্ত্র উদ্ভাবন করেছে। এই যন্ত্রের সাহায্যে স্বল্প সময়ে অধিক জমিতে আলু রোপণ এবং উত্তোলন করতে পারবে কৃষকরা। বৃহস্পতিবার বগুড়ার শিবগঞ্জের কৃষকদের এই যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ে মাঠ দিবস করে কন্দাল ফসল গবেষণা উপ-কেন্দ্র বগুড়া। মাঠ দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, কৃষি গবেষণা ফাউডেশনের কমিউনিকেশন স্পেশালিস্ট (গবেষণা) ড. নাসরিন আক্তার। সভাপতিত্ব করেন  ড. কন্দাল ফসল গবেষণা উপ-কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. জুলফিকার হায়দার প্রধান। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সরজমিন গবেষণা বিভাগ বগুড়ার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শহিদুর আলম, ফার্ম মেশিনারি অ্যান্ড পোস্ট হারভেস্ট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ গাজীপুরের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মাদ এরশাদুল হক প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত অতিথিবৃন্দ এই যন্ত্রের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে বলেন, আলুর শীতকালীন ও স্বল্পমেয়াদি ফসল। অল্প সময়ের মধ্যে আলু রোপণ করতে হবে। এই উদ্দেশ্য সামনে রেখে এবং বাংলাদেশের কৃষকদের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা বিবেচনা করে এফএমপিই (ফার্ম মেশিনারি অ্যান্ড পোস্ট হারভেস্ট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং) বিভাগ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট আলুসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদনের কয়েকটি লাগসই কৃষি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন করেছে। তারা আরো বলেন, কৃষিতে নিয়োজিত শ্রমিক সংখ্যা দিন দিন কমছে। ২০০২ সালে কৃষিতে ৫১.৭ শতাংশ শ্রমিক নিয়োজিত ছিল। সেই সংখ্যা কমে ২০১৮ সালে ৪০.২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ১ হেক্টর জমির আলু যেখানে হাতে লাগাতে ৬৭ জন শ্রমিকের প্রয়োজন হয় সেখানে যন্ত্র দ্বারা লাগাতে মাত্র ৪ জন শ্রমিক লাগে। হাতে আলু লাগালে হেক্টরে খরচ হয় ১৬ হাজার ৯০০ টাকা। যন্ত্র দ্বারা আলু রোপণ করতে খরচ হয় হেক্টরপ্রতি মাত্র ৪ হাজার ৮০০ টাকা। যন্ত্র ব্যবহারে ৯৭% শ্রমিক ও ৬৭% আলু রোপণ খরচ কমে যায়। যে কৃষকের পাওয়ার টিলার রয়েছে তিনি মাত্র ৫৫ হাজার টাকা দিয়ে যন্ত্রটি কিনে ব্যবহার করতে পারেন। যন্ত্রটি চালাতে ঘণ্টায় মাত্র দেড় লিটার থেকে দুই লিটার ডিজেল লাগে। সোয়া ঘণ্টা সময় লাগে। যন্ত্রটি দিয়ে দিনে ৬ থেকে ৮ বিঘা জমিতে আলু রোপণ করা যেতে পারে। বারি আলু রোপণ আলুর উৎপাদন যন্ত্র রাজশাহী, বগুড়া, যশোর ও দেশের অন্যান্য এলাকায় গবেষণা মাঠে ও কৃষক মাঠে ব্যবহার শুরু করেছে। ছাদে চুক্তিভুক্ত যন্ত্র প্রস্তুতকারীরা ইতিমধ্যেই যন্ত্রগুলো তৈরি ও বাজারজাতকরণ শুরু করেছে। আবিষ্কৃত এই যন্ত্র কৃষিতে বিপ্লব ঘটাবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status