এক্সক্লুসিভ
সাক্ষাৎকারে মানারাত ইউনিভার্সিটির ভিসি
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ জ্ঞান সৃষ্টি করা
পিয়াস সরকার
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বুধবার, ৭:০৪ পূর্বাহ্ন
ড. মো. নজরুল ইসলাম। সম্প্রতি মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভিসি হিসেবে যোগদান করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির চ্যান্সেলর প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ড. নজরুলকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন। ড. মো. নজরুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচিত সভাপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এ ছাড়াও তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল অনুষদের ডিন, রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও ভিসির প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ড. মো. নজরুল ইসলাম ইউনিভার্সিটি অব দিল্লি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পাশাপাশি ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশন, দিল্লি থেকে জুনিয়র রিসার্স ফেলোশিপ (জেআরএফ) ও সিনিয়র রিসার্স ফেলোশিপ (এসআরএফ) ডিগ্রি অর্জন করেন। তার বহু গবেষণাকর্ম দেশি-বিদেশি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি দেশে ও দেশের বাইরে বহু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। তার লেখা উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ হলো ‘রাসায়নিক গতিবিদ্যা ও আলোক রসায়ন’, ‘মৌলিক জৈব রসায়ন’ ও ‘মৌলিক অজৈব রসায়ন’। মানবজমিনের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা, গবেষণা ইত্যাদি নানা বিষয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন পিয়াস সরকার ।
প্রশ্ন: দীর্ঘদিন ধরে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। হঠাৎ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। কীভাবে দেখছেন?
ড. মো. নজরুল ইসলাম: আমি দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমি জানি কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় চলে। এই বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর নিয়ম সম্বন্ধে ধারণা থাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালনে খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না। সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলিক পার্থক্য অনেক। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণ। তবে আমি বলবো যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় শুধু জ্ঞান বিতরণ সেটি বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গতা দেয় না। আগে জ্ঞান সৃষ্টি করতে হবে তারপর বিতরণ করতে হবে। যেহেতু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় জনগণের টাকায় চলে সেহেতু একটা সুবিধা আছে।
প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলিক কাজ জ্ঞান সৃষ্টি করা। বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেক্ষেত্রে কেমন করছে বলে আপনি মনে করেন?
ড. মো. নজরুল ইসলাম: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব অর্থায়নে চলে তাই জ্ঞান সৃষ্টির সুযোগ কিছুটা কম। অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান সৃষ্টির জন্য অর্থ ব্যয় করতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয় তখনই পূর্ণাঙ্গ হবে যখন জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ যোগ্য গ্রাজুয়েট তৈরি করা। যাতে তারা দেশের জন্য দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট কোনো গণ্ডি নেই। শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ জ্ঞান দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ।
প্রশ্ন: দেশের সার্বিক উন্নয়ন ধারায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান। বিশেষ করে মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়কে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
ড. মো. নজরুল ইসলাম: দেশের উন্নয়নে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যথেষ্ট অবদান রাখছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ততটা পরিপূর্ণ নয়। সরকারের আনুকুল্য ছাড়াই যতটুকু অবদান রেখে যাচ্ছে তা উল্লেখযোগ্য। মানারাত বিশ্ববিদ্যালয় একটু ভিন্ন। কারণ সকল বিশ্ববিদ্যালয় নৈতিকতার কথা বলে। সেখানে মানারাত বিশ্ববিদ্যালয় এটাকে স্লোগান হিসেবে নিয়েছে। ভালো ও যোগ্য নাগরিকের পাশাপাশি একজন যোগ্য মানুষ দরকার। যতই ভালো গ্রাজুয়েট হোক না কেন ভালো মানুষ না হলে দেশের কোনো কল্যাণ হবে না। এদিক থেকে মানারাত ভিন্ন।
প্রশ্ন: সরকার আপনাকে ৪ বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছে। আপনি ৪ বছর পর মানারাতকে কোথায় দেখতে চান?
ড. মো. নজরুল ইসলাম: মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের শীর্ষ ৫ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসতে চাই। শীর্ষ ৫-এ আনার জন্য প্রথমেই মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে চাই। যাতে একজন যোগ্য মানুষ হয়ে গড়ে উঠে দেশের জন্য ভালো কিছু করতে পারে। দ্বিতীয়ত মেধাবী শিক্ষক ও মানসম্মত যেসব উপকরণ প্রয়োজন সব করা হবে। সেই সঙ্গে গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এ ছাড়াও এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরাও আকৃষ্ট হন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করতে পারেন। আমরা মেধাবী শিক্ষার্থী নিয়ে এসে যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। ফলে অনুপ্রাণিত হয়ে আরো মেধাবী শিক্ষার্থী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে।
প্রশ্ন: মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিবাচক দিকগুলো কী?
