অনলাইন
দালাল আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছিল জাসদ, আলটিমেটাম দিয়েছিলেন মওলানা ভাসানী
অনলাইন ডেস্ক
২০২০-০২-০৬
১৬ই ডিসেম্বর নতুন গজিয়ে ওঠা নকল মুক্তিযোদ্ধারা সংখ্যায় ছিলেন সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধাদের চেয়ে অনেক বেশি। তাদের বাড়াবাড়ি আচরণের কারণে মুক্তিযুদ্ধ অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। একাত্তরে অনেকেই ভারতে গিয়েছিলেন, যাদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সামান্যতম সম্পর্ক ছিল না। তাদের অনেকেই দেশে ফিরে অবরুদ্ধ মানুষের দেশপ্রেম নিয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেন। তারা এমন একটা ধারণা তৈরির চেষ্টা করেন যে, যারা সীমান্ত পাড়ি দিয়েছেন, তারা সবাই ‘মুক্তিযোদ্ধা’, আর যারা দেশের ভেতরে ছিলেন তারা সবাই ‘রাজাকার’।
লেখক, গবেষক, মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন আহমদ তার সদ্য প্রকাশিত ‘বেলা-অবেলা: বাংলাদেশ ১৯৭২-১৯৭৫’ বইয়ে এসব কথা লিখেছেন। বইটি প্রকাশ করেছে বাতিঘর। মহিউদ্দিন আহমদ লিখেছেন, ৬ ফেব্রুয়ারি (১৯৭২) সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকায় সম্পাদক এনায়েতুল্লাহ খান ‘সিক্সটি ফাইভ মিলিয়ন কলাবেরটরস’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ ছাপলেন। দেশটা যেন দুই ভাগ হয়ে গেল।
১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি ‘রাষ্ট্রপতির ৮ নং আদেশ’ নামে ‘বাংলাদেশ যোগসাজশকারী বা দালাল (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশ, ১৯৭২’ জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর অনুরোধে এই আইনের খসড়া তৈরি করে দিয়েছিলেন প্রবীণ আইনজীবী খান বাহাদুর নাজিমউদ্দিন আহমদ। পাকিস্তান বাহিনীর সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে সরকার ১৫ জন প্রখ্যাত ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়। এদের মধ্যে ছিলেন নুরুল আমীন, হামিদুল হক চৌধুরী, খান আবদুস সবুর, মাহমুদ আলী, ওয়াহিদুজ্জামান খান, খাজা খয়েরউদ্দিন, কাজী আবদুল কাদের, অধ্যাপক গোলাম আজম, শাহ আজিজুর রহমান,এ কিউ এম শফিকুল ইসলাম, আবদুল জব্বার খদ্দর, রাজা ত্রিদিব রায়, অধ্যাপক শামসুল হক, ওবায়দুল্লাহ মজুমদার ও অং শু প্রু চৌধুরী। এক সপ্তাহ পরে দালালদের আরও বড় একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। এই আইনের মাধ্যমে কতজনকে গ্রেপ্তার ও সাজা দেওয়া হয়েছিল তার সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। পুলিশ বাহিনী দুর্বল থাকায় এবং দেশের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ আওয়ামী লীগের হাতে থাকায় দালাল আইনের আবরণে অনেকেই নিজেদের স্বার্থ হাসিলের সুযোগ পেয়ে যান। আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ হাজার ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এবং প্রায় সমানসংখ্যক ব্যক্তি পলাতক ছিলেন বলে ধারণা করা হয়।
দালাল আইনের বিরুদ্ধে অনেকেই সোচ্চার ছিলেন। জাসদসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এ সম্পর্কিত রাষ্ট্রপতির ৮ নং আদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছিল। মওলানা ভাসানী ১৯৭৩ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে দালাল আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে আলটিমেটামও দিয়েছিলেন। ৩০ নভেম্বর (১৯৭৩) সরকার দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক ব্যক্তিদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে। এরফলে ৩৪ হাজার ৪০০ জন আটক ব্যক্তি জেল থেকে ছাড়া পান। এদের অনেকেই মুসলীম লীগ, পিডিপি, জামায়াতে ইসলামী ও নেজামে ইসলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। সাধারণ ক্ষমা ঘোষণায় অবশ্য উল্লেখ করা হয়েছিল যে, যাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই বা অভিযোগের বিচারাধীন নন, কেবল তারাই সাধারণ ক্ষমার সুবিধা পাবেন।
