শেষের পাতা
ওদের ছিনতাইয়ের টার্গেট ছোট যানবাহন
স্টাফ রিপোর্টার
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার, ৯:২৫ পূর্বাহ্ন
প্রথমে তারা টার্গেট এবং নির্ধারিত গন্তব্য ঠিক করে যানবাহনসহ চালককে নিয়ে যায়। যেখানে আগে থেকেই তাদের অন্য সহযোগীরা ওত পেতে থাকে। নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছা মাত্র চালককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে যানবাহন নিয়ে নিরাপদে সটকে পড়ে। সর্বশেষ গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি আশুলিয়ার কাঠগড়া পালোয়ান পাড়ার মোল্লা বাড়ির বাঁশঝাড় এলাকা থেকে মো. শামীম বেপারী বাবু (২৮) নামে এক পাঠাও চালককে খুন করে। এরপর তার মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। ওই হত্যাকান্ডের ঘটনায় মো. শাহিন বেপারী (৫৮) বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, মামলা নং ৫২। ওই ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর র?্যাব-১ এসব তথ্য জানায়। জানাযায় ঘটনার দিন দুপুর আড়াইটার দিকে রামপুরা ফরাজি হাসপাতালের সামনে থেকে একজন যাত্রী নিয়ে মোহাম্মদপুর এলাকায় যাওয়ার কথা বলে মোটরসাইকেল নিয়ে বাসা থেকে বের হন শামীম বেপারী। গভীর রাতেও ভিকটিম বাসায় ফিরে না আসায় তার পরিবারের সদস্যরা মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকে টেলিভিশন সংবাদের মাধ্যমে হত্যার বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।এই হত্যা কান্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে র?্যাব-১ তাৎক্ষণিকভাবে ছায়া তদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে র্যাব-১ এর একটি দল আশুলিয়া থানাধীন জামগড়ার রূপায়ন মাঠ এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো মামুনুর রশিদ (২২), মাহবুবুর রহমান (২০) এবং মোমিন মিয়া (২০)। এই সময় আসামিদের কাছ থেকে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও হত্যাকারীর রক্তমাখা প্যান্ট উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে র?্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেন, তারা একটি সংঘবদ্ধ পেশাদার ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। টাকা-পয়সা,মোবাইল ফোন কিংবা স্বর্ণালঙ্কার নয়,ওদের টার্গেট মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, সিএনজি, অটোরিকশার মতো ছোট যানবাহন ছিনতাই করা। ছিনতাইয়ের জন্য কখনও যাত্রীবেশে, কখনো বিয়ের জন্য গাড়ি ভাড়া করতো তারা। এমনকি ছিনতাইয়ের ক্ষেত্রে জখম কিংবা হত্যার মতো ঘটনা ঘটাতেও তারা পিছপা হতো না। গ্রেপ্তার মামুনুর রশিদকে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, সে পেশায় একজন গার্মেন্টকর্মী। প্রায় পাঁচ বছর ধরে এ পেশায় নিয়োজিত এবং ছিনতাইকারীর এ চক্রটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন,গ্রেপ্তার মাহবুবুর রহমান জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে,জামগড়া এলাকায় তার একটি চায়ের দোকান আছে। তার চায়ের দোকানে বসেই তারা সবধরনের পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন ভিকটিমকে সেই প্রথম ছুরি দিয়ে আঘাত করে। চক্রটি পরিকল্পিতভাবে ছিনতাই করে আসছিল। শামীমকে হত্যার পর ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ভেঙে ফেলে এবং নিজেদের মোবাইল ফোনও বন্ধ রাখে। জ্যাকেটে রক্ত লেগে যাওয়ায় ঘটনাস্থলে খুলে ফেলে দেয় এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরিটিও ঘটনাস্থলে ফেলে দেয়।