শিক্ষাঙ্গন
সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয়ে 'অর্থ-আলাপ' এর যাত্রা নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
৩০ জানুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৮:৫৮ পূর্বাহ্ন
বর্তমান সময়ে বিদেশি সংস্কৃতি আমাদের এমনভাবে গ্রাস করে ফেলেছে যে আমরা আমাদের দেশীয় সংস্কৃতিকে ভুলে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছি। বলতে পারেন দেশের কোন ক্ষেত্রে নেই বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাব? পোশাক, টেলিভিশন চ্যানেল, খাদ্য, ব্যাংক, মোবাইল ফোন, মোবাইল অপারেটর সব জায়গায় ভিনদেশি ভাবধারা আমাদের পেয়ে বসেছে। কৃষি, চিকিৎসা, শিল্প, ব্যাবসায় প্রতিটি ক্ষেত্রে এর প্রভাবের বিস্তৃতি বলাই বাহুল্য। ফলে আমাদের দেশীয় পণ্য প্রতিনিয়তই হচ্ছে নিগৃহীত, অবহেলিত।
এই করুণ পরিস্থিতির মোকাবেলায় একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে একদল মেধাবী, বুদ্ধিদীপ্ত তরুণ-তরুণী যুক্ত হয়েছে সদ্য গঠিত একটি ব্যাতিক্রমী সংগঠনের ছায়াতলে। যেখানে তারা একে অন্যের সাথে কুশল বিনিময়কালে বলছে 'বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করবো'। আবার কেউ কেউ সংক্ষেপে বলছে 'বাসক'। দেশের প্রতি এই ভালোবাসা যে শুধুই তাদের মুখে মুখে তা কিন্তু নয়। তারা বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চায় একটি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী ও স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে। একইসাথে প্রত্যেক নাগরিকের মধ্যে ফুটিয়ে তুলতে চায় প্রত্যেকের অন্তরে সুপ্ত অবস্থায় থাকা দেশপ্রেমের বীজকে। কোনো একক শক্তি এত বড় একটি অর্জনে কখনোই যথেষ্ট নয়। তাই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নাগরিক সমাজের ভূমিকা সমন্বিত করার একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়েছে এই সংগঠনের প্রত্যেকটি দেশপ্রেমিক সদস্য। 'সততা', 'স্বদেশ' ও 'একতা' এই তিনটি মূলনীতিকে আঁকড়ে ধরে তারা এগিয়ে যেতে চায় বহুদূর এবং সেই পথচলার সঙ্গী করতে চায় তাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে।
বলছি 'অর্থ আলাপ' নামে একটি সংগঠনের কথা। অর্থ-আলাপের ধারণাটি সর্বপ্রথম যার মাথায় আসে তিনি হচ্ছেন দ্রাবিড় সৈকত। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) চারুকলা বিভাগের শিক্ষক। এই ধারণাটিকে পাকাপোক্ত করে একটি সংগঠন করে তোলার প্রয়াসে যারা ব্যস্ত তাদের মধ্যে আছেন জাককানইবি স্কিল ডেভলপমেন্ট ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইবনুল হায়দার নাকিব, আরো আছেন খায়রুল ইসলাম, রাতুল, জবা, সুজালো, পারভেজ, শাহেদ, শুভ, হাসিব ও শোয়াইব; যারা সবাই একই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সেশনের শিক্ষার্থী। বাংলাদেশের যে কেউ চাইলে সদস্য ফরম পূরণ ও শপথ গ্রহণের মাধ্যমে এই সংগঠনের সদস্য হতে পারবে।
অর্থ-আলাপের বিষয়ে জানতে চাইলে দ্রাবিড় সৈকত জানান, "দেশের মানুষের মাঝে আজকাল প্রবলভাবে বিদেশ আসক্তি বেড়ে গিয়েছে। এর ফলে যারা মেধাবী তারা বিদেশে চলে যাচ্ছে, দেশের মানুষ হয়ে সফলতা নিয়ে আসছে বিদেশের জন্য। আর শ্রমজীবী যারা আছেন তারাও ঝুঁকছেন বিদেশের প্রতি, আর বিদেশে গিয়ে হচ্ছেন চরম নির্যাতিত। এভাবেই জেনে হোক বা না জেনে হোক বিভিন্ন উপায়ে প্রতিনিয়ত আমরা দেশীয় অর্থ-ভান্ডার বিদেশের উন্নয়নে ব্যয় করে যাচ্ছি। দেশের যারা ধনিক শ্রেণি তারা তাদের অর্থ পুঞ্জীভূত করছে বিদেশে, বিদেশে গিয়ে বাড়ি গাড়ি কিনছে। এসবই মূলত আমাদের জন্য হুমকি। দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির অন্তরায় এসবই। কারো মধ্যে দেশপ্রেম থাকলে সে কখনই এই ধরণের কাজ করতে পারবে না। এই নিমিত্তেই 'অর্থ-আলাপ' দেশের প্রত্যেক নাগরিককে বুদ্ধিমান ও দেশপ্রেমিক হিসেবে তৈরি করতে সংঘবদ্ধ। এভাবেই সম্ভব দেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন।"
'অর্থ-সংলাপ' কি!
বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করে গড়ে তােলাই মূলত অর্থ-আলাপের কাজ। আমি থেকে আমরা অর্থ্যাৎ সম্মিলিত শক্তিকে দেশের কাজে লাগানোর পরিকল্পনাই অর্থ আলাপ। সমষ্টির মঙ্গলেই প্রত্যেকের মঙ্গল। দেশের একজন নাগরিক হিসেবে এই মাটি, প্রকৃতি ও মানুষের প্রতি ব্যক্তির দায়িত্ব পালনের সংগঠনই 'অর্থ আলাপ'। এটি বুদ্ধি বিবেচনাকে কাজে প্রয়োগের আলাপ, অর্থহীন আলাপ ও অকারণ জ্ঞানকে বাতিল করার আলাপ।
অর্থ আলাপের উদ্দেশ্য-
আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ প্রধানত অর্থনৈতিক কারণে কতিপয় বাংলাদেশের নাগরিকসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের অবহেলার পাত্র হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এই অবহেলা, অবজ্ঞা এবং তাচ্ছিল্যের শিকার হওয়া বাংলাদেশী মানুষের গৌরবময় জীবন গঠনের জন্য সর্বশক্তি নিয়ােগ করার মাধ্যমে একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জাতি হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তােলা।
অর্থ-আলাপ কার জন্য?
যারা দেশকে ভালোবাসেন, দেশের ভালো-মন্দ, সুখ-দুঃখে যদি যাদের হৃদয় আন্দোলিত হয়। দেশকে নিয়ে যাদের রয়েছে সুন্দর কোনো পরিকল্পনা, যদি কেউ দেশের জন্য মন থেকে কিছু করতে চায়, তবে অর্থ আলাপই তার সংগঠন।
অর্থ-আলাপ গঠনের কারণ?
অর্থনৈতিক সক্ষমতা বিবেচনায় বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিক কোনো না কোনোভাবে নিগৃহীত হচ্ছে, অপমানিত এবং অসম্মানিত হচ্ছে দেশে এবং বিদেশে।আর্থিক অবস্থার বদল ঘটানোই এই অবস্থা পরিবর্তনের একমাত্র উপায় বলে মনে করে এই সংগঠনটি। আর আর্থিক অবস্থা পরিবর্তনের প্রথম শর্ত হচ্ছে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সকল আর্থিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে নাগরিকদের সচেতনতা।
দেশের নাগরিকগণ দেশাত্মবোধসম্পন্ন হলে নিজের দেশের অন্য মানুষের সাথে প্রতারণা, দূর্নীতি, হিংসা ও বিদ্বেষী মনোভাব এবং অপরের ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ তার দ্বারা করা সম্ভব নয়। কেননা সে দেশেরই মানুষ; আত্মীয়-স্বজন; বন্ধু-বান্ধব; দেশের সকল নাগরিক মিলেই দেশ, প্রত্যেকের ভালোমন্দের সাথে প্রত্যেকের ভালোমন্দ জড়িত। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের মানুষের সার্বিক মঙ্গলের জন্য কাজ করাই অর্থ আলাপের একমাত্র লক্ষ্য।
অর্থ-আলাপে কেন যুক্ত হবেন?
