অনলাইন

রাজউকের দুর্নীতি নিয়ে টিআইবির বক্তব্য ভিত্তিহীন: গণপূর্তমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

২৯ জানুয়ারি ২০২০, বুধবার, ৩:৪৪ পূর্বাহ্ন

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) দুর্নীতি নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) যে বক্তব্য দিয়েছে, সেটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের দেয়া বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রাজউককে ‘জনবান্ধব’ প্রতিষ্ঠান হিসেবে আখ্যা দিয়ে মনগড়া বক্তব্য উপস্থাপন থেকে টিআইবিকে অনুরোধ জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, রাজউকের দুর্নীতি নিয়ে টিআইবি যে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন, তা সত্য নয়, এর কোনো ভিত্তি নেই। এটা সম্পূর্ণরূপে উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং জনবান্ধব একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে হয়তো কারও দেয়া ভুল তথ্যের ভিত্তিতে হেয় প্রতিপন্ন করে আলাদা একটা বাহবা নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, টিআইবির এই অভিযোগের কী ভিত্তি, সেই ভিত্তি কোথাও সুস্পষ্টভাবে তারা বলেননি। যেমন, একটা অভিযোগে তারা বলেছেন, বিশেষ প্রকল্পের ডেভেলপারকে দুই থেকে তিন কোটি টাকা ঘুষ দিতে হয়। আমি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরে এ জাতীয় কোনো প্রকল্প অনুমোদনই হয়নি। আমি এক বছরের অধিক সময় মন্ত্রী হয়েছি। তো এই বিশেষ প্রকল্পে এক থেকে দুই কোটি টাকা ঘুষি দিতে হয়, এই তথ্য তারা কোথায় পেলেন? এ জাতীয় কোনো প্রকল্পই তো নেয়া হয়নি।

তিনি বলেন, আরেকটি জায়গায় তারা বলেছেন নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব। আমি মন্ত্রী হওয়ার পর আজ পর্যন্ত কোনো নিয়োগই হয়নি। নিয়োগ না হলে রাজনৈতিক প্রভাব হয় কীভাবে? একটা নিয়োগও রাজউকে এখন পর্যন্ত হয়নি। নিয়োগের জন্য আবেদন চাওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত অ্যাডমিট কার্ডও আমরা ইস্যু করিনি। কীসের ভিত্তিতে তারা বললেন, রাজনৈতিক প্রভাবে নিয়োগ দেয়া হয়?

ফ্ল্যাটের চাবি প্রদানের ক্ষেত্রে টাকা নেয়া হয়- টিআইবির এমন অভিযোগ অস্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, ফ্ল্যাট বরাদ্দ আমরা অনলাইন পদ্ধতিতে সকল সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে লটারি করে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখানে চাবি প্রদানের সময় টাকা নেয়ার সুযোগ কই?

আজ বুধবার দুপুরে ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে, রাজউক ও দুর্নীতিকে সমার্থক হিসেবে আখ্যায়িত করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক): সুশাসনের চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।  গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যক্তি পর্যায়ে নকশা অনুমোদনে ৫০ হাজার থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা, রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে ২ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা টাকা পর্যন্ত রাজউক কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে হয়। আবার ১০ তলার বেশি ইমারতের নকশা অনুমোদনে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে ফি’র অতিরিক্ত ১৫ লাখ থেকে ৪০ লাখ টাকা এবং বিশেষ প্রকল্পের ক্ষেত্রে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে ১৫ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়। প্রতিবেদনে টিআইবি আরও জানায়, ব্যক্তি পর্যায়ে রাস্তা প্রশস্ত দেখাতে ২০-৩০ হাজার টাকা, ছাড়পত্র অনুমোদনে ১৫ থেকে ৮০ হাজার টাকা ও রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে ১ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত রাজউক কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে হয়। এছাড়া নকশা অনুমোদনে সময়ক্ষেপণ, সেবায় প্রতারণা ও হয়রানি, পরিদর্শনে অনিয়ম ও দুর্নীতি, নকশা বাস্তবায়নে আইন ও বিধির লঙ্ঘন, প্লট বরাদ্দ, প্লট হস্তান্তর, ফ্ল্যাটের চাবি হস্তান্তরসহ একাধিক সেবায় ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status