খেলা

বিসিবি-জিম্বাবুয়ে প্রস্তুতি ম্যাচ শুরু আজ ইমন বলেন- এটা চাপ নয়, সুযোগ

ইশতিয়াক পারভেজ

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার, ৯:১৬ পূর্বাহ্ন

ব্যক্তিগত ২৫ রানে মাঠ ছেড়ে বের হয়ে গেলেন পারভেজ হোসেন ইমন। কারণ ব্যাথায় ক্রিজে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলেন না। কিন্তু দলের প্রয়োজনে সেই অসহনীয় যন্ত্রণা নিয়েই ফিরে এলেন ক্রিজে। আরো ২২ রানের আবদান রাখলেন স্কোর বোর্ডে। হ্যাঁ, তার এই লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের পথ খুঁজে পায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ভারতকে হারিয়ে ইতিহাস রচনা করেই দেশে ফেরে যুবারা। দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের ছয় নায়ক আজ মাঠে নামবেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে। বিকেএসপিতে আকবর আলীরা খেলবেন জিম্বাবুয়ে একাদশের বিপক্ষে। আর এটাকে নিজেদের এগিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ হিসেবেই দেখছেন নোয়াখালীর ছেলে ইমন। গতকাল দৈনিক মানবজমিন-এর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে ইমন জানান নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা। সেই কথোপকথনের মূল অংশ তুলে ধরা হলো-

প্রশ্ন: এবারের দেশে ফেরাটা ব্যতিক্রম ছিল?
ইমন: সত্যি, খেলার জন্য বিদেশ থেকে আগেও দেশে ফিরে এসেছি। এমনকি ঢাকা থেকে  খেলা শেষ করে নিজের বাড়ি নোয়াখালীতেও অনেকবার গিয়েছি। কিন্তু এবারের ফেরাটা অন্যরকম। যার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। কত অপরিচিত মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি তা বলে শেষ করতে পারবো না। যা সারা জীবন আমার মনে থাকবে।

প্রশ্ন: ক্রিকেট খেলা শুরু কবে থেকে?
ইমন: সেই ক্লাস ফোর থেকেই ক্রিকেট খেলি। আগে এলাকাতে টেপ টেনিসে খেলতাম। পরে বড় ভাইয়া আমাকে ইস্পাহানি ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি করে দেয়। সেখান থেকে বিকেএসপিতে আসি। শুরুতে বাবা চাননি আমি ক্রিকেটার হই কিন্তু ভাইয়ের দারুণ সাপোর্ট ছিল। পড়ে বাবাও সাপোর্ট দেন। মূলত পরিবারের আস্থা ছিল আমার ওপর। এজন্য আমি এত দূর আসতে পেরেছি। এখন যে সাফল্য পেয়েছি তাতে আমার গোটা পরিবারই দারুণ খুশি। তাদের আনন্দটা ভাষায় বোঝাতে পারবো না।

প্রশ্ন: জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে খেলবেন, এটা চাপ মনে করেন?
ইমন: জিম্বাবুয়ে একাদশেতো ওদের জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাই খেলবে। তাদের বিপক্ষে খেলাটাকে আমি চাপ হিসেবে ভাবছি না। বরং আমি মনে করি এটি দারুণ সুযোগ সামনে এগিয়ে যাওয়ার। আমার কাজ হলো বাড়তি কোন প্রেসার না নিয়ে নিজের যে দায়িত্ব সেটি পালন করা। সত্যি কথা সুযোগটা কাজে লাগাতে চাই। এমন নয় যে এটি খেলেই জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখছি। বিষয়টা এমন, আমি যে চ্যালেঞ্জ নিতে শিখেছি তার পরীক্ষাই ভাবছি এটিকে।

প্রশ্ন: বিশ্বকাপে ইনজুরি আর ব্যথা নিয়ে মাঠে ফিরে আসার পেছনে কী কাজ করেছে?
ইমন:  যদি সহজ করে বলি তাহলে সেটি দেশের জন্য ভালবাসা ও দলের প্রতি দায়িত্ব। সেই সময় ব্যথার চেয়ে বেশি মনে হয়েছে আমাকে দলের জন্য খেলতে হবে, দেশের জন্য লড়াই করতে হবে। সেটিই আমি করেছি।

প্রশ্ন: নিজের আউট হওয়াটাকে কিভাবে দেখেন?
ইমন:  খুব বাজে ছিল। আমি সেই সময় শট সিলেকশনে ভুল করে ফেলেছি। এভাবে খেলা উচিত হয়নি। তবে শিক্ষাও হয়েছে যদি এমন মুহূর্ত আসে আবার তাহলে এই ভুল করবো না। আমার উচিত ছিল খেলা শেষ করে আসা। কারণ, আমার এই ভুলের জন্য দল হারতেও পারতো।

প্রশ্ন: এই বিশ্বকাপ কী শেখালো আপনাদের?
ইমন:  আমরা  বিশেষ করে যদি আমার কথা বলেন তাহলে এই বিশ্বকাপ আমাদের শিখিয়েছে কিভাবে লড়াই করে জিততে হয়। আমরা শিখেছি কোন পরিস্থিতিতে কিভাবে খেলতে হয়। যা আমাদের সারা জীবন কাজে দেবে।

প্রশ্ন: মাঠে ভীষণ চাপ ছিল, বিশেষ করে ভারতের ক্রিকেটারদের স্লোজিং। সেগুলো কিভাবে সামলেছেন?
ইমন:  ওরা (ভারতীয় ক্রিকেটার) সারাক্ষণই বিরক্ত করছিল। নানা ভাষায় কথা বলছিল। সেই সময় আমার একটা কথাই মনে হয়েছে ওরা যাই করুক ওদের মুখের ওপর শুধুই হাসবো। তা করে দেখেছি সেটিই কাজে এসেছে। আমাদের রাগাতে এসে উলটো ওরাই মেজাজ হারিয়েছে।

প্রশ্ন: এত  সম্মান এত প্রাপ্তিকে নিজেদের জন্য চাপ মনে করেন?
ইমন: এটি সত্যি যে আমরা দেশে ফিরে খুব সম্মান পাচ্ছি। আমাদের জন্য বিসিবি পুরস্কারও ঘোষণা করেছে। কিন্তু আমি মনে করি না এগুলো আমাদের জন্য চাপ। তারা যে ২১ পর্যন্ত আমাদের দেখভাল করবে তা আমাদের জীবনটাই পাল্টে দেবে বলে বিশ্বাস করি। আমরাও চাই খেলার মধ্যে থাকতে। সেটিই করেছে বিসিবি। আর যারা সম্মান করছে তারা আমাদের অনুপ্রেরণা। আমাদের উচিত তাদের দেয়া সম্মান রক্ষা করা। এমন ভাবে নিজেদের এগিয়ে নিতে চাই যেন হারিয়ে না যাই বা পথচ্যুত না হই।

প্রশ্ন: লক্ষ্য কী?
ইমন:  আমি দেখেছি যে দেশের জন্য খেললে আলাদা কোনো লক্ষ্যের প্রয়োজন হয় না। তাই যতদিন ক্রিকেট খেলবো তা যেন দেশের সম্মানের জন্য হয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status