এর জবাবে অর্থ-আলাপ বলছে,"দেশ আমাদের, দায়িত্বও আমাদের। আমরা সবাই মিলে দেশের এবং নিজের ভবিষ্যতকে নিরাপদ, শান্তিময় ও সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে পারি। প্রত্যেকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাকে একত্রিত করে আমরা অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে পারি। সামষ্টিক মঙ্গলসাধনের মাধ্যমে নিজেদের মঙ্গল সাধন করে নিজেকে একজন দায়িত্ববান, সৎ, যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চায় অর্থ-আলাপের সদস্যগণ। অর্থ আলাপের কর্মপরিকর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রত্যেকের উচিৎ এর সাথে যুক্ত হয়ে দেশের উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা।"
অর্থ আলাপ তাদের সদস্যদের নিয়ে প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট একদিন (বুধবার) বৈঠকের আয়োজন করে। প্রতি সপ্তাহে একজন সদস্য কিছুক্ষণের জন্য তার পছন্দের বিষয় নিয়ে কথা বলেন। দেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনে বাঁধা, উক্ত বাঁধা জয় করতে করণীয়, দেশকে স্বাবলম্বী করতে অন্তরায় এবং অন্তরায় মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে কি কি কর্মপন্থা অবলম্বন করা জরুরি সেসব বিষয় নিয়েই এই সাপ্তাহিক আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশকে একটি সত্যিকারের সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে এই সংগঠন অনন্য ভূমিকা পালন করবে বলে জানান একাধিক সদস্য। তারা বলেন, "দেশের প্রতি ভালোবাসা মুখে বলার কোন বিষয় নয়৷ সাময়িক দু-একটি সুকর্মের উদাহরনও এর জন্য যথেষ্ট নয়। যদি সত্যিই কেউ দেশকে ভালোবাসে তাহলে সে শুধুমাত্র সাময়িক কোনো উন্নতিতে আটকে থাকবে না, সে চাইবে দেশের দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য। সে তার দেশকে এমন একটি দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাইবে যেখানে দেশের অভ্যন্তরীন অর্থনৈতিক স্বাধীনতা কেউ খর্ব করবে না, দেশের ভিতরে সুকৌশলে ঢুকে মানুষদের বোকা বানিয়ে বিদেশপ্রেমী বানিয়ে ফেলতে পারবে না৷ এরকমই একটি সংগঠন 'অর্থ-আলাপ'।" তারা চান, দেশের প্রত্যেকটি নাগরিক এই সংগঠনের শপথ গ্রহণের মাধ্যমে দেশের উন্নতিতে অবদান রেখে সত্যিকারের দেশপ্রেমের নজির স্থাপন করতে।
এই করুণ পরিস্থিতির মোকাবেলায় একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে একদল মেধাবী, বুদ্ধিদীপ্ত তরুণ-তরুণী যুক্ত হয়েছে সদ্য গঠিত একটি ব্যাতিক্রমী সংগঠনের ছায়াতলে। যেখানে তারা একে অন্যের সাথে কুশল বিনিময়কালে বলছে 'বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করবো'। আবার কেউ কেউ সংক্ষেপে বলছে 'বাসক'। দেশের প্রতি এই ভালোবাসা যে শুধুই তাদের মুখে মুখে তা কিন্তু নয়। তারা বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চায় একটি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী ও স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে। একইসাথে প্রত্যেক নাগরিকের মধ্যে ফুটিয়ে তুলতে চায় প্রত্যেকের অন্তরে সুপ্ত অবস্থায় থাকা দেশপ্রেমের বীজকে। কোনো একক শক্তি এত বড় একটি অর্জনে কখনোই যথেষ্ট নয়। তাই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নাগরিক সমাজের ভূমিকা সমন্বিত করার একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়েছে এই সংগঠনের প্রত্যেকটি দেশপ্রেমিক সদস্য। 'সততা', 'স্বদেশ' ও 'একতা' এই তিনটি মূলনীতিকে আঁকড়ে ধরে তারা এগিয়ে যেতে চায় বহুদূর এবং সেই পথচলার সঙ্গী করতে চায় তাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে।