ড. মো. নজরুল ইসলাম: এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিবাচক দিক হচ্ছে, মানারাত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও বাণিজ্যিক নয়। এটি পরিচালিত হয় ট্রাস্টের অর্থে। তারা এখান থেকে কোনো লাভ নেন না। শিক্ষার্থী আনার জন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয় অনেক জোরালো ক্যাম্পেইন করছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যাচ্ছে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। তবে আমরা চাই হাঁকডাক হকারি না করে ভালো শিক্ষার্থী এখানে আসুক। তিনি আরো বলেন, মানারাত বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই। এখানে কোনো শিক্ষার্থী এসে বখে যাবে না। তাদের পূর্ণাঙ্গ সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি দেয়া হচ্ছে নিরাপত্তা। এখানে ছেলেদের থেকে মেয়েদের সংখ্যাটা বেশি কারণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সন্তোষজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের চরিত্র হচ্ছে গবেষণা করা। মানারাতের জন্য গবেষণার পরিবেশ তৈরি সৃষ্টি করতে চাই। আমাদের যেসব ল্যাবরেটরি আছে সেগুলো আরো উন্নত করতে চাই। গঠন করতে চাই একটি গবেষণা সেল।
প্রশ্ন: মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন হওয়ার ব্যাপারে আপনি উদ্যোগ নেবেন কি?
ড. মো. নজরুল ইসলাম: মানারাতে দীর্ঘদিন সমাবর্তন হচ্ছে না। খুব শিগগিরই এটি শুরু হবে। আশা করছি ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার গুরুত্ব কতটা?
ড. মো. নজরুল ইসলাম: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেশ গঠন ও উন্নয়নের জন্য অবদান রাখছে। এই অবদান বৃদ্ধির জন্য চাই গবেষণা। এর জন্য প্রয়োজন অর্থ। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য অর্থ দেয়া প্রয়োজন। বিশ্বের অনেক দেশে গবেষণার অনেক বাজেট থাকে আমাদের দেশে সেটা নাই। আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক গবেষণার দিকে গুরুত্বসহকারে নজর দেয়া উচিত।
এক নজরে মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ২০০১ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে। সরকারের বেঁধে দেয়া আইন অনুযায়ী তারা আশুলিয়ার খাগান এলাকায় স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ ছাড়াও গুলশানে রয়েছে তাদের নিজস্ব ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রাজুয়েট পর্যায়ে ৭ ও পোস্টগ্রাজুয়েট পর্যায়ে ২টি প্রোগ্রাম চালু আছে। তাদের বর্তমানে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। বিবিএ, ইংলিশ, সিএসই, ফার্মেসি, ইইই, এলএলবি, ও জার্নালিজমে বর্তমানে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। খুব শিগগিরই আরো কিছু বিভাগ চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ৫ থেকে শত ভাগ পর্যন্ত ছাড়। শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে উন্নতমানের গ্রন্থাগার, ফি ্রইন্টারনেট সুবিধা, কমনরুম, নামাজ ঘর, ক্যান্টিনসহ ফ্রি যাতায়াত সুবিধা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওবেসাইট:wwwmanarat.ac.bd
এ ছাড়াও তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল অনুষদের ডিন, রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও ভিসির প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ড. মো. নজরুল ইসলাম ইউনিভার্সিটি অব দিল্লি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পাশাপাশি ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশন, দিল্লি থেকে জুনিয়র রিসার্স ফেলোশিপ (জেআরএফ) ও সিনিয়র রিসার্স ফেলোশিপ (এসআরএফ) ডিগ্রি অর্জন করেন। তার বহু গবেষণাকর্ম দেশি-বিদেশি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি দেশে ও দেশের বাইরে বহু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। তার লেখা উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ হলো ‘রাসায়নিক গতিবিদ্যা ও আলোক রসায়ন’, ‘মৌলিক জৈব রসায়ন’ ও ‘মৌলিক অজৈব রসায়ন’। মানবজমিনের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা, গবেষণা ইত্যাদি নানা বিষয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন পিয়াস সরকার ।
প্রশ্ন: দীর্ঘদিন ধরে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। হঠাৎ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। কীভাবে দেখছেন?
ড. মো. নজরুল ইসলাম: আমি দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমি জানি কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় চলে। এই বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর নিয়ম সম্বন্ধে ধারণা থাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালনে খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না। সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলিক পার্থক্য অনেক। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণ। তবে আমি বলবো যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় শুধু জ্ঞান বিতরণ সেটি বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গতা দেয় না। আগে জ্ঞান সৃষ্টি করতে হবে তারপর বিতরণ করতে হবে। যেহেতু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় জনগণের টাকায় চলে সেহেতু একটা সুবিধা আছে।
প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলিক কাজ জ্ঞান সৃষ্টি করা। বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেক্ষেত্রে কেমন করছে বলে আপনি মনে করেন?
