বিশ্বজমিন

বায়ু দূষণে প্রতিদিন বৈশ্বিক লোকসান হয় ৮০০ কোটি ডলার

মানবজমিন ডেস্ক

১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বুধবার, ৫:৪৩ পূর্বাহ্ন

প্রতি বছর জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে সৃষ্ট বায়ু দূষণে প্রতিদিন ৮০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬৭ হাজার কোটি টাকার বেশি) ক্ষতির শিকার হচ্ছে বৈশ্বিক অর্থনীতি। এ পরিমাণ বৈশ্বিক জিডিপির ৩.৩ শতাংশ। ২০১৮ সালে বায়ু দূষণের কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতির লোকসান হয়েছিল ২ লাখ ৯০ হাজার কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৪৬ লাখ কোটির বেশি)। এ ক্ষতির বোঝা সবচেয়ে বেশি বইতে হয় চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতকে। এ ছাড়া, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর কারণে বিশ্বজুড়ে অকাল মৃত্যু হয় ৪০ লাখের বেশি মানুষের। পরিবেশ বিষয়ক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (সিআরইএ) ও গ্রিনপিস সাউথইস্ট এশিয়ার যৌথ এক প্রতিবেদনে এমনটা বলা হয়েছে। বায়ু দূষণে বৈশ্বিক অর্থনীতির ক্ষতি বিষয়ক এটাই প্রথম এমন গবেষণা প্রতিবেদন। এতে বিশেষ করে তেল, গ্যাস ও কয়লা পোড়ানোয় যে ক্ষতি হয় সেদিকে জোর দেয়া হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানোয় সৃষ্ট বায়ু দূষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার চীনের মূল ভ’খ-, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। প্রতি বছর এই তিন দেশের ক্ষতি হয় যথাক্রমে ৯০ হাজার কোটি ডলার, ৬০ হাজার কোটি ডলার ও ১৫ হাজার কোটি ডলার। এ ছাড়া জার্মানি, জাপান ও রাশিয়ার প্রতি বছর ক্ষতি হয় যথাক্রমে ১৪ হাজার কোটি ডলার, ১৩ হাজার কোটি ডলার ও ৬ হাজার ৮০০ কোটি ডলার, ৬ হাজার ৬০ কোটি ডলার।

গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ার সময় বাতাসে মিশে যাওয়া ক্ষতিকর কণাগুলোর কারণে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে অকাল মৃত্যু হয় ৪৫ লাখ মানুষের। এর মধ্যে চীনে অকাল মৃত্যুর সংখ্যা ১৮ লাখ ও ভারতে ১০ লাখ। নতুন এই তথ্যের সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দেয়া তথ্যের মিল রয়েছে। ডব্লিউএইচও অনুসারে, বায়ু দূষণ সংশ্লিষ্ট কারণে বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর মারা যান আনুমানিক ৪২ লাখ মানুষ। এর মধ্যে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ফুসফুস ক্যান্সার ও শ্বাসযন্ত্রে প্রকট রোগ সংক্রমণের মারা যান অনেকে।
গ্রিনপিস ইস্ট এশিয়ার বিশুদ্ধ বাতাস বিষয়ক ক্যা¤েপইনার মিনও সন বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে হওয়া বায়ু দূষণ আমাদের স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির জন্য হুমকি। এতে লাখো মানুষের প্রাণ যায়। লাখো কোটি ডলার ক্ষতি হয়। তিনি বলেন, কিন্তু এ সমস্যার সমাধান কিভাবে করতে হয় তা আমরা জানি: নবায়নযোগ্য জ্বালানী উৎস ব্যবহার করে, ডিজেল ও পেট্রোলচালিত মোটরগাড়ি বাদ দিয়ে ও গণপরিবহণ ব্যবহার চালু করে।

গবেষকরা জীবাশ্ম জ্বালানির কারণে হওয়া বায়ু দূষণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ক্ষতি ও অকাল মৃত্যুর হিসাব করেছেন দূষকের ধরন ও দেশ হিসেবে। প্রতি বছর নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইডের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি ৩৫ হাজার কোটি ডলার ও ৩৮ হাজার কোটি ডলার ক্ষতির শিকার হয়। সাধারণত গাড়ি ও বৈদ্যুতিক প্রকল্প চালাতে ব্যবহৃত জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ার সময় এ পদার্থটি নির্গত হয়। এখন পর্যন্ত জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ায় নির্গত সবচেয়ে ক্ষতিকর দূষক পদার্থ হচ্ছে ক্ষুদ্র বস্তুকণা (পিএম ২.৫)। এর জন্য প্রতি বছর আর্থিক ক্ষতি হয় ২ লাখ কোটি ডলার। পিএম ২.৫ এর কারণে প্রতি বছর পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ৪০ হাজার শিশু প্রাণ হারায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status