বলছি 'অর্থ আলাপ' নামে একটি সংগঠনের কথা। অর্থ-আলাপের ধারণাটি সর্বপ্রথম যার মাথায় আসে তিনি হচ্ছেন দ্রাবিড় সৈকত। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) চারুকলা বিভাগের শিক্ষক। এই ধারণাটিকে পাকাপোক্ত করে একটি সংগঠন করে তোলার প্রয়াসে যারা ব্যস্ত তাদের মধ্যে আছেন জাককানইবি স্কিল ডেভলপমেন্ট ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইবনুল হায়দার নাকিব, আরো আছেন খায়রুল ইসলাম, রাতুল, জবা, সুজালো, পারভেজ, শাহেদ, শুভ, হাসিব ও শোয়াইব; যারা সবাই একই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সেশনের শিক্ষার্থী। বাংলাদেশের যে কেউ চাইলে সদস্য ফরম পূরণ ও শপথ গ্রহণের মাধ্যমে এই সংগঠনের সদস্য হতে পারবে।
অর্থ-আলাপের বিষয়ে জানতে চাইলে দ্রাবিড় সৈকত জানান, "দেশের মানুষের মাঝে আজকাল প্রবলভাবে বিদেশ আসক্তি বেড়ে গিয়েছে। এর ফলে যারা মেধাবী তারা বিদেশে চলে যাচ্ছে, দেশের মানুষ হয়ে সফলতা নিয়ে আসছে বিদেশের জন্য। আর শ্রমজীবী যারা আছেন তারাও ঝুঁকছেন বিদেশের প্রতি, আর বিদেশে গিয়ে হচ্ছেন চরম নির্যাতিত। এভাবেই জেনে হোক বা না জেনে হোক বিভিন্ন উপায়ে প্রতিনিয়ত আমরা দেশীয় অর্থ-ভান্ডার বিদেশের উন্নয়নে ব্যয় করে যাচ্ছি। দেশের যারা ধনিক শ্রেণি তারা তাদের অর্থ পুঞ্জীভূত করছে বিদেশে, বিদেশে গিয়ে বাড়ি গাড়ি কিনছে। এসবই মূলত আমাদের জন্য হুমকি। দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির অন্তরায় এসবই। কারো মধ্যে দেশপ্রেম থাকলে সে কখনই এই ধরণের কাজ করতে পারবে না। এই নিমিত্তেই 'অর্থ-আলাপ' দেশের প্রত্যেক নাগরিককে বুদ্ধিমান ও দেশপ্রেমিক হিসেবে তৈরি করতে সংঘবদ্ধ। এভাবেই সম্ভব দেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন।"
'অর্থ-সংলাপ' কি!
বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করে গড়ে তােলাই মূলত অর্থ-আলাপের কাজ। আমি থেকে আমরা অর্থ্যাৎ সম্মিলিত শক্তিকে দেশের কাজে লাগানোর পরিকল্পনাই অর্থ আলাপ। সমষ্টির মঙ্গলেই প্রত্যেকের মঙ্গল। দেশের একজন নাগরিক হিসেবে এই মাটি, প্রকৃতি ও মানুষের প্রতি ব্যক্তির দায়িত্ব পালনের সংগঠনই 'অর্থ আলাপ'। এটি বুদ্ধি বিবেচনাকে কাজে প্রয়োগের আলাপ, অর্থহীন আলাপ ও অকারণ জ্ঞানকে বাতিল করার আলাপ।
অর্থ আলাপের উদ্দেশ্য-
আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ প্রধানত অর্থনৈতিক কারণে কতিপয় বাংলাদেশের নাগরিকসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের অবহেলার পাত্র হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এই অবহেলা, অবজ্ঞা এবং তাচ্ছিল্যের শিকার হওয়া বাংলাদেশী মানুষের গৌরবময় জীবন গঠনের জন্য সর্বশক্তি নিয়ােগ করার মাধ্যমে একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জাতি হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তােলা।
অর্থ-আলাপ কার জন্য?
যারা দেশকে ভালোবাসেন, দেশের ভালো-মন্দ, সুখ-দুঃখে যদি যাদের হৃদয় আন্দোলিত হয়। দেশকে নিয়ে যাদের রয়েছে সুন্দর কোনো পরিকল্পনা, যদি কেউ দেশের জন্য মন থেকে কিছু করতে চায়, তবে অর্থ আলাপই তার সংগঠন।
অর্থ-আলাপ গঠনের কারণ?
