শেষের পাতা

এবারের হারটা আরো বাজে

স্পোর্টস রিপোর্টার

২৬ জানুয়ারি ২০২০, রবিবার, ৯:৩৪ পূর্বাহ্ন

প্রেক্ষাপট মোটামুটি আগের দিনের মতোই। কেবল খানিকটা এদিক-সেদিক হলো গল্প। তামিম ইকবাল ফিফটি পেলেন তবে গোটা বাংলাদেশকে দেখালো আরো বিবর্ণ, আরো কাহিল, আরো এলোমেলো। আগের দিন ব্যাটিং মলিন থাকলেও বোলাররা দেখিয়েছিলেন লড়াইয়ের ঝাঁজ। এদিন তারাও ব্যর্থ হলেন। আগের ম্যাচে শূন্য রানা বাবর আজম বেরিয়ে এলেন খোলস ছেড়ে বেরিয়ে তুলে নিলেন হাফসেঞ্চুরি। হাফসেঞ্চুরি দেখা পেলেন অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজ। এই দুই হাফসেঞ্চুরিতে একপেশে ম্যাচে মাহমুদুল্লাহ্‌র দল হেরেছে লড়াইবিহীনভাবে। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে ৯ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ একম্যাচ হাতে রেখেই নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান।

উইকেট ছিল আগের দিনের মতোই মন্থর। তাতে টস জিতে কি বুঝে ব্যাটিং নিয়ে বাংলাদেশ করলো মাত্র ১৩৬। টি- টোয়েন্টিতে ১৩৭ রান কী এমন লক্ষ্য! তারপরেও মাত্র ৬ রানের মধ্যে পাকিস্তানি ওপেনার আহসান আলীকে আউট করে বাংলাদেশ দলকে অবশ্য ছোট্ট আনন্দের উপলক্ষ্য এনে দিয়েছিলেন শফিউল ইসলাম। ওই প্রথম, ওই শেষ! পাকিস্তানের আর কোনো উইকেটই ফেলতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। উইকেট তো নিতেই পারেননি, পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে কোনো চাপও তেরি করতে পারেননি। মোহাম্মদ হাফিজ-বাবর আজমের অবিচ্ছিন্ন দ্বিতীয় উইকেট জুটি ১৩১ রান যোগ করে পাকিস্তানকে এনে দিয়েছেন বিশাল জয়। ওই রান ২০ বল আগেই পেরিয়ে দাপটের সঙ্গে ম্যাচ জিতে নিয়েছেন পাকিস্তান। দলকে জিতিয়ে অধিনায়ক বাবর অপরাজিত থাকেন ৪৪ বলে ৬৬ রান করে, হাফিজ ৪৯ বলে খেলেন হার না মানা ৬৭ রানের ইনিংস।

সিরিজের প্রথম ম্যাচে বোলারদের সৌজন্যে তাও কিছুটা লড়াই দেখা গিয়েছিল। গতকাল সেটিও করতে পারেনি বাংলাদেশ। করবে কী করে? সেই একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি-টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ। ভেন্যু একই, উইকেটের আচরণ প্রায় এক। আগের দিনের মতো গতকালও বাংলাদেশের শুরু ধীরলয়ে। পাওয়ার প্লে কাজে লাগানো যায়নি, ইনিংসের মাঝের ওভারগুলোয় ব্যাটসম্যানদের সংগ্রাম। পার্থক্য হচ্ছে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ টেনেটুনে করতে পেরেছিল ৫ উইকেটে ১৪১। গতকাল সেটিও হয়নি-৬ উইকেটে ১৩৬, টি- টোয়েন্টিতে যেটি লাহোরে আগে ব্যাটিং করা দলের সর্বনিম্ন ইনিংস।

প্রথম ম্যাচে হারের পর ভুল থেকে শিক্ষা নেয়ার কথা বলেছিলেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। গতকাল দ্বিতীয় ম্যাচে সেই শিক্ষা কতটা নিতে পেরেছে বাংলাদেশ, প্রশ্ন থেকেই গেল। কাল তবু বাংলাদেশ ‘ওয়ানডে’ মেজাজে টি-টোয়েন্টি খেলেছিল! আজ সেটিও হলো না। প্রথম ম্যাচে পাওয়ার প্লের ৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ছিল কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩৫। গতকাল হলো আরও বাজে। ২ উইকেট হারিয়ে ৩৩। প্রথম ৩৬ বলে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ডট খেলেছেন ২০টি। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ হারিয়েছে মোহাম্মদ নাঈম ও মেহেদী হাসানকে। শাহিন শাহ আফ্রিদির দারুণ এক বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন নাঈম (০)। বিপিএল-এ তিন নম্বর ব্যাটিং পজিশনে বেশ ভালো খেলা মেহেদীকে নামিয়ে চমকে দিতে চেয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। মেহেদী যেভাবে (১২ বলে ৯) আউট হয়েছেন, তাতে উল্টো সমর্থকদেরই চমকে যাওয়ার কথা! হাসনাইনের বাউন্সারকে ঠিক কোথায় পাঠাতে চেয়েছিলেন, সেটি তিনিই ভালো জানেন! ১৬ রানে সুযোগ পাওয়া তামিম ধরে রাখেন এক প্রান্ত।

এক প্রান্তে ধরে রেখে খুব যে দলের রানরেট বেড়েছে, সেটিও নয়। ইনিংসজুড়ে রানরেট সাতের নিচেই থাকলো। শুরুতে দ্রুত ৩ উইকেট পড়ায় তামিম লম্বা সময় খোলসবন্দি ছিলেন। অবশ্য ইদানীং তার ব্যাটিংয়ের ধরন দেখে প্রশ্ন হতে পারে, বাঁহাতি ওপেনার হাতখুলে মারলেনই-বা কোন ম্যাচে! তবু তামিমের ৫৩ বলে ৬৫ রানই বাংলাদেশকে ৬ উইকেটে ১৩৬ রানের স্কোর এনে দিয়েছে। বাকিরা যে হতাশ করেছেন আরও বেশি। চারে নামা লিটন এ ম্যাচেও হতাশ করেছেন। ১৪ বলে ৮ রান করে আউট হয়েছেন শাদাব খানের এলবির ফাঁদে পড়ে। আফিফ ২০ বলে ২১ রানের বেশি করতে পারেননি। গত ম্যাচে ভালো ফিনিশ না করার আফসোসে পুড়ছিলেন মাহমুদুল্লাহ। বাংলাদেশ অধিনায়ক অফিনিশ করার আগে নিজেই আউট হয়েছেন। হারিস রউফের বলে বোল্ড হওয়ার আগে করতে পারলেন ১২ বলে ১২ রান। কাল বাংলাদেশ ভালো স্কোর পায়নি। গতকাল তো হলো আরো খারাপ। ম্যাচ হারতে হলো বাজেভাবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status