বাংলারজমিন

ব্রহ্মপুত্রে নাব্যতা হ্রাস, ঝুঁকিপূর্ণ অভ্যন্তরীণ নৌ-রুট

মো. সাওরাত হোসেন সোহেল, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) থেকে

৩০ জানুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৯:০৯ পূর্বাহ্ন

দিন যায় মাস পেরিয়ে বছর। বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও ব্রহ্মপুত্রের ড্রেজিং আর পরিকল্পনা সাথে সঠিক পদক্ষেপ না নেয়ার প্রতি বছর শীত ও শুকনা মৌসুমে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে নৌ-রুট। এছাড়াও গতিপথ পরিবর্তন সাথে জয়বায়ুর প্রভাবের ফলে নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ায় বন্যায় সময় অতি সহজে তলিয়ে যায় নদীর তীরবর্তী শ’ শ’ গ্রাম আর শুকনা মৌসুমে শ’ শ’ চর উঠে জেগে। সঠিক পরিকল্পনার অভাবে বন্যা, শুকনা ও শীত মৌসুমেও দুঃখ কষ্ট নিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে লাখ লাখ মানুষকে। শীত মৌসুমের শুরুতেই নদ-নদীতে পানি কমে যাওয়ায় নদীর নাব্যতা ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারীসহ রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার নদী এলাকা। বিভিন্ন চ্যানেলের নাব্যতা হ্রাসের ফলে অসংখ্য ডুবোচরে অভ্যন্তরীণ নৌ-রুট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পানির স্বাভাবিক প্রবাহ না থাকায় যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী বেশি ওজনের নৌ-যান ঝুঁকি নিয়ে বিকল্প পথ ব্যবহার করছে এরপরও বিড়ম্বনা পিছু ছাড়ে না আটকে যাচ্ছে নৌকা। বিশেষ করে নৈশ্যকালীন নৌযানগুলোকে পড়তে হচ্ছে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। এর ফলে জ্বালানি খরচ বৃদ্ধির পাশা-পাশি অতিরিক্ত সময়ও ব্যয় হচ্ছে। এমনকি সারা রাত নদীতে কাটতে হচ্ছে। চিলমারী নদী বন্দর রমনা ঘাট, জোড়গাছ ঘাট থেকে রৌমারী, রাজিবপুর, বাহাদুরাবাদ ঘাট, উপজেলার নয়ারহাট, অষ্টমীরচর, চিলমারীর চর ও গাইবান্দা যাওয়ার পথে শতাধিক স্থানে ডুবোচর জেগে উঠায় নৌযানগুলো প্রায়ই চলাচল পথে আটকে যাচ্ছে।
 অতচ প্রতিদিন এই রুটগুলো দিয়ে প্রায় ২০টি অধিক নৌকা চলাচল করছে শ’ শ’ মানুষসহ প্রয়েজনীয় মালামাল নিয়ে। ইঞ্জিন চালিত নৌকার চালকরা জানান, চলতি শীত মৌসুমে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি প্রবাহ অত্যন্ত হ্রাস পাওয়ায় নৌ চলাচল মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। শীত ও ঘনকুয়াশা বাড়ায় এবং পানি কমে যাওয়ায় নৌযান চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকার নৌ-যাত্রীরা জানান দিনের বেলাও নদী পাড়ি দিতে বড় কষ্ট আর রাতে তো আটকে গেলেই শেষ সারা পড়ে থাকতে হয় নদীতে। নৌকার মাঝিরা জানায়, বর্তমানে উপজেলার বড়চর, শাখাহাতি, ভাটিয়ারচর, কড়াইবরিশাল, ব্যাংক মারার চর, গয়নার পটল, এছাড়াও রাজিবপুর, রৌমারী, কর্তিমারী ও নালিতাখাতা এলাকায় নৌকা ডুবোচরে নিয়মিত আটকা পড়ছে। ফলে নৌকা চালক ও যাত্রীদেরকে বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। এ ছাড়াও নদীতে নাব্যতা না থাকার কারণে চিলমারী ভাসমান তেল ডিপোর বার্জসহ ভারতীয় পণ্যবাহী জাহাজগুলো ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে স্বাচ্ছন্দে চলাচল করতে পারছে না। স্যালো ইঞ্জিন চালিত নৌকা মালিকরা জানায়, বিভিন্ন রুটে কোনও প্রকার ড্রেজিং এর ব্যবস্থা না থাকায় অসংখ্য ডুবোচর নদের গতিপথ পরিবর্তন এবং নৌরুট গুলোতে চর জেগে উঠায় নৌপথ ক্ষীণ হয়ে এসেছে। ফলে নৌযানগুলোকে অতিরিক্ত পথ ঘুরে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে এরপরও আটকে যাচ্ছে। বড় বড় ডুবোচর নাব্যতা হ্রাসের স্থানগুলোকে চিহ্নিত করে জরুরি ভিত্তিতে ড্রেজিং করা না হলে চিলমারীর অভ্যন্তরীণ নৌ-রুটগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। এতে বিপাকে পড়বে এই সকল রুট চলাচলকারী ইঞ্জিনচালিত নৌকা মালিক, শ্রমিক ও যাত্রীরা সরকার হারাবে রাজস্ব।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status