অর্থনৈতিক সক্ষমতা বিবেচনায় বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিক কোনো না কোনোভাবে নিগৃহীত হচ্ছে, অপমানিত এবং অসম্মানিত হচ্ছে দেশে এবং বিদেশে।আর্থিক অবস্থার বদল ঘটানোই এই অবস্থা পরিবর্তনের একমাত্র উপায় বলে মনে করে এই সংগঠনটি। আর আর্থিক অবস্থা পরিবর্তনের প্রথম শর্ত হচ্ছে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সকল আর্থিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে নাগরিকদের সচেতনতা।
দেশের নাগরিকগণ দেশাত্মবোধসম্পন্ন হলে নিজের দেশের অন্য মানুষের সাথে প্রতারণা, দূর্নীতি, হিংসা ও বিদ্বেষী মনোভাব এবং অপরের ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ তার দ্বারা করা সম্ভব নয়। কেননা সে দেশেরই মানুষ; আত্মীয়-স্বজন; বন্ধু-বান্ধব; দেশের সকল নাগরিক মিলেই দেশ, প্রত্যেকের ভালোমন্দের সাথে প্রত্যেকের ভালোমন্দ জড়িত। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের মানুষের সার্বিক মঙ্গলের জন্য কাজ করাই অর্থ আলাপের একমাত্র লক্ষ্য।
অর্থ-আলাপে কেন যুক্ত হবেন?
এর জবাবে অর্থ-আলাপ বলছে,"দেশ আমাদের, দায়িত্বও আমাদের। আমরা সবাই মিলে দেশের এবং নিজের ভবিষ্যতকে নিরাপদ, শান্তিময় ও সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে পারি। প্রত্যেকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাকে একত্রিত করে আমরা অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে পারি। সামষ্টিক মঙ্গলসাধনের মাধ্যমে নিজেদের মঙ্গল সাধন করে নিজেকে একজন দায়িত্ববান, সৎ, যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চায় অর্থ-আলাপের সদস্যগণ। অর্থ আলাপের কর্মপরিকর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রত্যেকের উচিৎ এর সাথে যুক্ত হয়ে দেশের উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা।"
অর্থ আলাপ তাদের সদস্যদের নিয়ে প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট একদিন (বুধবার) বৈঠকের আয়োজন করে। প্রতি সপ্তাহে একজন সদস্য কিছুক্ষণের জন্য তার পছন্দের বিষয় নিয়ে কথা বলেন। দেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনে বাঁধা, উক্ত বাঁধা জয় করতে করণীয়, দেশকে স্বাবলম্বী করতে অন্তরায় এবং অন্তরায় মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে কি কি কর্মপন্থা অবলম্বন করা জরুরি সেসব বিষয় নিয়েই এই সাপ্তাহিক আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশকে একটি সত্যিকারের সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে এই সংগঠন অনন্য ভূমিকা পালন করবে বলে জানান একাধিক সদস্য। তারা বলেন, "দেশের প্রতি ভালোবাসা মুখে বলার কোন বিষয় নয়৷ সাময়িক দু-একটি সুকর্মের উদাহরনও এর জন্য যথেষ্ট নয়। যদি সত্যিই কেউ দেশকে ভালোবাসে তাহলে সে শুধুমাত্র সাময়িক কোনো উন্নতিতে আটকে থাকবে না, সে চাইবে দেশের দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য। সে তার দেশকে এমন একটি দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাইবে যেখানে দেশের অভ্যন্তরীন অর্থনৈতিক স্বাধীনতা কেউ খর্ব করবে না, দেশের ভিতরে সুকৌশলে ঢুকে মানুষদের বোকা বানিয়ে বিদেশপ্রেমী বানিয়ে ফেলতে পারবে না৷ এরকমই একটি সংগঠন 'অর্থ-আলাপ'।" তারা চান, দেশের প্রত্যেকটি নাগরিক এই সংগঠনের শপথ গ্রহণের মাধ্যমে দেশের উন্নতিতে অবদান রেখে সত্যিকারের দেশপ্রেমের নজির স্থাপন করতে।