লেখক, গবেষক, মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন আহমদ তার সদ্য প্রকাশিত ‘বেলা-অবেলা: বাংলাদেশ ১৯৭২-১৯৭৫’ বইয়ে এসব কথা লিখেছেন। বইটি প্রকাশ করেছে বাতিঘর। মহিউদ্দিন আহমদ লিখেছেন, ৬ ফেব্রুয়ারি (১৯৭২) সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকায় সম্পাদক এনায়েতুল্লাহ খান ‘সিক্সটি ফাইভ মিলিয়ন কলাবেরটরস’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ ছাপলেন। দেশটা যেন দুই ভাগ হয়ে গেল।
১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি ‘রাষ্ট্রপতির ৮ নং আদেশ’ নামে ‘বাংলাদেশ যোগসাজশকারী বা দালাল (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশ, ১৯৭২’ জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর অনুরোধে এই আইনের খসড়া তৈরি করে দিয়েছিলেন প্রবীণ আইনজীবী খান বাহাদুর নাজিমউদ্দিন আহমদ। পাকিস্তান বাহিনীর সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে সরকার ১৫ জন প্রখ্যাত ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়। এদের মধ্যে ছিলেন নুরুল আমীন, হামিদুল হক চৌধুরী, খান আবদুস সবুর, মাহমুদ আলী, ওয়াহিদুজ্জামান খান, খাজা খয়েরউদ্দিন, কাজী আবদুল কাদের, অধ্যাপক গোলাম আজম, শাহ আজিজুর রহমান,এ কিউ এম শফিকুল ইসলাম, আবদুল জব্বার খদ্দর, রাজা ত্রিদিব রায়, অধ্যাপক শামসুল হক, ওবায়দুল্লাহ মজুমদার ও অং শু প্রু চৌধুরী। এক সপ্তাহ পরে দালালদের আরও বড় একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। এই আইনের মাধ্যমে কতজনকে গ্রেপ্তার ও সাজা দেওয়া হয়েছিল তার সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। পুলিশ বাহিনী দুর্বল থাকায় এবং দেশের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ আওয়ামী লীগের হাতে থাকায় দালাল আইনের আবরণে অনেকেই নিজেদের স্বার্থ হাসিলের সুযোগ পেয়ে যান। আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ হাজার ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এবং প্রায় সমানসংখ্যক ব্যক্তি পলাতক ছিলেন বলে ধারণা করা হয়।
দালাল আইনের বিরুদ্ধে অনেকেই সোচ্চার ছিলেন। জাসদসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এ সম্পর্কিত রাষ্ট্রপতির ৮ নং আদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছিল। মওলানা ভাসানী ১৯৭৩ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে দালাল আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে আলটিমেটামও দিয়েছিলেন। ৩০ নভেম্বর (১৯৭৩) সরকার দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক ব্যক্তিদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে। এরফলে ৩৪ হাজার ৪০০ জন আটক ব্যক্তি জেল থেকে ছাড়া পান। এদের অনেকেই মুসলীম লীগ, পিডিপি, জামায়াতে ইসলামী ও নেজামে ইসলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। সাধারণ ক্ষমা ঘোষণায় অবশ্য উল্লেখ করা হয়েছিল যে, যাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই বা অভিযোগের বিচারাধীন নন, কেবল তারাই সাধারণ ক্ষমার সুবিধা পাবেন।