ড. মো. নজরুল ইসলাম: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব অর্থায়নে চলে তাই জ্ঞান সৃষ্টির সুযোগ কিছুটা কম। অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান সৃষ্টির জন্য অর্থ ব্যয় করতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয় তখনই পূর্ণাঙ্গ হবে যখন জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ যোগ্য গ্রাজুয়েট তৈরি করা। যাতে তারা দেশের জন্য দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট কোনো গণ্ডি নেই। শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ জ্ঞান দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ।
প্রশ্ন: দেশের সার্বিক উন্নয়ন ধারায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান। বিশেষ করে মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়কে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
ড. মো. নজরুল ইসলাম: দেশের উন্নয়নে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যথেষ্ট অবদান রাখছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ততটা পরিপূর্ণ নয়। সরকারের আনুকুল্য ছাড়াই যতটুকু অবদান রেখে যাচ্ছে তা উল্লেখযোগ্য। মানারাত বিশ্ববিদ্যালয় একটু ভিন্ন। কারণ সকল বিশ্ববিদ্যালয় নৈতিকতার কথা বলে। সেখানে মানারাত বিশ্ববিদ্যালয় এটাকে স্লোগান হিসেবে নিয়েছে। ভালো ও যোগ্য নাগরিকের পাশাপাশি একজন যোগ্য মানুষ দরকার। যতই ভালো গ্রাজুয়েট হোক না কেন ভালো মানুষ না হলে দেশের কোনো কল্যাণ হবে না। এদিক থেকে মানারাত ভিন্ন।
প্রশ্ন: সরকার আপনাকে ৪ বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছে। আপনি ৪ বছর পর মানারাতকে কোথায় দেখতে চান?
ড. মো. নজরুল ইসলাম: মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের শীর্ষ ৫ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসতে চাই। শীর্ষ ৫-এ আনার জন্য প্রথমেই মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে চাই। যাতে একজন যোগ্য মানুষ হয়ে গড়ে উঠে দেশের জন্য ভালো কিছু করতে পারে। দ্বিতীয়ত মেধাবী শিক্ষক ও মানসম্মত যেসব উপকরণ প্রয়োজন সব করা হবে। সেই সঙ্গে গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এ ছাড়াও এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরাও আকৃষ্ট হন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করতে পারেন। আমরা মেধাবী শিক্ষার্থী নিয়ে এসে যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। ফলে অনুপ্রাণিত হয়ে আরো মেধাবী শিক্ষার্থী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে।
প্রশ্ন: মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিবাচক দিকগুলো কী?
ড. মো. নজরুল ইসলাম: এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিবাচক দিক হচ্ছে, মানারাত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও বাণিজ্যিক নয়। এটি পরিচালিত হয় ট্রাস্টের অর্থে। তারা এখান থেকে কোনো লাভ নেন না। শিক্ষার্থী আনার জন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয় অনেক জোরালো ক্যাম্পেইন করছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যাচ্ছে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। তবে আমরা চাই হাঁকডাক হকারি না করে ভালো শিক্ষার্থী এখানে আসুক। তিনি আরো বলেন, মানারাত বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই। এখানে কোনো শিক্ষার্থী এসে বখে যাবে না। তাদের পূর্ণাঙ্গ সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি দেয়া হচ্ছে নিরাপত্তা। এখানে ছেলেদের থেকে মেয়েদের সংখ্যাটা বেশি কারণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সন্তোষজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের চরিত্র হচ্ছে গবেষণা করা। মানারাতের জন্য গবেষণার পরিবেশ তৈরি সৃষ্টি করতে চাই। আমাদের যেসব ল্যাবরেটরি আছে সেগুলো আরো উন্নত করতে চাই। গঠন করতে চাই একটি গবেষণা সেল।
প্রশ্ন: মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন হওয়ার ব্যাপারে আপনি উদ্যোগ নেবেন কি?
ড. মো. নজরুল ইসলাম: মানারাতে দীর্ঘদিন সমাবর্তন হচ্ছে না। খুব শিগগিরই এটি শুরু হবে। আশা করছি ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার গুরুত্ব কতটা?
ড. মো. নজরুল ইসলাম: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেশ গঠন ও উন্নয়নের জন্য অবদান রাখছে। এই অবদান বৃদ্ধির জন্য চাই গবেষণা। এর জন্য প্রয়োজন অর্থ। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য অর্থ দেয়া প্রয়োজন। বিশ্বের অনেক দেশে গবেষণার অনেক বাজেট থাকে আমাদের দেশে সেটা নাই। আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক গবেষণার দিকে গুরুত্বসহকারে নজর দেয়া উচিত।
এক নজরে মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ২০০১ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে। সরকারের বেঁধে দেয়া আইন অনুযায়ী তারা আশুলিয়ার খাগান এলাকায় স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ ছাড়াও গুলশানে রয়েছে তাদের নিজস্ব ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রাজুয়েট পর্যায়ে ৭ ও পোস্টগ্রাজুয়েট পর্যায়ে ২টি প্রোগ্রাম চালু আছে। তাদের বর্তমানে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। বিবিএ, ইংলিশ, সিএসই, ফার্মেসি, ইইই, এলএলবি, ও জার্নালিজমে বর্তমানে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। খুব শিগগিরই আরো কিছু বিভাগ চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ৫ থেকে শত ভাগ পর্যন্ত ছাড়। শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে উন্নতমানের গ্রন্থাগার, ফি ্রইন্টারনেট সুবিধা, কমনরুম, নামাজ ঘর, ক্যান্টিনসহ ফ্রি যাতায়াত সুবিধা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওবেসাইট:wwwmanarat.ac.bd